বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সাংস্কৃতিক বন্ধনের ক্ষেত্রে অনন্য ভূমিকা পালন করে চলেছে ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার- আইজিসিসি। এরইমধ্যে সাফল্যের সঙ্গে ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার পাঁচ বছর পার করলো গত মাসে।
আইজিসিসি’র বর্তমান ডিরেক্টর হলেন জয়শ্রী কুণ্ডু। বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনের এটি একটি সাংস্কৃতিক শাখা। যেজন্য আইজিসিসিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানই বেশি হয়ে থাকে। দুইদেশের বিশিষ্ট শিল্পীরা নিয়মিতভাবে এখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছেন।
এখানে প্রতি সপ্তাহের শুক্রবার ও শনিবার নিয়মিতভাবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ছাড়াও সমাজের নানা পেশার লোকসহ প্রচুর শিক্ষার্থী উপস্থিত খাকে। সপ্তাহের বিশেষ বিশেষ দিনেও নানা অনুষ্ঠান হয়ে থাকে আইজিসিসি’তে।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধশত জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আইজিসিসি রবীন্দ্র সঙ্গীত, আবৃত্তি ও চণ্ডালিকা নৃত্যনাট্যের আয়োজন করে। বিদ্রোহীকবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘বিদ্রোহী’ কবিতার ৯০ বছর বর্ষপূতি পালন করে আইজিসিসি।
বাংলাদেশ এবং ভারতের বিশিষ্ট শিল্পীরা এ কেন্দ্রটিতে নিয়মিত তাদের একক সঙ্গীত পরিবেশন করছেন। খ্যাতনামা রবীন্দ্র ও নজরুল সঙ্গীতশিল্পীরা তাদের পারফমরমেন্স করে দর্শকদের পিপাসা মিটিয়েছেন।
এখানে অনুষ্ঠানের মানের কারণেই সব সময় দর্শক উপস্থিতি থাকে বিপুলভাবে। ব্যতিক্রমী বিষয় হলো এ কেন্দ্রটিতে অনুষ্ঠান দেখতে আগতদের কোন টিকিট কাটতে হয় না।
বাংলাদেশের মানুষ ঢাকায় বসেই ভরতনাট্যম, উড়িষ্যা নৃত্য, উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতসহ ভারতের নানা প্রান্তের আঞ্চলিক সঙ্গীত-নৃত্য ঢাকায় বসে উপভোগ করতে পারছেন। যা নি:খরচায় এমনটা দেখা-শোনা অকল্পনীয়।
এখানে পারফরমেন্স করেছেন নগর বাউল, জেমস, মাইলস, সোলস, এলআরবি, শাহিন আহমেদসহ বিশিষ্ট রকস্টাররাও। অনেকে কবিতা আবৃত্তি করেছেন। বর্তমান হাই কমিশনার পঙ্কজ শরনের পুত্র শুভ শরন আইজিসিসি’তে একককভাবে গিটার পরিবেশনা করেছেন।
পাঁচ বছর আগে অর্থাৎ ২০১০ সালের ১১ মার্চ যাত্রা শুরু করে ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার। কেন্দ্রটি উদ্বোধন করেছিলেন ইণ্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কারচারাল রিলেসন্সের সভাপতি করণ সিং এবং তদানীন্তন তথ্য ও সংস্কৃতিমন্ত্রী আবুল কালাম আজাদ।
ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টার গত ১৪ মার্চ পাঁচ বছর পূর্তি উৎসব উদযাপন করে। দ্বিতীয় পর্বের উৎসব উদযাপন করা হবে আগামী ১০ ও ১১ এপ্রিল অফিসার্স ক্লাবে।
কেন্দ্রটিতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশনা ছাড়াও হিন্দি ভাষা শিক্ষাকোর্স, যোগব্যায়াম, চিত্রাঙ্কন প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় নামমাত্র অর্থে। গত পাঁচ বছরে তিন হাজারেরও বেশি যোগব্যায়াম বিষয়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। এক হাজারেরও বেশি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীত এবং ছ‘শোরও মতো ছাত্র-ছাত্রী নাচে তালিম নিয়েছেন।
অর্থাৎ ভারত-বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ক্ষেত্রে এ কেন্দ্রটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে চলেছে। নবীনরা এখানে প্রশিক্ষণ নিয়ে তাদের সমাজে প্রতিষ্ঠিত করার সুযোগ পাচ্ছে।
এখানে বাংলাদেশের বিশিষ্ট শিল্পীদের মধ্যে রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, সাবিনা ইয়াসমীন, ফেরদৌস আরা, মিতা হক, শাকিলা জাফর, আবদুল হাদী সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন।
তেমনি ভারত থেকে এসেছেন পণ্ডিত যশরাজ, জয়তী চক্রবর্তী, স্বাগতালক্ষ্মী দাসগুপ্ত, ইন্দ্রনী সেন, ডোনা গাঙ্গুলী প্রমুখ।
এ ছাড়াও ইন্দিরা গান্ধী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ও উদীয়মান শিল্পীদের ভারতে অনুষ্ঠান করার সুযোগ করে দেয়।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০১৫
এসএস