ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তারার ফুল

নুসরাত ফারিয়ার সঙ্গে কিছুক্ষণ

‘আমি সবসময় নাম্বার ওয়ান’

সোমেশ্বর অলি, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৫
‘আমি সবসময় নাম্বার ওয়ান’ নুসরাত ফারিয়া/ছবি: নূর/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

নুসরাত ফারিয়া ঘুরতে বেরিয়েছেন, বন্ধুদের সঙ্গে। গন্তব্য বগুড়া।

গতকাল শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে যেতে যেতে মোবাইল ফোনে সাক্ষাৎকারটি দিলেন তিনি। তাকে ঘিরে এখন অনেক জিজ্ঞাসা ও কৌতূহল ভক্তদের মনে। ‘আশিকী’খ্যাত এই নায়িকা তাদের জন্য গোছানো জবাব দিয়েছেন সোজা-সাপ্টা। চলুন পড়ি তিনি কি কি বললেন।  

বাংলানিউজ: বলছিলেন বাবা অসুস্থ। এখন তার কী অবস্থা?
নুসরাত ফারিয়া: বাবাকে নিয়ে ব্যাংকক গিয়েছিলাম। গতকাল (১৫ অক্টোবর) ফিরেছি। এখন মোটামুটি সুস্থ। তিনি হৃদরোগে ভুগছেন।

বাংলানিউজ: ‘আশিকী’র মতো বড় বাজেটের ছবি দিয়ে চলচ্চিত্রে এলেন। ছবিটি আপনার প্রত্যাশা পূরণ করতে পেরেছে?
ফারিয়া: অবশ্যই। এই সাড়া অভূতপূর্ব। আমি সিনেমা হলে গিয়ে দেখেছি ছবিটা। সাধারণ মানুষের ভিড়ে নিজেকে রেখে দেখলাম, এমন এমন সব মানুষ গিয়েছিলেন ছবিটা দেখতে যে, সত্যি অপ্রত্যাশিত। তারা যদি এভাবে নিয়মিত আসেন, তাহলে আমাদের চলচ্চিত্রাঙ্গনের জন্য ইতিবাচক হবে। তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত আমার ছবিটা হাউসফুল চলেছে। ইট ওয়াজ জাস্ট ওয়াও! 

বাংলানিউজ: বুঝলাম ছবিটা নিয়ে আপনি সন্তুষ্ট। তো, আপনি কি মনে করেন বড় পর্দায় আপনার অভিষেক মনের মতো হয়েছে? অন্যান্য নায়িকাদের বেলায় কিন্তু এমনটা ঘটে না…
ফারিয়া: অবশ্যই। আমি অনেক ভাগ্যবতী, সবদিক থেকেই। আমি যেরকম আশা করেছিলাম তার চেয়ে বেশি পেয়েছি। আমার সবকিছু ধুমধাম করে হয়েছে। বিশেষ করে ছবিটা দেখার পর সবাই আমার অভিনয়ের প্রশংসা করেছেন। আর আমি মনে করি, আমার প্রতি সবার যে প্রত্যাশা ছিলো তা পূরণ করতে পেরেছি। এর কৃতিত্ব অবশ্যই নির্মাতাদের। কারণ আমাকে স্কুলিং করানো হয়েছিলো। ধন্যবাদ জাজ মাল্টিমিডিয়া ও এসকে মুভিজকে।         

বাংলানিউজ: তেলেগু ছবি ‘ইশক’-এর রিমেক ‘আশিকী’। এতে আপনি কতোটা ভালো করেছেন বলে মনে করেন?
ফারিয়া: ‘ইশক’-এর কপিরাইট নিয়েই তৈরি হয়েছে ‘আশিকী’। আমাকে শুরুতে ওই ছবিটা দেখতে বারণ করা হয়েছিলো। নির্মাতারা বলেছিলেন, আমাকে নিজের মতো করে চরিত্রটা ফুটিয়ে তুলতে হবে। আমি কৌতূহলের জায়গা থেকে ‘ইশক’ দেখেছিলাম। পরে আমি নিজের মতো অভিনয় করেছি, চরিত্রটা ফুটিয়ে তুলেছি।   

বাংলানিউজ: কলকাতায়ও ছবিটি আলোচিত। সেখানকার বড় প্রাপ্তি কী?
ফারিয়া: কলকাতার সাড়াও খুব ভালো। আমাদের হাতে সময় কম ছিলো। খুব অল্প সময়ের মধ্যে ছবিটি মুক্তি দিতে হয়েছে। এর মধ্যে সম্পাদনা, ডাবিং শেষ করে প্রচারণা চালাতে হয়েছে। বাংলাদেশে সাতদিন সময় পাওয়া গিয়েছিলো, ওখানে তা-ও পাইনি। প্রচারণা আরেকটু বেশি হলে আরও ভালো ফল আসতে পারতো। তারপরও বলবো ঠিক আছে। আর কলকাতায় বাণিজ্যিক ছবিতে এখন একটু খরা চলছে। সেই তুলনায় ‘আশিকী’ ভালো করেছে, অনেক ভালো। ওখানে এটাকে বাম্পার হিট বলা হচ্ছে।

বাংলানিউজ: প্রিমিয়ার শো দেখে কলকাতার তারকারা তো আপনাকে নিয়ে অনেক ইতিবাচক মন্তব্য করেছিলেন।
ফারিয়া: প্রসেনজিৎ, দেব ছাড়াও আরও যারা আছেন, তারা আমার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন। মনে হয় না আমার আগে বাংলাদেশি কোনো শিল্পীকে, বিশেষ করে জয়া আপু (জয়া আহসান) ছাড়া বাংলাদেশি কোনো অভিনেত্রীকে এতোখানি সম্মান দেওয়া হয়েছে। তিনি অবশ্য অনেক উঁচুমানের অভিনেত্রী। নবাগত হিসেবে আমি সেটা পেয়েছি। এটা আমার জন্য নতুন অভিজ্ঞতা।      

বাংলানিউজ: ছবিটিতে আপনার কথা বলার ধরণ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। অন্যদের মতো করে কথা বলেননি বলেই কী এমন হয়েছে? এর কী ব্যাখ্যা দেবেন?
ফারিয়া: আসলে আমি জানি না অন্যরা কেমন করে কথা বলেন! তাদের সঙ্গে আমাকে মিলিয়ে লাভ নেই। কারণ তাদের আর আমার ভিত্তি সম্পূর্ণ আলাদা। প্রথম বিষয় হচ্ছে, আমার উচ্চারণ আলাদা ও স্মার্ট হবে অন্য যে কারও চেয়ে, এটাই স্বাভাবিক। কারণ আমি তিন বছর উপস্থাপনা করেছি। এমনি এমনি উপস্থাপনা করিনি।

দ্বিতীয়ত, আমাকে দুই দেশের দর্শকের কথা মাথায় রাখতে হয়েছে। আমি ভাবি না যে, আমার ক্যারিয়ার এক জায়গায় থেমে থাকবে। ইচ্ছে করেই, দুই দেশের দর্শকের কাছেই যেন ভাষাটা ঠিক লাগে, সেভাবে কথা বলেছি। ডাবিংয়ের সময় এই মিশ্রণটা করতে হয়েছে। আমি এ নিয়ে তৃপ্ত। আর আমার মনে হয়, যখন সমালোচনার জন্য কিছুই খুঁজে পাওয়া যায় না তখন এই ধরনের খুঁত ধরা হয়। আলোচনা-সমালোচনা যা-ই হোক না কেন, আমি সবসময় নাম্বার ওয়ান।

বাংলানিউজ: ফেসবুকে আপনার অনুসারী বা ভক্ত ছাড়িয়ে গেলো ২০ লাখের ঘর। এই জনপ্রিয়তা কেমন উপভোগ করছেন?
ফারিয়া: এটা অসাধারণ। মানুষজন সব মাধ্যমেই আমার সঙ্গে আছে। এটা ভাবতে ভালো লাগে। খুব অল্প সময়ে এতো কিছু পেয়েছি।

বাংলানিউজ: জাজ মাল্টিমিডিয়া আপনাকে চলচ্চিত্রে নিয়ে এসেছে। তাদের বাইরে দেশের অন্য প্রযোজকদের ছবি করার সুযোগ থাকছে আপনার?
ফারিয়া: জাজ মাল্টিমিডিয়া আমার ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠান। তাদের বাইরে কাজ করার সুযোগ আছে। ওখান থেকে সব গুছিয়ে দিলে অন্য প্রযোজকদের ছবিতেও অভিনয় করবো।

বাংলানিউজ: উপস্থাপনায় খ্যাতি পেয়েছিলেন। সময়-সুযোগ পেলে আবার উপস্থাপনা করবেন? হলে কী ধরনের অনুষ্ঠান করতে চান?
ফারিয়া: আপাতত উপস্থাপনার সুযোগ কম। কখনও যদি এ কাজে ফিরি, ধামাকা দিয়েই করবো। ওয়ান সিগনেচার শো হলেই কেবল করতে পারি।

বাংলানিউজ: আপনাকে নিয়ে কয়েকদিন আগে ভিত্তিহীন খবর বেরিয়েছে। বিষয়টাকে কীভাবে মোকাবেলা করছেন?
ফারিয়া: আমি বুঝি না মানুষজন কেনো এমন করে! এটা উচিত না। সত্যি বলতে, এসব নিয়ে মাথা ঘামাই না। অনেকেই এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু আমার অভিমত হলো, মানুষ এখন বুঝতে পারে কোনটা আসল কোনটা নকল। আবার অনেকে বলে যে, তারকা হয়ে গেলে হাসি দিলেও খবর হয়। আমি মনে করি এটা তেমনই একটা কিছু। তবে সত্যিকার অর্থেই এসব দেখার সময় নেই। কারণ কাজ নিয়েই দৌড়ের মধ্যে থাকতে হয় আমাকে।    

বাংলানিউজ: চলচ্চিত্রে ব্যস্ততা বাড়ছে। বিজ্ঞাপনচিত্রে থাকার ইচ্ছে আছে?
ফারিয়া: তা আছে। কিন্তু আমি ও আমার ব্যবস্থাপক দল পরিকল্পনা করে রেখেছি আগামী এক বছর কী করবো। দেখা যাক কী হয়…

বাংলানিউজ: বলিউডের ছবি ‘গাওয়াহ, দ্য উইটনেস’-এ অভিনয় করছেন। এর অর্থ হলো, ওখানকার নায়িকাদের সঙ্গে এক ধরনের প্রতিযোগিতায় নাম উঠলো আপনার। অভিনয় ও নৃত্যগুণে পারদর্শী হয়েই সেখানে নায়িকা হওয়ার চল। এ ক্ষেত্রে আপনি কতটা প্রস্তুত?
ফারিয়া: প্রস্তুতি তো ব্যাপকভাবেই নিচ্ছি। এটা ঘটা করে জানান দেওয়ার বিষয় নয়। আমি এখন অপেক্ষা করছি। বাকি কাউন্সেলিংটা দৃশ্যধারণ শুরুর আগে আগে হবে।  

বাংলানিউজ: শুরুতেই এমরান হাশমির মতো তারকাকে পাচ্ছেন। কখনও এমন ভেবেছিলেন? বলিউডে আর কাকে নায়ক হিসেবে চান?
ফারিয়া: আসলে আমি কোনোদিন ভাবিনি ছবি করবো। এ ক্ষেত্রে যা পাচ্ছি সবই ভালো। আর বলিউডে দ্বিতীয় ছবির নায়ক হিসেবে হৃতিক রোশনের সঙ্গে অভিনয় করতে চাই।

বাংলানিউজ: ‘গাওয়াহ, দ্য উইটনেস’-এর আগে আর কী করছেন?
ফারিয়া: আমাদের লাইনআপ সাজানো আছে। শিগগিরই জাজ মাল্টিমিডিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে এ নিয়ে সবাইকে জানাবে। আমি কিছু বলবো না। আর বলিউডের ছবিটির শুটিং কবে তা ওখান থেকে আমাকে জানানো হবে।  

বাংলানিউজ: যৌথ প্রযোজনা বা একটি দুটি বড় বাজেটের ছবি দিয়ে কী আমাদের চলচ্চিত্র শিল্পের পুরনো চেহারা বদলানো সম্ভব?
ফারিয়া: যৌথ প্রযোজনা ছাড়াও অনেক ছবি হচ্ছে। সিনেমা হলগুলোর উন্নতি হলে বড় বাজেটের ছবিগুলোর টাকা উঠে আসবে। এটা সহজ একটা হিসাব। আমি মনে করি, এই দিকটায় সংশ্লিষ্টদের নজর দিতে হবে। আর নতুন অনেক ভালো নির্মাতা এসেছেন। ফাঁকা মাঠে গোল দিয়ে মজা নেই। প্রতিযোগিতা থাকলে আরও ভালো ছবি তৈরি হবে।    

বাংলানিউজ: বাংলানিউজের এক সাক্ষাৎতকারে বলেছিলেন ২৫ বছর বয়সে বিয়ে করবেন। বিয়ে নিয়ে নতুন করে কিছু ভেবেছেন?
ফারিয়া: বিয়ে নিয়ে নতুন কিছু ভাবিনি। তবে আগে যেটা বলেছিলাম, সেটাই ঠিক আছে, ২৫ বছর বয়সেই বিয়ে করবো আমি।

বাংলানিউজ: তো, ২৫ হতে কত বছর বাকি?
ফারিয়া: চার বছর…

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৭, ২০১৫
এসও/জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

তারার ফুল এর সর্বশেষ