পৃথিবীর সর্বাধিক জনপ্রিয় টিভি অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ‘মি. বিন’। দুনিয়ার কোটি কোটি মানুষকে হাসাতে পারে মি. বিন।
বেঢপ জ্যাকেট, মোটা ভুরু আর উস্কোখুস্কো চুল মিলিয়ে মি. বিনকে এমনভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে যেন সে সামাজিক রীতিনীতির বাইরের কেউ। তার ট্রাউজার মাপে একটু ছোট, জ্যাকেট ফ্যাশনদুরস্ত নয় আর টাইও বেমানান। একটু অস্বাভাবিক ধরণের মানুষটা চারপাশের লোকদের সঙ্গে পুরোপুরি অদ্ভূত সব কাজ করে। এসব কাজ-কারবার সবাইকেই হাসায়। সার্বজনীনতার সুবাদেই মি. বিন সব বয়সী দর্শকের কাছে এবং বিশ্বের অনেক দেশে জনপ্রিয় হয়েছে। এর হাস্যরস বোঝার জন্য কোনো শিক্ষা কিংবা কোনো ভাষা বোঝার দরকার হয় না। মি. বিনের চরিত্রে অভিনয় করেন ব্রিটিশ অভিনেতা রোয়ান অ্যাটকিনসন। তাকে চেনে না এমন কে আছে!
মি. বিন চরিত্রটি কীভাবে সৃষ্টি হয়েছিল? এর নির্বাহী প্রযোজক ছিলেন পিটার বেনেট-জোন্স। ছাত্র থাকাকালেই মি. বিনের মতো একটি চরিত্রের ধারণা রোয়ান অ্যাটকিনসনের মাথায় গড়ে উঠছিলো। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে কমেডি গ্রুপের সঙ্গে অনুষ্ঠান করতেন তিনি। তার নাম ছিল ‘দি অক্সফোর্ড রিভিউ’। আর পিটার বেনেট-জোন্স ছিলেন ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের প্রতিপক্ষ কমেডি গ্রুপ দি ফুটলাইটসের সদস্য। ১৯৭৬ সালে এডিনবরা ফেস্টিভ্যালে তাদের পরিচয় হয়। স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর থিয়েটার আর টিভির জন্য দুই বন্ধু একসঙ্গে কাজ শুরু করেন।
মি. বিনের যাত্রা শুরু হয়েছিলো মঞ্চের একটি অনুষ্ঠান হিসেবে। ভাবনাগুলো তৈরি হয়েছিলো মহড়াকক্ষে। এগুলো ভেবে বের করার সময়ও তারা খুব হাসতেন। মি. বিনের নাম প্রথমে ছিলো মি. হোয়াইট। পরে তার নাম রাখা হয় মি. বিন। ২০০৩ সালে এক সাক্ষাৎকারে রোয়ান অ্যাটকিনসন বলেন, ‘এর একটা বড় অনুপ্রেরণা ছিলো ফরাসি কমেডিয়ান জ্যাক তাতির সৃষ্ট চরিত্র মি. উলো। কিন্তু টিভিতে যে এমন একটা অনুষ্ঠান সত্যিই চলবে তা প্রথম বুঝতে পেরেছিলেন বিবিসি কমেডির সাবেক প্রধান হাওয়ার্ড ডেভিস। তিনি তখন আইটিভিতে কাজ করেন। তিনি শুরুতে আইটিভির সবচেয়ে দামি সময়ের আধঘণ্টা বরাদ্দ করেন মি. বিনের জন্য। প্রথম প্রচারের দিন থেকেই মি. বিন তুমুল জনপ্রিয়তা পায়। কয়েকদিনের মধ্যেই সবার পরিচিত হয়ে উঠলো মি. বিন। সেই জনপ্রিয়তা আজও অব্যাহত আছে। হয়তো ৫০ বছর পেরিয়েও তার নাম এলেই হেসে উঠবে দর্শক!
বাংলাদেশ সময় : ২০২৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৫