প্রকৃতির সবুজ আচ্ছাদনে ঘেরা সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অভিষেক টেস্ট ম্যাচ ঘিরে এমন আয়োজন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড বিসিবির।
স্টেডিয়ামের গ্রান্ড স্ট্যান্ডের অভ্যন্তরে আর্কাইভ করে সংরক্ষণ করা হয়েছে স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে থেকে খেলোয়াড় ও টিম বাংলাদেশ ক্রিকেটের বিজয়ানন্দের দুর্লভ ক্ষণগুলো।
পেন্সিলের আঁকা স্কেচের পাশাপাশি জাতীয় দলের হয়ে খেলা সিলেটি সাবেক ও বর্তমান ক্রিকেটারদের ছবিও স্থান পেয়েছে আর্কাইভে।
স্কেচ আর্টিস্ট সৌম্য গণেশ মাহা দীর্ঘ চার মাস অক্লান্ত পরিশ্রম করে ক্রিকেট ইতিহাসের দুর্লভ মুহূর্তগুলো স্কেচের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন। তাকে সহায়তা করেছেন ক্রিকেট ছকারের ক্রিকেট এডিটর ফয়ছল সিজার।
শুক্রবার (২ নভেম্বর) সিলেটের বিভাগীয় কমিশনার ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী আর্কাইভের শুভ উদ্বোধন করেন। উদ্বোধনের পর আর্কাইভ ঘুরে দেখেন অতিথিরা।
এসবের পাশাপাশি সিলেটের মাঠে অভিষেক টেস্ট স্মরণীয় করে রাখতে স্যুভেনির করা হয়েছে। যেখানে ঠাঁই পেয়েছে ক্রিকেট অঙ্গনের তারকাদের লেখা।
শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মধ্যাকার টেস্ট ম্যাচ শুরু হবে বিশেষ ঘণ্টা বাজিয়ে। যেরকমটি লর্ডসে দেখেছেন। জানিয়েছেন খোদ বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক (ভারপ্রাপ্ত) মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। ঢাকা থেকে আনা ঘণ্টাটি স্থাপন করা হয়েছে স্টেডিয়ামের অভ্যন্তরে দক্ষিণ প্রান্তে।
ম্যাচ শুরুর ঘণ্টা বাজাবেন বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান। সিলেটের প্রথম টেস্ট স্মরণীয় করে রাখতে দুই দলকে মাঠে প্রবেশের সময়দেওয়া হবে লাল গালিচা সংবর্ধনা। এই অসাধরণ সংবর্ধনার মধ্যে দিয়ে ইতিহাসের খাতায় নাম লেখাবে সিলেট।
এছাড়া এই টেস্টে বিশেষ কয়েন দিয়ে টস হবে। যে কয়েনে থাকবে দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ডের লোগো। টসের বিশেষ কয়েনটিও সংরক্ষণ করবে বিসিবি। অভিষেক টেস্ট ম্যাচ উপলক্ষে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে দলের জন্য থাকছে বিশেষ স্মারক। ওইদিনের ম্যাচের টিকিটও একটি স্মারক হিসেবে দর্শকরা সংরক্ষণ করতে পারবেন বলেও জানিয়েছেন বিসিবির পরিচালক শফিউল আলম নাদেল।
তিনি বলেন, জাতীয় দলের হয়ে সিলেটের খেলোয়াড় যারা খেলেছেন, আর্কাইভে তাদের নাম সম্বলিত ছবি স্থান পেয়েছে। তাছাড়া বাংলাদেশের শুরু থেকে ঐতিহাসিক কিছু স্মরণীয় মুহূর্ত, বিজয়োল্লাস ও জাতীয় দলের লিজেন্টদের ছবি স্থাপন করেছি।
শফিউল আলম নাদেল আরো বলেন, স্কেচে আঁকা ছবিগুলো আসলেই দুর্লভ। যেগুলো আমরা এখানে তুলে আনতে পেরেছি। স্কেচ আর্টিস্ট দীর্ঘ চার মাস দিনরাত পরিশ্রম করে স্কেচগুলো আমাদের উপহার দিয়েছেন। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম পরবর্তী আন্তর্জাতিক ম্যাচগুলোর দুর্লভ মুহূর্ত ও খেলোয়াড়দের ছবি এভাবে আর্কাইভে নিয়ে আসতে পারবে।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের গ্রান্ড স্ট্যান্ডে প্রবেশের পরই চোখে পড়বে দেয়ালের একপাশে খেলোয়াড়দের আর্কাইভ। অন্যপাশে দেশ স্বাধীনের পরবর্তী বিভিন্ন সময়ে বাংলাদেশ দল ও খেলোয়াড়দের বিজয়োল্লাসের স্মৃতি।
সিলেটের মাঠে টেস্ট ম্যাচের অভিষেকের দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে ব্যতিক্রমী আয়োজনের প্রশংসা করেন গণমাধ্যমকর্মীরাও।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দল টেস্ট মর্যাদা লাভের পর দেশের মাটিতে ৬৩ টেস্ট ম্যাচ হয়েছে। দেশের মাটিতে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছে মিরপুরের শের-ই বাংলা ও চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ১৭টি করে।
চট্টগ্রাম এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে ৮টি, খুলনায় ৩টি, ফতুল্লায় ২টি ও বগুড়ায় একটি টেস্ট ম্যাচ খেলা হয়েছে।
লাল-সবুজের জার্সিধারীরা দেশের মাটিতে মাত্র ৬টি টেস্টে জিতেছে। দেশের মাটিতে প্রথম টেস্ট ম্যাচ জিতেছে এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে। আর মিরপুরে সর্বোচ্চ ৩টি। সিলেট নিয়ে এবার বাংলাদেশের টেস্ট ভেন্যু হলো ৮টি। ক্রিকেটে এলিট শ্রেণীর ভেন্যু হিসেবে রাত পোহালেই যাত্রা শুরু গ্রিন গ্যালারি সমৃদ্ধ সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামের।
বাংলাদেশ সময়: ০৫২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৮
এনইউ/এএ