ছবিটিতে খান, বচ্চন কিংবা রজনীকান্ত কেউই নেই। তবুও আড়াইশ কোটি রুপির বিশাল বাজেটে নির্মিত ‘বাহুবলী’ ঠিকই ব্যবসার দিক দিয়ে ইতিহাস গড়েছে।
এসএস রাজামৌলি পরিচালিত ‘বাহুবলী’ মূলত দুই পর্বের ছবি। তেলেগু ও তামিল ভাষায় নির্মিত প্রথমটি মুক্তি পেয়েছে গত ১০ জুলাই। পরের পর্ব আসছে আগামী বছর। বিশ্বের মোট চার হাজার প্রেক্ষাগৃহে এখন চলছে এটি। যারা এ ছবি সম্পর্কে খু্ব একটা জানেন না, তাদের জন্য কিছু টুকরো তথ্য।
১. ‘বাহুবলী’র নায়ক ও খলনায়ক যথাক্রমে প্রভাস ও রানা দাগ্গুবাতি দীর্ঘদিন শরীরচর্চায় মনোযোগী হয়েছিলেন। প্রভাসের জিমের সরঞ্জাম কিনতে খরচ হয় দেড় কোটি রুপি। মাসল বানানোর জন্য রোজ ৪০টি ডিমের সাদা অংশটুকু খেতেন দু’জনই। তারা ছয় মাস যুদ্ধে ব্যবহৃত অস্ত্র চালানো এবং মার্শাল আর্ট শিখেছিলেন।
২. ছবিটিতে কাজ করার জন্য প্রভাস নিজের বিয়ে পিছিয়ে দিয়েছিলেন। টানা তিন বছর আর কোনো ছবিও করেননি। এ ছাড়া ‘রক ক্লাইম্বিং’-এর প্রশিক্ষণ নিয়েছেন প্রভাস। কাজটা তার এতোই ভালো লেগেছে যে, দৃশ্যায়ন শেষেও অভ্যাসটা ছাড়তে পারেননি!
৩. ছবিতে রানা দাগ্গুবাতির একটি বিশাল সোনালি মূর্তি আছে। শোনা যাচ্ছে, গ্রিক দেবতা কোলোসাস অব রোডসের বিখ্যাত মূর্তির অনুকরণে এটি তৈরি করেছেন শিল্প নির্দেশক। কোলোসাস অব রোডস প্রাচীন বিশ্বের সপ্ত-আশ্চর্যের মধ্যে একটি। কিন্তু ভূমিকম্পে তা নষ্ট হয়ে যায়। পরিচালক চেয়েছিলেন, মূর্তিটি যেন সেই ধাঁচের হয়।
৪. ২০০ একর এলাকা জুড়ে এ ছবির সেট তৈরি করতে লেগেছিলো মোট ২০০ দিন। ৫০০ জন টেকনিশিয়ান কাজ করেছেন এতে।
৫. ছবিটির দৃশ্যধারণ হয়েছে তিন বছর ধরে। সব মিলিয়ে এর কাজ হয়েছে ৩৮০ দিন।
৬. উপত্যকায় যুদ্ধের দৃশ্যটি শেষ করতে মোট দেড়শো দিন সময় নিয়েছিলেন পরিচালক। এতে কাজ করেছেন দু’হাজারেরও বেশি স্ট্যান্টম্যান।
৭. এ ছবির বাজেট ২৫০ কোটি রুপি। ভারতীয় চলচ্চিত্রের ইতিহাসে এটাই সর্বোচ্চ। এর মধ্যে স্পেশাল ইফেক্টসের বাজেটেই ছিলো ৮৫ কোটি রুপি। ছবিটিতে মোট সাড়ে চার হাজার ভিজ্যুয়াল ইফেক্টস ও কম্পিউটার গ্রাফিক্স রয়েছে। ৯০ ভাগ স্পেশাল ইফেক্টসের কাজ হয়েছে হায়দরাবাদে। বাকিটা তৈরিতে সহায়তা করেছে দক্ষিণ কোরিয়া ও চীনের দুটি স্টুডিও।
৮. ‘লর্ড অব দ্য রিংস’ আর ‘স্টার ওয়ার্স’-এর মতো হলিউডের বিখ্যাত ছবিগুলোতে নতুন কাল্পনিক ভাষা পাওয়া গেছে। কিন্তু ভারতীয় ছবিতে কাল্পনিক ভাষা তৈরির ঘটনা ছিলো না। ‘বাহুবলী’ এদিক দিয়েও অদ্বিতীয়। গল্পে কলাকেয়া আদিবাসীদের মুখে নতুন ভাষা দেন পরিচালক। এর নাম রাখা হযেছে ‘কলাকেয়া’। এই কিলিকিলি ভাষায় প্রায় ৭৫০ শব্দ আর ব্যাকরণের ৪০টি নিয়ম রয়েছে।
৯. নিজের প্রতিষ্ঠান ধর্মা প্রোডাকশনসের জন্য ‘বাহুবলী’র হিন্দি স্বত্ত্ব কিনেছেন করণ জোহর। নিবেদক হিসেবে তার নামই ওঠে পর্দায়।
১০. এর পোস্টার তৈরি হয়েছে ৫০ হাজার স্কয়ার ফুট জায়গা জুড়ে। ফলে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে সবচেয়ে বড় ছবির পোস্টার বিভাগে জায়গা করে নিয়েছে ‘বাহুবলী’।
১১. দৃশ্যধারণে ব্যবহৃত সব প্রপস, কস্টিউম ও অস্ত্র সংরক্ষণে রাখার জন্য তৈরি হয়েছে আলাদা প্রদর্শনশালা। এবারই প্রথম কোনো ভারতীয় ছবির বেলায় এমন ঘটনা দেখা গেলো।
১২. মুক্তির আগেই বিবিসির তথ্যচিত্রে ‘হান্ড্রেড ইয়ার্স অব ইন্ডিয়ান সিনেমা’য় একমাত্র ছবি হিসেবে স্থান পেয়েছে ‘বাহুবলী’।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২৪ ঘণ্টা, জুলাই ১৬, ২০১৫
বিএসকে/জেএইচ