ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

ত্রিপুরা থেকে ফের আনারস রফতানির আশা চাষিদের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০১৮
ত্রিপুরা থেকে ফের আনারস রফতানির আশা চাষিদের কুইন আনারস

আগরতলা: ত্রিপুরা রাজ্যের আটটি জেলাতেই আনারসের চাষ হয়। তবে সবচেয়ে বেশি ও ভাল মানের আনারস চাষ হয় ঊনকোটি জেলার দারচই এলাকায়। এখানে আদিবাসীরা আনারস চাষ করেন। আনারস চাষে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে ধলাই জেলা ও তৃতীয় স্থানে রয়েছে সিপাহীজলা জেলার চড়িলাম এলাকা।

ত্রিপুরা রাজ্যে কুইন নামক এক প্রজাতির আনারস চাষ হয়, যা দেশের আর কোনো রাজ্যে পাওয়া যায় না। এ আনারস অন্য সব জাতের তুলনায় অপেক্ষাকৃত ছোট।

৬শ' থেকে ৮শ' গ্রাম ওজনের হয়ে থাকে। মে মাস থেকে জুলাই মাসে সাধারণত এর ফলন হয়। খুব মিষ্টি ও সুস্বাদু হওয়ায় এ আনারসের চাহিদা রয়েছে ভারতজুড়ে।

পাশাপাশি ত্রিপুরা রাজ্যে অন্য প্রজাতির আনারসও প্রচুর পরিমাণে উৎপাদিত হয়। কৃষি দফতরের তথ্য অনুসারে ত্রিপুরা রাজ্যে প্রতি হেক্টরে গড়ে ১৮ দশমিক ৭৩ টন আনারস উৎপাদিত হয়, যা ভারতে উৎপাদনের মাত্রায় সর্বোচ্চ। এতো বেশি পরিমাণ আনারস উৎপাদিত হয় যে- চাষিরা তাদের উৎপাদিত আনারস বাজারে নিয়ে আসার পরে বিক্রি না হলে তা বাজারে ফেলেই চলে যান।

রাজ্যে উৎপাদিত আনারস যাতে দেশ বিদেশে রফতানি করা যায় ও চাষিরা ন্যায্য মূল্য পান এর জন্য ১৯৮৫ সালে সাবেক মুখ্যমন্ত্রী নৃপেন চক্রবর্তী সাবেক ধলাই জেলা ও বর্তমান ঊনকোটি জেলার নালকাটা এলাকায় “নর্থইস্টার্ন রিজিওনাল মার্কেটিং কর্পোরেশন” (নিরামিক) নামে একটি ফল প্রক্রিয়াকরণ কারখানার শিলান্যাশ করেন ও ১৯৮৮ সালে এটি চালু করা হয়। মূলত এখানে আনারস প্রক্রিয়া করা, আনারসের জুস, জ্যাম ও জেলি তৈরি করা হতো। পাশাপাশি অন্যান্য ফলও প্রক্রিয়াকরণ করা হতো। কিন্তু ১৯৯৩ সালের পর থেকে এর উৎপাদন কমতে থাকে এবং একটা সময় এখানে আনারস প্রক্রিয়াকরণ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। গাছে ধরে রয়েছে কুইন আনারস

ফলে আবারো ক্ষতির সম্মুখিন হতে থাকেন আনারস চাষিরা। তাই অনেকে আনারস চাষ বন্ধ করে রাবার বাগান গড়ে তোলেন।

সম্প্রতি ত্রিপুরা রাজ্যে বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব জানিয়েছেন, কুইন অনারসকে আবার দেশ বিদেশে রফতানির উদ্যোগ নেওয়া হবে। এজন্য ভারত বিখ্যাত চিত্রকারকা অমিতাভ বচ্চনকে কুইন আনারসের ব্রান্ড অ্যাম্বাসেডর করার কথা চলছে বলেও জানান তিনি।

নতুন রাজ্য সরকারের এ সিদ্ধান্তে আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন রাজ্যের আনারস চাষি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীরা। রাজ্য সরকারের কথায় তারা খুশি কারণ আনারস রফতানি করা হলে চাষি যেমন ন্যায্য মূল্য পাবেন তেমনি এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত সব ব্যবসায়ীরাও লাভবান হবেন বলে বাংলানিউজকে জানান আগরতলার আনারস বিক্রেতা অমল দেব। এখন সারা বছরই ত্রিপুরা রাজ্যে আনারসের চাষ হয়। তাই সারা বছর আনারস রফতানি করা সম্ভব হবে বলেও জানান তিনি।

রফতানি হলে চাষিরা আরো বেশি করে আনারস চাষ করবেন। তাই তারা চাইছেন দ্রুত রাজ্য সরকার আনারস রফতানির প্রক্রিয়া শুরু করুক।

বাংলাদেশ সময়: ০৯১০ ঘণ্টা, ৯ এপ্রিল, ২০১৮
এসসিএন/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।