ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে

চা শ্রমিকদের স্যানিটেশন সুবিধা নিশ্চিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ জেরিন

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৬
চা শ্রমিকদের স্যানিটেশন সুবিধা নিশ্চিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ জেরিন ছবি-শুভ্রনীল সাগর- বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

শ্রীমঙ্গলের জেরিন চা বাগান ঘুরে: শ্রমিকদের নানা রকম সুবিধা প্রদানের দিক দিয়ে অনন্য হয়ে উঠছে জেরিন চা বাগান। এখানে কর্মরত প্রত্যেক শ্রমিকের জন্য স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে।

এ বাগানে কর্মরত শ্রমিকের বিশুদ্ধ পানীয় জল ও স্বাস্থ্যসম্মত স্যানিটেশন সুবিধা নিশ্চিতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ জেরিন কর্তৃপক্ষ।
 
এমনকি বাগানের ভেতর অবস্থিত শ্রমিকদের বাড়িতেও স্যানিটেশন সুবিধা রয়েছে। জেরিন চা বাগান ঘুরে শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে এসব সুবিধার কথা জানা যায়।

 
আধাপাকা টিনশেড বাড়িতে রয়েছে পাকা বাথরুম। পানির জন্য গভীর নলকূপের পাশাপাশি সার্ভিস লাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহের ব্যবস্থা। জেরিন চা বাগান কর্তৃপক্ষ পাইপ লাইনের মাধ্যমে প্রত্যেক শ্রমিকের বাড়িতে পানি পৌঁছানোর ব্যবস্থাও করেছে।
 
টিলার উপরে পাইপ লাইনের মাধ্যমে মোটর দিয়ে তোলা হচ্ছে পানি। পরে তা শ্রকিতদের জন্য সরবরাহ করা হচ্ছে। টিলায় উঠার জন্য পাকা সিঁড়ি তৈরি করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

এছাড়া বাগানে কর্মরত শ্রমিকদের পিপাসা নিবারণে বিভিন্ন জায়গায় ওয়াটার ভাউচারের (পানির ভাসমান ট্যাঙ্ক) মাধ্যমে বিশুদ্ধ খাবার পানি সরবরাহ করা হয়। এরকম ৮টি ওয়াটার ভাউচার রয়েছে বাগানে।
 
জেরিন চা বাগানে স্থায়ী কার্ডধারী সাড়ে ৭৫০টি পরিবারেই রয়েছে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা। এখনো যেসব পরিবারের ঘর কাঁচা রয়েছে, তাদের ঘর পাকাকরণের কাজ করছে বাগান কর্তৃপক্ষ।

 
জেরিন চা বাগানের সহকারী ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ আলী বাংলানিউজকে জানান, আমরা বাগানে শতভাগ স্যানিটেশন ব্যবস্থা করে দিয়েছি। শ্রমিকদের নিরাপদ খাবার পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
 
বাগানের চা শ্রমিক রাম কিষাণের (৫৫) বাড়িতে গিয়ে দেখা যায় তার আধাপাকা টিডশেড ঘর, রয়েছে স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা। বাড়িটি বেশ পরিপাটি ও পরিচ্ছন্ন। দেখে মনেই হবে না এটা কোনো চা শ্রমিকের বাড়ি। মনে হবে মধ্যবিত্ত কোনো পরিবারের বাড়ি।
 
শ্রীমঙ্গল শহর থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরেই গ্রান্ড সুলতানের বিপরীত পাশ দিয়ে কিছুদূর গিয়ে যাওয়ার পরই জেরিন চা বাগান। ইস্পাহানি মির্জাপুরের একটা অংশ জেরিন চা।
 
জেরিন চা বাগানে তালিকাভুক্ত মোট ১ এক হাজার ১৫০ জন শ্রমিক কাজ করেন। এদের মধ্যে স্থায়ী কার্ডধারী শ্রমিক রয়েছেন ৭৫০ জন। জেরিন শ্রমিকদের ৩ ভাগে  ভাগ করা হয়েছে। এদের মধ্যে প্রথম ভাগে রয়েছে ঠিকা দফা (যারা ছুটা কাজ করেন), এরপর বস্তি দফা (যারা একটু নিয়মিত), এরপরেই রয়েছে বাগান দফা (যারা বাগানে  স্থায়ী ও নিয়মিত) কাজ  করেন।
 
শ্রীমঙ্গলে জেরিনের ৩৮৫ হেক্টর জমিতে চা বাগান রয়েছে। এরমধ্যে ২৬৫ হেক্টরে চা উৎপাদন হয়। ভালো মানের চা উৎপাদনের পাশাপাশি শ্রমিকের নিরাপত্তার বিষয়টি জেরিন কর্তৃপক্ষের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।


 
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৬ ঘণ্টা, জুলাই ২২, ২০১৬
এসএম/এসআর

আরও পড়ুন...

** জেরিনের মায়ায় বাধা ১১শ’ চা শ্রমিকের জীবন

** ‘বাংলার আমাজন’ রাতারগুল
** মেঘ-পাহাড়-ঝরনা-নদীর মুগ্ধতা পানতুমাইয়ে​
** বিছানাকা‌ন্দির জলের ওপর ‘জলপরী’
** ডু‌বে ডুবে ঘাসও খায় তারা
** ছয় মাস কৃষক, ছয় মাস বেকার
** বর্ষায় মাঝি, শুকনায় রাজমিস্ত্রি
** পানি নয়, সাতছড়ির ছড়ায় এখন শুধুই বালু
** প্রকৃতিপ্রেমিদের জন্য অনন্য সাতছড়ি জাতীয় উদ্যান
** ভাড়াউড়া লেকের সৌন্দর্যে কালো মেঘ যোগাযোগ ব্যবস্থা
** লাউয়াছড়ায় ১৫ হেক্টরের মধ্যেই দর্শনার্থী সীমাবদ্ধ
** লাউয়াছড়ায় অর্থকরী ফসলের আত্মকথা
** নিভৃতে কাজ করে যাচ্ছেন মিহির কুমার দো

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বছরজুড়ে দেশ ঘুরে এর সর্বশেষ