বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত মেয়ে রুপন্তী আকিদের জন্ম ও বেড়ে ওঠা অস্ট্রেলিয়ায়। বাংলাদেশের বেশকিছু নাটকে অভিনয় করে প্রশংসা পেয়েছেন তিনি।
বাংলানিউজ : অস্ট্রেলিয়ায় এই প্রজন্মের আরও অনেক প্রবাসী বাংলাদেশি আছেন। কিন্তু আপনার মতো বাংলাদেশের মূলধারার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে কেউই কাজ করছেন না। আপনি অভিনয়ের অনুপ্রেরণা কীভাবে পেলেন?
রুপন্তী : আমার বাবা-মা দু’জনই সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষ। বাবা অনেক আগে থেকেই দেশের মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত। মা একসময় গ্রাম থিয়েটার করতেন। মূলত তাদের উৎসাহ ও অনুপ্রেরণাই আমাকে অভিনয়ে আসতে সহয়তা করেছে। এ ছাড়া বাংলাদেশের অনেক অভিনেতা, পরিচালক আমাকে নানাভাবে উৎসাহ দিয়ে আসছেন সবসময়।
বাংলানিউজ : এখন পর্যন্ত আপনি বাংলাদেশে কী কী কাজ করেছেন?
রুপন্তী : জিনাত হাকিমের ধারাবাহিক ‘প্রবাসে পরবাসে’, সকাল আহমেদের ‘তাহার নাম শকুন্তলা’ ও “বৃক্ষ ও জলের কাব্য’, মাহফুজ আহমেদের ‘কেবলই রাত হয়ে যায়’ ও ‘হ্যালো বাংলাদেশ’ এবং সাগর জাহানের ‘আংটি’ নাটকগুলোতে অভিনয় করেছি।
বাংলানিউজ : ‘হ্যালো বাংলাদেশ’ টেলিছবিটি দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছে। অনেকেই আপনার অভিনয়ের প্রশংসা করছেন। এই বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া কী?
রুপন্তী : এতে অভিনয় করতে গিয়ে পরিচালক মাহফুজ আহমেদের অনেক সহযোগিতা পেয়েছি। এ ছাড়া টেলিছবিটির অন্যান্য অভিনেতা-অভিনেত্রী বিশেষ করে রিচি সোলায়মান বিভিন্ন সময়ে নানাভাবে পরামর্শ দিয়েছেন। এতে অভিনয় করতে গিয়ে অনেক কিছু শিখেছি। সর্বোপরি দর্শকরা আমাকে সবসময় ভালোভাবে গ্রহণ করছেন, তাদের প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন, সেজন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞটা জানাই।
বাংলানিউজ : বাংলাদেশ থেকে অনেকেই নিশ্চয়ই অভিনয়ের প্রস্তাব দিচ্ছেন?
রুপন্তী : মুহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাজ তার পরবর্তী কাজের জন্য আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। প্রাণ গ্রুপের একটি বিজ্ঞাপনচিত্রের জন্য পরিচালক সাগর জাহানও বলে রেখেছেন। মেহের আফরোজ শাওনও কাজ করাবেন বলেছেন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশোনা নিয়ে অনেক ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। তাই ইচ্ছা থাকলেও দেশে যাওয়া সবসময় সম্ভব হয় না। সামনের ছুটিতে দেশে গেলে তাদের সঙ্গে হয়তো কাজ করতে পারবো।
বাংলানিউজ : অভিনয় নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?
রুপন্তী : অভিনয়কে পেশা হিসেবে নিতে আমি কখনও আগ্রহী নই। ব্যবসায় প্রশাসনে পড়াশোনা করছি। ইচ্ছে আছে, এক্ষেত্রে ক্যারিয়ার প্রতিষ্ঠিত করার। তবে মানসম্পন্ন গল্প পেলে মাঝে মধ্যে অভিনয় করবো।
বাংলানিউজ : আপনার ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ারে অভিনয় কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে বলে মনে করেন?
রুপন্তী : এ ধরনের প্রশ্ন অনেকেই করছেন। কিন্তু আমি মনে করি, পড়াশোনার পাশাপাশি এই জাতীয় কোনো ভালো কাজের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত করলে ভবিষ্যৎ ক্যারিয়ার আরও সমৃদ্ধ হবে। আসলে পড়াশোনার সঙ্গে অন্যান্য কাজগুলোর সমন্বয় সাধন খুবই জরুরি।
বাংলানিউজ : এ প্রজন্মের প্রবাসী ছেলেমেয়েরা সবাই কেবল অস্ট্রেলিয়ার সংস্কৃতি লালন করছে। আপনি এক্ষেত্রে আলাদা। ভিন্নধর্মী দুটি সংস্কৃতির সমন্বয় কীভাবে করছেন?
রুপন্তী : বাবা-মা দু’জনই যেহেতু মনে-প্রাণে দেশের সংস্কৃতি লালন করেন। জন্ম থেকেই বাংলাদেশের সংস্কৃতি আমার পরিচিত। বাংলা ভাষায় কথা বলছি, দেশের বই পড়ছি, গান শুনছি- প্রবাসে বসবাস করলেও দেশের কিছুই আমার অপরিচিত নয়। পাশাপাশি অস্ট্রেলিয়ান সংস্কৃতির মধ্যে বেড়ে ওঠার কারণে এটিও আমার কাছে কখনও আলাদা কিছু মনে হয়নি। ফলে খুব সহজেই এই দুই সংস্কৃতির মধ্যে সমন্বয় ঘটাতে পেরেছি।
বাংলাদেশ সময় : ১৮০৬ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৩, ২০১৪