ব্যাংকক থেকে: একটি মাত্র সার্ক ভিসাতেই দক্ষিণ এশিয়ার আটটি দেশ ভ্রমণ করা যায়। যা এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীদের জন্য বিরাট একটি সুযোগ।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীরা একমত হয়েছেন। এ বিষয়ে নিজ দেশের সরকারের সঙ্গে আলোচনাও করতে সম্মত হয়েছেন তারা। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদারের পাশাপাশি বিমসটেক’র মাধ্যমেও বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করতে চায় থাইল্যান্ড।
থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে কুইন সিরিকিত ন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে তিনদিনব্যাপী বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট এক্সপো ২০১৬-এর দিনভর প্যানেল আলোচনায় এসব বিষয়ে একমত হন দুই দেশের ব্যবসায়ীরা। থাইল্যান্ডের বাংলাদেশ দূতাবাস ও বাংলাদেশ রফতানি উন্নয়ন বোর্ড যৌথভাবে এ আলোচনার আয়োজন করেছে।
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র সভাপতি মাতলুব আহমেদ বাংলাদেশের ব্যবসায়ী দলের নেতৃত্ব দেন। এছাড়া ফেডারেশন অফ থাই চেম্বার, থাই চেম্বার অফ কমার্স এবং জয়েন্ট ফরেন চেম্বার অফ কমার্স অফ থাইল্যান্ডের প্রতিনিধিরাও এতে অংশ নেন।
দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সাতটি দেশ নিয়ে গঠিত বে অফ বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল, টেকনিকাল অ্যান্ড ইকনমিক কো-অপারেশন বা বিমসটেকের সদস্য দেশগলো হল-বাংলাদেশ, ভারত, মায়ানমার, শ্রীলংকা, থাইল্যান্ড, ভুটান ও নেপাল। সার্কের মতো বিমসটেক ভিসা চালু হলে মায়ানমার, থাইল্যান্ড ও বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা বিশেষভাবে উপকৃত হবেন। সার্কের অন্য সদস্য রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ সহজ রয়েছে।
এদিকে ব্যবসার সুবিধার জন্য দু’দেশের মধ্যে পণ্য পরিবহন সহজ করতে থাইল্যান্ড থেকে সরাসরি বাংলাদেশে উপকূলীয় জাহাজ চলাচলের বিষয়েও একমত হয়েছে দু’দেশ। শিগগরিই এটি চালু হতে পারে।
তৈরি পোশাক খাতে থাইল্যান্ডও বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী। আর এ কারণে থাই বাজারে ব্যাপক সম্ভাবনা থাকলেও দেশটির সরকারের অনুমতি মিলছে না। বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা থাইল্যান্ডে বাজারে বাংলাদেশি পোশাকের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার চেয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের পোশাক রফতানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র পরিচালক শহীদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, থাইল্যান্ড প্রায় ছয় হাজার বাংলাদেশি পণ্য শুল্কমুক্ত সুবিধা দেয়। কিন্তু প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সে সুবিধা পাইনা আমরা। যেমন থাইল্যান্ডে লেডিস শার্টের চাহিদা অনেক বেশি। কিন্তু সেটা থাইল্যান্ডই তৈরি করে। তাই শুল্কমুক্ত থাকলেও এ ধরনের পণ্য থাই বাজারে প্রবেশ করতে পারে না।
তিনি বলেন, থাইল্যান্ডে ব্যবসার অনেক সুযোগ রয়েছে। তবে তার আগে এসব বাধা দূর করা জরুরি। তবেই দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বাড়বে।
এসব বিবেচনায় নিয়ে থাই সরকারের কাছে রফতানিযোগ্য পণ্যে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার চেয়েছে বাংলাদেশ। থাই ব্যবসায়ীরাও টেক্সটাইল পণ্যে বাংলাদেশের কাছে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দাবি জানিয়েছেন।
দ্বিতীয় দিনেও এক্সপোতে অংশ নিয়ে বাংলাদেশের মন্ত্রীরা বিভিন্ন প্যালেন আলোচনায় অংশ নেন। জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু বিভিন্ন থাই জ্বালানি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম কয়েকটি থাই টেলিকম কোম্পানির সঙ্গে বৈঠক করে থাই ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহবান জানান।
এছাড়া বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরাও বিভিন্ন নিজ নিজ খাতের ব্যবসা সম্পর্কে প্রেজেনটেশন উপস্থাপন করেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৩০ ঘণ্টা, জুন ০১, ২০১৬
জেপি/ওএইচ/