ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

পিঠাপুলির উৎসবে মেতেছে বাঙালি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৫, ২০১৯
পিঠাপুলির উৎসবে মেতেছে বাঙালি বাঙালির ঘরে ঘরে চলছে পিঠাপুলি তৈরির ব্যস্ততা। ছবি: বাংলানিউজ

আগরতলা (ত্রিপুরা): শীত এসেছে আর পিঠাপুলি হবে না-তা কী হয়। সেই ঐতিহ্য আর রীতিতে এবারও পিছিয়ে নেই ত্রিপুরার বাঙালিরা। মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) বিশুদ্ধ পঞ্জিকা মতে ৩০ পৌষ ১৪২৫ বাংলা। পৌষের শেষ দিন। 

এই দিনটিকে মকর সংক্রান্তি হিসেবে পালন করা হয়; কোথাও পালিত হয় পৌষ সংক্রান্তি। এদিন বাঙালির ঐতিহ্যগতভাবে পিঠাপুলির উৎসব করেন বাঙালিরা।

 

তাই সোমবার (১৪ জানুয়ারি) ত্রিপুরাজুড়ে বাঙালির ঘরে ঘরে চলছে পিঠাপুলি তৈরির ব্যস্ততা। বাড়িতে বাড়িতে গৃহিণীরা ব্যস্ত নানাপদের  পিঠাপুলি ও পায়েস তৈরিতে।  

বাংলাদেশে একদিন আগে পালিত হলেও ভারতীয় পঞ্জিকা অনুসারে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের ঘরে ঘরে একদিন পরে হয় এই উৎসব।  

তাই রাজ্যের আগরতলাসহ বিভিন্ন এলাকার বাজারে ব্যবসায়ীরা বসেছেন পিঠাপুলি তৈরির নানা সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে। বাতাসা, তিলুয়া, গুড়, নলেনগুড়, ক্ষীর আরও কত কী! পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে কিছু কিছু সামগ্রীর দাম যেমন বেড়েছে অনেকগুলো আবারও কমেছে।  

রাজধানী আগরতলার লেক চৌমুহনী বাজারে এদিন প্রতিকেজি বাতাসা বিক্রি হচ্ছে ১২০ রুপিকে। বড় তিলুয়া (কদমা) বিক্রি হচ্ছে ১৪০ রুপি প্রতিকেজি, ছোট তিলুয়া বিক্রি হচ্ছে ১২০ রুপি প্রতিকেজি, নলেন গুড় বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ১৬০ রুপি প্রতিকেজি।  বাজারে পিঠাপুলি তৈরির নানা সামগ্রীর পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা।  ছবি: বাংলানিউজ তবে এখন মানুষের জীবনে ব্যস্ততা বেড়েছে। এর বাইরে নয় আগরতলাবাসীও। তাই এখন অন্য সব মিষ্টির সঙ্গে বছরের এই সময়টায় বাজারে পাওয়া যায় পিঠাপুলিও। প্রতি পিস পাটিসাপটা, মালপোয়া প্রতি পিস ১০ থেকে ১৫ রুপি করে বিক্রি হচ্ছে।  

সেই সঙ্গে নারিকেন, তিল, চিড়া, খৈয়ের নাড়ু বিক্রি হচ্ছে প্যাকেট হিসেবে। এই পিঠাপুলি যেমন মিষ্টির দোকানে পাওয়া যাচ্ছে। গত দুইবছর থেকে মানুষকে আরও সুবিধা করে দিতে হকারেরা এসব সামগ্রী নিয়ে পাড়ায় পাড়ায় চলে আসছেন। বাড়ির গেটেও এসব সামগ্রী পেয়ে দেদারছে কিনছেন তারা।  

তবে আগরতলা শহর ছাড়িয়ে গ্রামীণ এলাকায় গেলে এখনও দেখতে পাওয়া যায় গ্রাম বাংলার চিরায়ত ছবি। নারীর বাড়ির উঠোনে আলপনা দেন। আবার নতুন ধানের চালের গুড়া তৈরি করেন পিঠাপুলি।  

আগরতলার পার্শবর্তী লঙ্কমুড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গৃহিণীরা মিলে চালের গুড়া তৈরি করছেন। আবার কেউ আলপনা তৈরিতে ব্যস্ত। বাংলানিউজের সঙ্গে গৃহবধূ জয়া দাস বলেন, বাংলার ঘরে ঘরে এই প্রথা চলে আসছে যুগ যুগ ধরে।  

‘আমি শাশুড়ির কাছ থেকে রীতি-নীতি শিখেছি, দেখেছি। আমরাও করছি। পরম্পরায় চলে আসছে এই প্রথা, যা ভবিষ্যতেও ঠিকে থাকবে। ’ 

এই প্রচলিত রীতি-নীতি ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে? এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, এটা ঠিক যে দিন দিন মানুষ ভুলতে বসেছে। আমার অনেক আত্মীয় আগরতলা শহরে থাকেন। তারা এখন আর এসব কিছুই করেন না। গ্রামেও এসব আর কতদিন চলবে তা বলা কঠিন।  

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে হয় তো পৌষ সংক্রান্তিসহ অন্যান্য চিরাচরিত রীতিনীতির উদযাপনে অনেক পরিবর্তন আসবে। তবে বাঙালি যতদিন থাকবে ততদিন তা ঠিকে থাকে তাদের আচারে।  

বাংলাদেশ সময়: ২২৫০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৪, ২০১৮
এসসিএন/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।