সাদা শার্ট, কালো কোট-প্যান্ট পরা এক মধ্যবয়সী লোক। গান শোনাতে চীন থেকে উড়ে এসেছেন ঢাকায়।

হাততালি তাই থামে না আর। মিলনায়তনজুড়ে হুলস্থূল করতালির শব্দ গানকেও নিষ্প্রভ করে দেয় মাঝে মধ্যে। ২ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় এমনই কিছু আশ্চর্য সুন্দর দৃশ্যের জন্ম হয়েছিলো বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীতে। এবং পরদিনও।


এসব মুগ্ধতা ছড়াতে ঢাকায় এসেছিলো গানসু অপেরা হাউস। এটি চীনের নাচ-গান-জাদুর দল। তিনটি প্রদর্শনী করতেই তাদের এই সফর। দু’টি শিল্পকলায়, একটি আর্মি স্টেডিয়ামে। বাংলাদেশ-চীন ফ্রেন্ডশীপ সেন্টার, বাংলাদেশস্থ চীন দূতাবাস ও শিল্পকলা একাডেমী মিলেমিশে করেছিলো আয়োজনটি। উপলক্ষ হিসেবে সামনে ছিলো একটি সংখ্যা- ৪০।


প্রথমে কিছুক্ষণ আলোচনা পর্ব ছিলো। এরপর অন্ধকার মঞ্চে হঠাৎ আলো ছড়ায় একদল মেয়ে। হাতে বাদ্যযন্ত্র নিয়ে দেখায় শৃঙ্খলিত মুদ্রার বিষ্ফোরণ।

এরপর খানিকটা চমকিত হওয়ার মতো ঘটনা। যে উপস্থাপিকা অনুষ্ঠানের শুরু থেকে মিষ্টি হেসে চীনা ভাষায় ঘোষণা দিচ্ছিলেন, তিনি মঞ্চের মাঝামাঝি দাঁড়ালেন। নাম ঘোষণা করতে নয়, গাইতে। পরপর দু’টি গান করলেন তিনি। দর্শকদের কেউ কেউ উজ্জল চোখমুখ নিয়ে ফিসফিসিয়ে পাশের জনের কানে কিছু একটা পৌঁছে দিলেন। শুনে শ্রোতাও দোলালো মাথা। হয়তো কথার বিষয় ছিলো- মেয়েটির গান। হয়তো বলেছিলেন এমন- অদ্ভুত গায় তো!

মেয়েটি যখন গানের মাঝামাঝি- সজ্জাঘরে তখন প্রস্তুত আরও একদল মেয়ে। পরনে উজ্জল সাদা পোশাক। নৃত্যের তালে তালে জমিয়ে গেলো তারাও।

শুধু নাচ-গানেই মুগ্ধতা নয়, মুগ্ধতা ছিলো জাদুতেও। মঞ্চে এলেন জাদুকর, সঙ্গে দুই কিশোরী। ছোট ছোট ম্যাজিক দেখিয়ে জিতে নিলেন অজস্র করতালি।

রাত সাড়ে ৭টা থেকে সাড়ে ৯টা- এ স্বল্প সময়ে গানসু দেখিয়ে ফেললো ১৪টি পরিবেশনা। মাঝে অ্যাক্রোবেটিকস ছিলো, বাদ্যযন্ত্র পরিবেশনা ছিলো। তবে সবচেয়ে আকর্ষণীয় পরিবেশনা ‘থাউজেন্ড হ্যান্ড কুয়ান-ইন’।


২ ও ৩ ফেব্রুয়ারি গানসু অপেরা হাউস যে তৃপ্তি দিয়ে গেলো শিল্পকলা একাডেমীর দর্শকদের, পরদিন আবার আর্মি স্টেডিয়ামের দর্শকদের; সে তৃপ্তির স্বাদ বহু বছর লেগে থাকতে বাধ্য।



























বাংলাদেশ সময় : ১৮৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৪, ২০১৫