ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

ত্রিপুরায় বাঁশের চাল উদ্ভাবন

সুদীপ চন্দ্র নাথ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০২০
ত্রিপুরায় বাঁশের চাল উদ্ভাবন বাঁশের বীজ থেকে চাল তৈরির পদ্ধতি উদ্ভাবিত হলো ত্রিপুরা রাজ্যে।

আগরতলা (ত্রিপুরা): বাঁশের বোতল, বাঁশ কোঁড়লের বিস্কুটের পর এবার বাঁশের বীজ থেকে চাল তৈরির পদ্ধতি উদ্ভাবিত হলো ত্রিপুরা রাজ্যে। ত্রিপুরা ব্যাম্বো মিশনের ফিল্ড অফিসার সমীর জমাতিয়ার হাত ধরে বাঁশের চালের পরিচিত ঘটলো ত্রিপুরা রাজ্যে।

নতুন উদ্ভাবিত এই বাঁশের চালের কথা ইতোমধ্যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর দপ্তর পর্যন্ত পৌঁছেছে দিয়েছেন সমীর জমাতিয়া।

তিনি এই বিষয়ে সবার প্রথম বাংলানিউজের সঙ্গে কথা বলেন সমীর জমাতিয়া।

তিনি জানান, বহু প্রাচীনকাল থেকে ত্রিপুরার বিভিন্ন জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ পাহাড়ের বাঁশ বাগান থেকে বীজ সংগ্রহ করতেন। এগুলো থেকে চাল বের করে নিজেরাই খেতেন। তবে এবার এই চাল বাণিজ্যিকভাবে বাজারে নিয়ে আসার জন্য পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার।

তিনি আরও জানান, আগে জনজাতিরা বাঁশ বীজকে চিরাচরিতভাবে ঢেঁকিতে ভেঙে চাল বের করা হতো। প্রথমবারের মতো মেশিনে এগুলোকে ভাঙানো হয়েছে এবং খুব সুন্দর চাল হয়েছে। বাঁশের মতো বাঁশের চালেও সুগার, কোলেস্টরেল এবং ফ্যাট কম থাকে এবং প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন সমৃদ্ধ।

কি প্রজাতির বাঁশ থেকে চাল পাওয়া যায়? এর উত্তরে সমীর জমাতিয়া জানান, শুধুমাত্র মুলিবাঁশের ফল অপেক্ষাকৃত বড় এবং আপেল আকৃতির হয় তাই এই প্রজাতির বাঁশ ছাড়া বাকি সব প্রজাতির বাঁশ থেকে চাল পাওয়া যায়।

ত্রিপুরা রাজ্যে মোট ২০ প্রজাতির বাঁশ প্রাকৃতিকভাবে জন্মে বলেও জানান তিনি।

প্রাথমিকভাবে প্রতিকেজি বাঁশচালের দাম ছয় হাজার রুপি করে ধার্য করা হয়েছে। এই চাল সম্পূর্ণরূপে অর্গানিক কারণ এগুলো জমিতে কেউ চাষ করেনি জঙ্গলের বাঁশ থেকে সংগ্রহ করা। বাঁশের বোতল, কোঁড়লের বিস্কুটের মতো বাঁশ ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাবে বলেও তার অভিতম।

তবে বাঁশচাল কিছুটা দুর্লভ, কারণ হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় প্রজাতির ঘাস। তাই ঘাসের মতো একবার ফুল ও বীজ ধরার পর পুরো বাঁশ বাগান মারা যায়। আর কোঁড়ল থেকে সৃষ্টি হওয়া বাঁশ বাগানে ফুল ও ফল ধরতে সর্বোচ্চ ৪০ বছর পর্যন্ত সময় লাগে। এসব কারণে বাঁশচাল দুর্লভ একটি সামগ্রী। তবে চাইলে আরও কম সময়ে বাঁশ বনে ফুল ও ফল ধরানো সম্ভব। সেটা হচ্ছে কাটিং পদ্ধতি। একটি ৩৫ বছর বয়স্ক বাঁশ থেকে যদি কাটিং পদ্ধতিতে চারা উৎপাদন করা হয় তবে, ৫ বছরের মাথায় বাঁশের বাগানে ফল ধরানো সম্ভব। বাঁশের চারা লাগানোর পরের বছরই একটি চারা থেকে ৬ থেকে ১০ পর্যন্ত কোঁড়ল বের হয়। একটি কোঁড়ল এক বছরের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ বাঁশে পরিণত হয়। ফলে ৫ বছরেই ফল ধরবে, বাঁশের আরও একটি বৈশিষ্ট হচ্ছে বাগানের সবকটি গাছে এক মৌসুমে ফুল ও ফল ধরে। তাই কাটিং করা বাঁশের চারা থেকে বাণিজ্যিকভাবে অল্প সময়ে বীজ পাওয়া সম্ভব হবে বলেও জানান সমীর জমাতিয়া।

সবমিলিয়ে বাঁশকে কেন্দ্র করে আরও একটি সম্ভাবনাময় বাণিজ্যিক দিকের উন্মোচন হলো বলেও জানান তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১০১৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০২০
এসসিএন/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।