ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আগরতলা

আগরতলায় ৬ জনকে কুপিয়ে হত্যা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২১
আগরতলায় ৬ জনকে কুপিয়ে হত্যা

আগরতলা, (ত্রিপুরা): ত্রিপুরার খোয়াই জেলার উত্তর রামচন্দ্র ঘাট এলাকায় প্রদীপ দেব রায় ওরফে কুট্টি নামে মানসিক ভারসাম্যহীন এক ব্যক্তি শাবল দিয়ে কুপিয়ে ছয়জনকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। নিহতদের মধ্যে কুট্টির দুই শিশু, তার স্ত্রী এবং এক পুলিশ কর্মকর্তা রয়েছে।

বাকি দুইজন অজ্ঞাতপরিচয়। এ ঘটনায় আরও দুইজন আহত হয়েছে।  

শুক্রবার (২৬ নভেম্বর) মধ্যরাতে এ ঘটনা। এর জেরে তীব্র চাঞ্চল্য বিরাজ করছে এলাকায়।

জানা গেছে, বেশ কয়েকদিন ধরে ‘মানসিক অবসাদে’ ভুগছিলেন প্রদীপ দেব রায় ওরফে কুট্টি। তিনি কারো সঙ্গে কথাবার্তা না বলে চুপচাপ বসে থাকতেন। শুক্রবার মধ্যরাতে হঠাৎ উত্তেজিত হয়ে পড়েন তিনি। পরে শাবল হাতে নিয়ে ঘরে মধ্যে থাকা তার দুই সন্তান ও স্ত্রী মীনা পালকে এলোপাথাড়িভাবে কোপায়। এতে ঘটনাস্থলেই তার দুই শিশুর মৃত্যু হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তার স্ত্রীকে প্রথমে খোয়াই জেলা হাসপাতাল এবং পরবর্তী সময়ে আগরতলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পাঠালে শনিবার (২৭ নভেম্বর) সকালে মীনার মৃত্যু হয়। এরপর শাবল হাতে নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকেন এই ঘটনা দেখে প্রদীপের ভাই আটকানোর চেষ্টা করলে তাকেও কোপায়। তার এই তাণ্ডব দেখে প্রতিবেশীরা ঘর থেকে বেরিয়ে তাকে আটকাতেও ভয় পাচ্ছিল। এক সময় প্রদীপ রাস্তা চলে যায়। তখন তিনি পথ চলতি একটি অটোরিকশাকে দাঁড় করিয়ে চালক ও যাত্রীদের ওপর আক্রমণ শুরু করে।  এতে ঘটনাস্থলেই আরেকজনের মৃত্যু হয়। অন্যান্য লোকজন আহতদের উদ্ধার করে খোয়াই থানা নিয়ে যান চিকিৎসার জন্য।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় খোয়াই থানার সেকেন্ড অফিসার সত্যজিৎ মল্লিকসহ বিশাল সংখ্যক পুলিশ। প্রদীপ পুলিশের ওপর আক্রমণ শুরু করে। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় পুলিশ অফিসার সত্যজিৎ মল্লিকের। সেসঙ্গে আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য গুরুতরভাবে জখম হয়েছেন। তারা বর্তমান আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পরবর্তী সময়ে পুলিশ এবং সাধারণ মানুষের চেষ্টায় উন্মত্ত প্রদীপকে আটক করা সম্ভব হয়েছে।

খোয়াই জেলার পুলিশ সুপার কিরণ কুমারও জানিয়েছেন ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে এবং দুইজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।  

এদিকে এলাকাবাসীর জানায়, যদি এ ঘটনা মধ্যরাতের না হয়ে দিনের বেলা হত তবে, আরও বেশি লোকের মৃত্যু হত। এর জেরে রামচন্দ্রঘাট এলাকাজুড়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে।  

মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এ ঘটনা নিয়ে নিজের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি জানান, নিষ্ঠার সঙ্গে নিজের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে উন্মত্ত এক দুর্বৃত্তের হামলায় খোয়াই থানার সেকেন্ড অফিসার সত্যজিৎ মল্লিকের শহীদ হওয়ায় আমি গভীরভাবে মর্মাহত। নিষ্ঠাবান এই পুলিশ অফিসারসহ এ ঘটনায় নিহত প্রত্যেকের আত্মার সদগতি কামনা করছি। পরিবার পরিজনদের প্রতি জানাই আমার গভীর সমবেদনা। ঈশ্বরের কাছে আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২১
এসসিএন/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।