সর্বকালের সেরা ছবি হবে ‘বজরঙ্গি ভাইজান’! কথাটা বলেছেন নবাবপত্নী। মানে কারিনা কাপুর খান।
‘এক থা টাইগার’-এর পর সালমান আর পরিচালক কবির খান ফের একসঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। ‘কিক’-এর পর সালমান আর নওয়াজুদ্দিন সিদ্দিকী আবার একই ফ্রেমে। আর ‘বডিগার্ড’-এর পর সালমান-কারিনা জুটির ফেরা। উল্লিখিত তিনটি ছবির চেয়েও ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ বেশি সফল হবে বলে গ্যারান্টি দিয়ে ফেলেছেন কারিনা। এর গল্প নিয়ে নানা কথা শোনা যাচ্ছে। ছবিতে এক স্কুল শিক্ষিকা রাসিকার ভূমিকায় দেখা যাবে ৩৪ বছর বয়সী এই অভিনেত্রীকে। পবণ কুমার চতুর্বেদির (সালমান খান) সঙ্গে কীভাবে তার আলাপ হয়, কীভাবে মুন্নি (হারশালি মালহোত্রা) নামের একটি বাচ্চা মেয়েকে পাকিস্তানে পৌঁছে দিতে পবনকে রাসিকা সহযোগিতা করেন, তা নিয়েই গল্পটা। পবনকে সবাই ভালোবেসে বজরঙ্গি নামে ডাকে। তাই ছবির নাম ‘বজরঙ্গি ভাইজান’।
ছবিটির দৃশ্যধারণ হয়েছে কাশ্মিরে। এতেই খবরের শিরোনামে থাকার জন্য এটাই তো যথেষ্ট! কারণ কাশ্মিরে সালমানের মতো সুপারস্টারের কাজ করা চাট্টিখানি নয়। এতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে কাশ্মিরে সৌন্দর্য। লক্ষণীয় ব্যাপার হলো, কাপুর সাম্রাজ্যের সবাই কোনো না কোনো সময় কাশ্মিরে কাজ করেছেন। বাকি ছিলেন কেবল কারিনা। এবার তিনি সেখানে গেলেন। অবশ্য শুটিংয়ে হারশালি মাঝে মধ্যেই কাজ করতে চাইতো না। একদিন তো ঘণ্টাতিনেক কাজ বন্ধ ছিলো তার মর্জি না থাকায়! সেটে ও-ই ছিলো সবার মধ্যমণি। ৬ বছর বয়সী এই মেয়ের যত্ন, আরাম আর স্বাচ্ছন্দ্য নিয়েই ভেবেছে সবাই।
সালমানের সঙ্গে এটা কারিনার চতুর্থ ছবি। তাদের চেনাজানা সেই ১৯৯২ সাল থেকে। সে সময় কারিশমার সঙ্গে সল্লু ‘নিশ্চয়’ ছবিতে প্রথম কাজ করছিলেন। পর্দায় পাশাপাশি দাঁড়িয়ে, হাত ধরে প্রেমের গানে ঠোঁট মেলালেও সালমানের চেয়ে কারিনা ১৮ বছরের ছোট! মজার বিষয় হলো, কারিনার সঙ্গে প্রেমের দৃশ্যে কাজ করতে গেলেই সালমানের চোখের সামনে ভাসতো সাইফ আলি খানের ছবি! এ কারণে প্রেমের দৃশ্যগুলোতে কাজ করাটা কঠিনই হয়েছে তার জন্য।
‘বজরঙ্গি ভাইজান’ই সালমানের ক্যারিয়ারে সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত ছবি। গল্প শোনার পর থেকে এতে কাজ করার জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠেন ৪৯ বছর বয়সী এই তারকা। সেজন্য এটি প্রযোজনা করেছেন নিজেই। সালমানের প্রযোজনায় কাজ করতে পেরে কারিনা উচ্ছ্বসিত। সল্লুর বোন আলভিরা আর তার স্বামী অতুল অগ্নিহোত্রীর প্রথম প্রযোজনা ‘বডিগার্ড’-এ কাজ করেছেন তিনি।
গল্পটাতে সালমান এতোই সম্পৃক্ত হয়ে গিয়েছিলেন যে, কান্নার দৃশ্যে তার গ্লিসারিন লাগতো না। আবেগপ্রবণ দৃশ্যে এমনিতেই তার চোখে জল চলে এসেছে। একইভাবে মারধরের দৃশ্যে আপনাআপনি রেগে যেতেন! আর হাসানোর প্রয়োজন হলে রসবোধ উপচে পড়তো তার ভেতর থেকে। একটি দৃশ্যধারণের জন্য খুলে দিয়েছিলেন পানভেলে নিজের বাগানবাড়ির দরজা। ঈদকে সামনে রেখে ভারি বর্ষণেও কাজটা থামিয়ে রাখেননি।
এদিকে ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ নিয়েও সমালোচনার মুখে পড়তে হচ্ছে সালমানকে। ছবিতে প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের মতো স্পর্শকাতর বিষয় উঠে আসায় উঠেছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। পাকিস্তানি শিশুকে তার দেশে ফিরে যেতে সাহায্য করা চরিত্রে অভিনয় করায় তার সমালোচনাও চলছে। এ নিয়ে খান সাহেবের সাফ বক্তব্য, ‘যদি ঘৃণা ছড়াতে চান, তাহলে দয়া করে ছবিটি দেখতে আসবেন না। আদালতে যখন আমার পরিচয় জানতে চাওয়া হয়েছিলো, বলেছিলাম আমি ভারতীয়। আমার বাবা মুসলমান, মা হিন্দু, হেলেন আন্টি (সেলিম খানের আরেক স্ত্রী) ক্যাথলিক। তাহলে আমি কি? ধর্ম বা রাজনীতির স্বার্থে বিভেদ আর বিদ্বেষ ছড়ানোর পক্ষপাতী আমি নই। যদি শান্তি আর আনন্দ চান, তাহলে অবশ্যই ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ দেখতে আসবেন। এ ছবি সবাইকে সম্মান করবে। ’
সালমান মনে করেন, তার দুই বন্ধু আমির খান ও শাহরুখ খানের সুবাদে ছবিটির প্রতি দর্শকদের বাড়তি আগ্রহ তৈরি হয়েছে। কারণ খান সাম্রাজ্যের ওই দুই তারকা ‘বজরঙ্গি ভাইজান’-এর প্রথম ট্রেলার উন্মুক্ত করেছেন। গানগুলোও ছবিটিকেও রেখেছে আলোচনায়। এবারই প্রথম আদনান সামী তার গাওয়া গানে (ভার দো ঝোলি মেরি) পর্দায় নিজেই ঠোঁট মিলিয়েছেন। তা-ও কাওয়ালি গানে। সালমানের জন্য প্রথমবার গেয়েছেন আতিফ আসলাম (তু চাহিয়ে)। সেলফি নিয়েও আছে একটি গান। মিকার গাওয়া ‘আজ কি পার্টি’ও জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এর গান তৈরির আগে ছয় মাস সব ধরনের কাজ থেকে বিরতি নিয়েছিলেন সংগীত পরিচালক প্রীতম।
আগামী ১৭ জুলাই সালমান খান ফিল্মস ও ইরোস ইন্টারন্যাশনাল মুক্তি দিচ্ছে ‘বজরঙ্গি ভাইজান’। আশা করা হচ্ছে, ঈদে এটি বাজিমাত করবে। ছয় বছর আগে ‘ওয়ান্টেড’ দিয়ে ঈদ মানেই সল্লুর যে সফল যাত্রা শুরু হয়েছিলো, তা চলতেই থাকবে এটা মোটামুটি নিশ্চিত। কারিনা ঠিকই বলেছেন!
* ‘বজরঙ্গি ভাইজান’ ছবির ট্রেলার :
* ‘তু চাহিয়ে’ গানের ভিডিও :
* ‘ভার দো ঝোলি মেরি’ গানের ভিডিও :
* ‘আজ কি পার্টি’ গানের ভিডিও :
* ‘সেলফি লে রে’ গানের ভিডিও :
বাংলাদেশ সময়: ২২১৪ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০১৫
বিএসকে/জেএইচ