ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

আম হাসি ফুটিয়েছে জনজাতি যুবক রোশনের মুখে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৪ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২৩
আম হাসি ফুটিয়েছে জনজাতি যুবক রোশনের মুখে ছবি: বাংলানিউজ

আগরতলা (ত্রিপুরা): একটি পরিত্যক্ত টিলা জমি বছরের পর বছর ধরে অনাবাদী হিসেবে ফেলে রাখা ছিল। সম্প্রতি এই জমিতে ফল চাষের মধ্য দিয়ে আর্থিকভাবে ভাগ্যের চাকা ঘুরানোর আপ্রাণ চেষ্টা করছেন জনজাতি যুবক রোশন দেববর্মা।

প্রায় তিন বছর আগে তিনি এই জমিতে ফল বাগান করার পরিকল্পনা করেন। পরে পরিকল্পনা অনুযায়ী আম, মাল্টা, মোসাম্বি লেবুর বাগান গড়ে তুলেন। এ বছর তার বাগানের প্রথম ফলন হয়েছে। প্রথমবারের ফলনে তিনি খুশি। তার বাগানে আগামী দিনে বাম্পার ফলন হবে বলে আশাবাদী তিনি।

ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের পশ্চিম জেলার অন্তর্গত এলাকা বেলবাড়ি, এই এলাকার বাসিন্দা রোশন। তিনি মোবাইল ফোনে বাংলানিউজকে জানান, তাদের পারিবারিক ৫০ বিঘা পরিত্যক্ত টিলাজমি রয়েছে। প্রায় তিন বছর আগে তিনি এই জমিতে ফল বাগান করার পরিকল্পনা করে আম, মাল্টা, মোসাম্বি লেবুর বাগান গড়ে তোলেন। এখন নতুন করে ড্রাগন ফল গাছ লাগাচ্ছেন। এই ৫০ বিঘার মধ্যে প্রায় দুই বিঘা জমিতে আম বাগান গড়ে তুলেছেন তিনি। অরুণিকা, দশেরী, ফজলি এবং আম্রপালি এই চার জাতের আম গাছ লাগিয়েছেন।

গতবছর প্রথম আমের মুকুল এসেছিল। কিন্তু গাছের বৃদ্ধির কথা চিন্তা করে তিনি সবকটি মুকুল ভেঙ্গে দিয়েছেন। এ বছরও বেশ কিছু মুকুল ভেঙ্গে দিয়ে ছিলেন। কিছু মুকুল রেখেছিলেন আমের ফলন কেমন হয় তা দেখার জন্য। সব মিলিয়ে প্রায় এক হাজার ৫০০ কেজি আম উৎপাদিত হয়েছে। সব আম গাছ থেকে পেড়ে বিক্রি করে দিয়েছেন। সবচেয়ে ভালো ও বেশি পরিমাণ ফলন হয়েছে অরুণিকা জাতের আমের।

তিনি জানান, বাণিজ্যিকভাবে আম চাষে তিনি একেবারে নতুন। তাই সঠিকভাবে গাছের যত্ন এবং সার ও ওষুধ দিতে পারেননি, এগুলো সঠিক মাত্রায় দিতে পারলে আরও ভালো ফলন হতো।

তবে আগামী দিনে আরও ভালো ফলন হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, আম চাষের বিষয়ে প্রতিনিয়ত অভিজ্ঞতা অর্জন করছেন। তার এই অভিজ্ঞতাগুলো একদিকে যেমন স্থানীয় কৃষি দপ্তরের আধিকারিকদের কাছ থেকে নিচ্ছেন, তেমনি ইউটিউব দেখেও শিখছেন।

আমগুলির বেশিরভাগ তিনি স্থানীয় খুচরা বাজারে বিক্রি করেছেন বলে জানান। সামান্য কিছু আম তার পরিচিত একজন আগরতলা নিয়ে বিক্রি করেছেন। ৫০ রুপি থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০০ রুপি দামে প্রতি কেজি আম বিক্রি করেছেন। অরুণিকা আমের রঙ সবুজের সঙ্গে হাল্কা বেগুনি হওয়ায় দেখতে দারুণ আকর্ষণীয় তাই মানুষ আগ্রহ নিয়ে এই আম নিয়ে গেছেন। এই আমগুলোর দাম তিনি সর্বাধিক পেয়েছেন বলেও জানান।  

ত্রিপুরা রাজ্যের আগরতলার নাগিছড়া এলাকার উদ্যান এবং ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান ডেপুটি ডিরেক্টর ড. রাজীব ঘোষ বলেন, রাজ্যে এখন অরুণিকা আমের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। কারণ, এই আমের ফলন ভালো হয়, দেখতে খুব আকর্ষণীয় এবং খেতেও খুব মিষ্টি। তাই বাজারে নিয়ে গেলে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করে। এই আম আগরতলার খুচরা বাজারে অনায়াসে ১২০ থেকে ১৫০ রুপি পর্যন্ত দামে বিক্রি হয়ে থাকে।

এদিকে রোশনের বাগানে মোসাম্বি লেবু ও মাল্টা গাছেও ধীরে ধীরে ফলন শুরু হয়েছে। তার এই বাগান দেখতে আশপাশের এলাকার থেকেও লোকজন আসছে। অন্যরাও এমন বাগান তৈরির আগ্রহ দেখাচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ ঘণ্টা, জুন ১২, ২০২৩
এসসিএন/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।