ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

পর্যটন

পর্যটন বিকাশের দাবিতে টাঙ্গুয়ার হাওরে নৌ-যাত্রা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১, ২০১৬
পর্যটন বিকাশের দাবিতে টাঙ্গুয়ার হাওরে নৌ-যাত্রা

ঢাকা: ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ রামসার সাইট হিসেবে স্বীকৃত ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের কোলঘেঁষা টাঙ্গুয়ার হাওরে বসছে দু’দিনের নৌ-যাত্রা। ঈদের ছুটির পর আগামী ১৬ ও ১৭ সেপ্টেম্বর দু’দিনব্যাপী এ নৌ-যাত্রা অনুষ্ঠিত হবে।

দেশ-বিদেশের পর্যটকদের কাছে টাঙ্গুয়ার হাওরের পর্যটন শিল্পের পরিচিতি তুলে ধরার জন্যই এ নৌ-যাত্রাকে উৎসবে পরিণত করার উদ্যোগ নিয়েছে তাহিরপুর উপজেলা পরিষদ।

সুনামগঞ্জের তাহিরপুর ও ধর্মপাশা উপজেলার আংশিক এলাকাজুড়ে অবস্থিত প্রায় ১০ হাজার হেক্টর আয়তনের অধিক জলাভূমি নিয়ে গঠিত টাঙ্গুয়ার হাওর। বিভিন্ন প্রজাতির দেশি মাছ আর দেশি-বিদেশি পাখ-পাখালির অভয়ারণ্য টাঙ্গুয়া ঘিরে পর্যটন শিল্পের অবকাঠামো গড়ে তোলার দাবিতে মূলত এ নৌ-যাত্রা। এ উৎসব ঘিরে কয়েক হাজার পর্যটকের মিলন মেলায় পরিণত হবে এ জলাভূমি।

হাওরের জলাভূমিজুড়ে হিজল করচের সবুজ ছায়ার নীল জলরারিতে  ৫৩টি বিল, ১২০ কান্দা-জাঙ্গাল রয়েছে। ১শ ৪১ প্রজাতির মাছ, ২শ প্রজাতির জলজ উদ্ভিদ, ৩শ ৪০ প্রজাতির দেশি-বিদেশি পাখি, ৯৮ প্রজাতির পরিযায়ী পাখি, ১২১ প্রজাতির পরিযায়ী হাঁস, ১৯ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ২৯ প্রজাতির সরীসৃপ, বিশ্বের বিলুপ্ত প্যালাসাস পেঙ্গুইন পাখি, প্রায় ১১ প্রজাতির উভচর প্রাণীসহ অসংখ্য স্থলজ, জলজ প্রাণী ও জীববৈচিত্র্যের অভয়ারণ্য সুবিশাল টাঙ্গুয়ার হাওরের বুকজুড়ে।

বিভিন্ন সময় সরকারের পক্ষ থেকে টাঙ্গুয়ার হাওরকেন্দ্রিক পর্যটন নিয়ে  প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও প্রতিশ্রুতিই আলোর মুখ দেখেনি।

টাঙ্গুয়ার হাওর, বারেক টিলা, যাদুকাটা নদীতে ভ্রমণে এসে থাকা-খাওয়াসহ নানা বিড়ম্বনার শিকার হন পর্যটকরা। অথচ পর্যটন ঘিরে অপার সম্ভাবনা আছে এ অঞ্চল ঘিরে।

নৌ-যাত্রার আয়োজক সূত্র জানায়, টাঙ্গুয়ার হাওরে দিন দিন পর্যটক ও  দর্শনার্থীদের উপস্থিতি বাড়ছে। হাওরের নৌ-যাত্রাকে উৎসবে পরিণত করার জন্য পানির ওপর ভাসমান মঞ্চে রাত কাটানোসহ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও থাকবে।

থাকবে চারটি লঞ্চসহ প্রায় অর্ধ শতাধিক নৌ-বহর। নৌ-যাত্রার দ্বিতীয় দিনে যাদুকাটা নদীর কোলঘেঁষা বারেক টিলায় থাকবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও আলোচনা সভা। জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ টাঙ্গুয়ার হাওরের পর্যটন সম্ভাবনা দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে দিতে ও পর্যটন উপযোগী অবকাঠামো গড়ে তোলার দাবিতে দেশের যে কোনো স্থান থেকেই এ নৌ-যাত্রায় অংশ নেওয়ার জন্য পর্যটক ও ভ্রমণপিপাসুদের আহ্বান জানিয়েছে উপজেলা পরিষদ।

দু’দিনের নৌ-যাত্রায় পর্যটকদের মতামত নিয়ে সরকারের কাছে দ্রুত পর্যটন শিল্প গড়ে তোলার জন্য সুপারিশ জানাবেন আয়োজকরা।

দু’দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন এমপি, জেলা প্রশাসক শেখ মো. রফিকুল ইসলামসহ জেলা পুলিশের দায়িত্বশীল অফিসাররা।

উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান কামরুলে সভাপতিত্বে হাওরের নৌ-যাত্রা ও উৎসব সফল করতে সম্প্রতি উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরি মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত)  মো. রফিকুল ইসলাম, ওসি মো. শহীদুল্লাহ, উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বিপ্লব সরকার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হোসেন খাঁ, সদর ইউপি চেয়ারম্যান বোরহান উদ্দিন,  সহ-সভাপতি নুরুল আমীন, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন, বাদাঘাট ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দিন প্রমুখ।

লেখা ও ছবি: হাবিব সরোয়ার আজাদ, গণমাধ্যমকর্মী এবং উপ-পরিচালক-পরিবেশ ও মানবাধিকার উন্নয়ন সোসাইটি, ঢাকা ,বাংলাদেশ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৬
এএ

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।