ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

পর্যটন বর্ষের প্রচারণা নেই মাধবকুণ্ডে

মাহবুব আলম, সিনিয়র নিউজরুম এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪০ ঘণ্টা, জুলাই ২০, ২০১৬
পর্যটন বর্ষের প্রচারণা নেই মাধবকুণ্ডে ছবি- জি এম মুজিবুর- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত ঘুরে: বছরব্যাপী দেশি-বিদেশি পর্যটক আকর্ষণে ২০১৬ সালকে ‘পর্যটন বর্ষ’ ঘোষণা করেছে সরকার। তবে এর সমর্থনে দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন স্পট মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতসহ ইকোপার্কে কোনো কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়নি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পর্যটকদের আকর্ষণ করতে এ ঘোষণা কেবল কাগজেই সীমাবদ্ধ। পর্যটন বর্ষ দূরে থাক, মাধবকুণ্ড নিয়ে একটি লিফলেটও নেই কর্তৃপক্ষের কাছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দেশের বৃহত্তম জলপ্রপাত ও ইকোপার্কের জীব-বৈচিত্র্য দেখতে প্রতিদিনই হাজার হাজার দেশি-বিদেশি পর্যটক আসেন মাধবকুণ্ডে। পাশাপাশি ভেষজ বনসহ চা বাগান এবং পরিকুণ্ড নিয়েও আগ্রহের কমতি নেই তাদের মধ্যে। নিজেদের মতো ঝরনার পানিতে ভিজে, ছবি তুলে সময় পার করছেন তারা।

এছাড়াও মন্দির, মাধবছড়ার মৎস্যকন্যা, বকসহ বিভিন্ন ধরনের পাখির ভাস্কর্যও মন কাড়ে। আর অ্যাডভেঞ্চার প্রিয়দের জন্যে ট্রেইলিং ও দুর্গম পরিকুণ্ডে যাত্রা তো আছেই। তবে পাহাড়ের ভেতর হওয়ায় অনেকেই চেনেন না বর্ষায় যৌবনপ্রাপ্ত পরিকুণ্ডকে।
 
টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে সিলেটের পর্যটন স্পটগুলো দেখার মিশনে এসেছেন ৪৫ জনের একটি দল। তাদের মধ্যে মো. রুবেল হোসেন একজন। প্রাণিবিদ্যার এ শিক্ষক বলেন, আগে কখনো এখানে আসা হয়নি। শুধু শুনেছি। এবার সাংসারিক পিছুটান ফেলে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগে বের হয়ে গেলাম।

‘জলপ্রপাতসহ এখানকার বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, জীবজন্তু ছাড়াও নানা ধরনের গাছের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছি,’ বলেন রুবেল। তার মতে, ‘জীব-বৈচিত্র্যের পরিচিতি তুলে ধরার মতো কোনো ডকুমেন্ট নেই। থাকলে চিনতে সুবিধা হতো। ’

‘পর্যটন বর্ষ’ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে রুবেল হোসেনের সঙ্গে আসার সরকারি কলেজের কর্মকর্তা আসাদুল শাহীন বলেন, পত্রিকায় পড়েছি, কিন্তু এখানে এ ক্যাম্পেইনের কিছু দেখিনি।

ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আবদুল ওয়াহাব বলেন, পর্যটনকে ছড়িয়ে দিতে সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে তা খুবই প্রসংশার দাবি রাখে। কিন্তু শুধু ঘোষণার মধ্যে রাখলে ক্যাম্পেইনটি সফল হবে না।

‘যেমন মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের মতো একটি স্পটে কোনো ডকুমেন্টস নেই। বিদেশি অথবা অনেক দেশীয় পর্যটকও জানেন না এখানে কী কী স্পট আছে? তাই বিষয়টি ভেবে দেখা উচিৎ। ’

মাধবকুণ্ড ইকোপার্কে রয়েছে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের রেস্টহাউজ ও রেস্টুরেন্ট। তবে সেখানেও নেই পর্যটন বর্ষের কোনো প্রচারণা। ২০১৬ সালকে পর্যটন বর্ষ ঘোষণা করে এ বছর দেশে ১০ লাখ পর্যটকের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়।
বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ডের (বিটিবি) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আখতারুজ জামান খান কবির এ বিষয়ে বাংলানিউজকে বলেন, ‘বিউটিফুল বাংলাদেশ’ ঘিরেই আমাদের পর্যটন বর্ষের ব্র্যান্ডিং পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে। সেভাবে কাজও চলছে।

যেভাবে যাবেন:
মৌলভীবাজারের বড়লেখা সদর থেকে পূর্ব দিকে জুড়ীমুখী সড়কে মাইল দুয়েক এগোতেই কাঠালতলী বাজার। সেখান থেকে গ্রামের ভেতরে উত্তর দিকের আঁকা-বাকা সড়কটি চলে গেছে মাধবকুণ্ড ইকোপার্কে। এর দূরত্ব ৭ কিলোমিটার।

প্রথমে দুইপাশের উঁচু-নিচু টিলায় সতেজ ও সবুজ চা-বাগান স্বাগত জানায় পর্যটকদের। হাতের বামে দিকে পড়বে বিজিবির সীমান্ত ফাঁড়ি। সামনে এগিয়ে গেলে ইকোপার্ক।

সিলেট বন বিভাগের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত ইকোপার্কের বর্তমান ইজারাদার স্থানীয় ব্যবসায়ী মো. কামাল হোসেন। ৪ বছরের জন্য এটি লিজ নিয়েছেন তিনি।

সিলেট সদর থেকে এ পার্ক ৭২ কিলোমিটার দূরে। মৌলভীবাজার জেলা শহর থেকে ৭০ কিলোমিটার, আর কুলাউড়া রেলওয়ে জংশন থেকে দূরত্ব হবে ৩২ কিলোমিটার।
তাই দেশের যেকোনো জায়গা থেকে সিলেট-মৌলভীবাজার কিংবা ট্রেনে কুলাউড়া থেকে বিভিন্ন ধরনের যানে আসা যায় মাধবকুণ্ডে।

পার্কের জনপ্রতি প্রবেশ মূল্য ১০ টাকা। ভেতরে রয়েছে পর্যটকদের জন্যে রয়েছে চেঞ্জিং রুম। গেটে খাবারসহ বিভিন্ন পণ্যও পাওয়া যায়। মিলবে নানা ধরনের সৌখিন কারুপণ্যও।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৯, ২০১৬
এমএ/এসআর

** ঝরনার পাহাড়ে ফাটল, সতর্ক হোন
**জাফলং পর্যটনে বাধা ‘সড়ক’
**অযত্নে-অবহেলায় আদিত্যপুর গণকবর

**যাত্রীর ইয়ার্ডে পাবলিকের কার পার্কিং
** ফাংশন নেই শায়েস্তাগঞ্জ জংশনে
** সন্ধ্যে হতেই দোকান উঠে যায় বানিয়াচং বাজারে
** দু’টি পাতার একটি কুড়ির নিচেই অন্ধকার
** পর্যটনে আকর্ষণ তারাও
** স্বচ্ছ লেকে লাল শাপলার নিমন্ত্রণ
** ‘মৌলভীবাজার রুটের অধিকাংশ যাত্রীই পর্যটক’

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ