ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ট্রাভেলার্স নোটবুক

চী‌নে ১ ইয়েনে সাই‌কেল যখন যেখা‌নে খু‌শি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৮
চী‌নে ১ ইয়েনে সাই‌কেল যখন যেখা‌নে খু‌শি চীনে রাস্তার পাশে সাজিয়ে রাখা সাইকেল/ছবি: বাংলানিউজ

চী‌নের গোয়াংজু শহর থে‌কে: সমাজত‌ন্ত্রের চীন তখন সাই‌কে‌লের শহর। ধনী-গ‌রিব-রাষ্ট্রপ্রধানরাও সাই‌কে‌লে যাতায়াত কর‌তেন। সেই চীন এখন মোটরগা‌ড়িতে ভরা। গা‌ড়ির সংখ্যা এতো বে‌শি যে তিন থে‌কে ছয়তলা ফ্লাইওভার দি‌য়ে গা‌ড়ি চল‌ছে। কিন্তু সাই‌কেল এখনও রয়ে‌ছে। বরং বেড়েছে সংখ্যা। অসংখ্য সাই‌কেল রাস্তায় সা‌জি‌য়ে রাখা। এসব সাই‌কেল মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে স্ক্যান করে তালা খু‌লে মানুষ চালাচ্ছে। পরে রাখা যাবে যেখানে খুশি সেখানে।

চী‌নের সাত থে‌কে আট‌টি প্র‌দেশ ঘু‌রে এমন কোনো জায়গা দেখা যায়‌নি যেখা‌নে বাইসাই‌কেল নেই। সরু রাস্তায় ভালোভাবে চলার সহজ সমাধান হি‌সে‌বে এসব সাই‌কেল দারুণ জন‌প্রিয়তা পে‌য়ে‌ছে চীনজুড়ে।

 

সাই‌কেলগুলো কারও ব্যক্তিগত নয়। ত‌বে সবাই নি‌জের মোবাইলে অ্যাপ ব্যবহার ক‌রে সাই‌কে‌লের লক খু‌লে নি‌তে পা‌রে। চালা‌তে চাই‌লে কোম্পা‌নিগু‌লোর অ্যাপ খু‌লে রাখ‌তে হয়।  

বাংলা‌দে‌শে মোটরসাই‌কেল ও ট্যা‌ক্সি রাইড শেয়া‌রিং চালু হলেও বাইসাই‌কেল রাইড শেয়া‌রিং এখনও শুরু হয়‌নি।  

চী‌নে মোবাইক, ওবাইক এবং ও‌ফো’র সাই‌কেল সব‌চে‌য়ে বে‌শি। আরও দু’এক‌টি রয়ে‌ছে।  
ত‌বে টেনসেন্ট ভিত্তিক কোম্পানি মোবাইক এবং ওভো - আলিবাবা ও শাওমি'র সহায়তায় চলা প্রতিষ্ঠানগুলো বাজারে ভালো চলছে।

চীন ছা‌ড়ি‌য়ে জার্মানির বার্লিনের রাস্তায়ও শেয়ারিং সাইকেল নামিয়েছে চীনা কোম্পানি 'মোবাইক'। বার্লিন হচ্ছে বিশ্বের ২০০তম শহর যেখানে এই চীনা কোম্পানি শেয়ারিং সাইকেলের সেবা দিচ্ছে। বর্তমানে ও‌ফো বাইক কোম্পানি বিশ্বের ১২০টি শহরে বাইসাইকেল সেবা দিচ্ছে।

অ্যাপ‌স খু‌লে বার কোড স্ক্যান ক‌রে প্রথ‌মে এক বা দুই ইয়েনে (১ ইয়েন=১৩ টাকা) সাইকেলগুলো যে কেউ ব্যবহার করতে পারেন। স্মার্টফোন অ্যা‌পে আশপা‌শে সাই‌কেল কোথায় আ‌ছে তা দেখা যায়। সাই‌কে‌লের সংখ্যা এতো বে‌শি যে খুঁজতে হয় না। রাস্তায় চো‌খের সাম‌নেই সাইকেল প‌ড়ে থা‌কে। সব সাই‌কে‌লে জি‌পিএস লাগা‌নো।

এটার বড় সু‌বিধা যুক্ত মোবাই‌লে। উইচ্যাট অ্যাকাউন্ট দি‌য়ে সাই‌কে‌লের এক টাকা কে‌টে যায়। সাইকেলটি আনলক করার পর ইচ্ছেমতো চালানো যায়।  

চী‌নে অ‌নে‌কে অফি‌সে যে‌তে-আস‌তে, হঠাৎ কোথাও বের হ‌তে গি‌য়ে এ সাই‌কেল ব্যবহার ক‌রেন। তা‌দের মহাসড়ক ছাড়া সব সড়‌কেই গা‌ড়ির পাশাপা‌শি সাই‌কেলের জন্য আলাদা লেনও রয়েছে।

সিঙ্গাপুর, চীন ছাড়াও তাইওয়ান, কোরিয়া, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড, জার্মানি, অস্ট্রিয়া, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, ইতালি, যুক্তরাজ্য, সুইজারল্যান্ড  ও সুইডেনে ওবাইক বাইক সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে।  

এ‌দি‌কে চীনে একটি বাইক-শেয়ারিং কোম্পানি চালু হওয়ার পাঁচ মাসের মধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে। কারণ এই পাঁচ মাসে কোম্পানিটির ৯০ শতাংশ সাইকেল চুরি হয়ে যায়। প্রতিষ্ঠানটি তাদের সাইকেলগুলোতে কোনো জিপিএস সিস্টেম বা ট্রেকিং সিস্টেম চালু করেনি। আর যে সময় তারা বুঝতে পারলো এই প্রযুক্তি সাইকেলে যুক্ত করা প্রয়োজন, ততক্ষণে প্রতিষ্ঠানে লালবাতি জ্বলে গেছে।

চী‌নের সেন‌জেন শহ‌রে অ‌ফিস শে‌ষে এক‌টি বাইসাই‌কেল আনলক কর‌ছেন রিও লি। জান‌তে চাই‌লে রিও লি ব‌লেন, সাই‌কেল নি‌য়ে কোথায় রাখ‌বো এ চিন্তা নেই। আবার সবখা‌নে পাওয়া যাবে। গ‌লিপথ ধ‌রে সহ‌জে পৌঁ‌ছে যা‌বো। এ কার‌ণে প্রায় প্র‌তিদিন তার মোবাইল থে‌কে সাই‌কেল খু‌লে নি‌য়ে চলা‌ফেরা ক‌রেন।  

বাংলাদেশ সময়: ২০০৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৭, ২০১৮
এসএ/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।