দীর্ঘদিন ক্ষমতার বাইরে থাকা এবং হামলা-মামলায় জড়িয়ে অনেক নেতাকর্মীই নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছেন। এ আসনের অনেক বিএনপি নেতাকর্মীই কয়েক বছরে অন্যদলে যোগ দিয়েছেন।
নাগেশ্বরী উপজেলার ব্যাপারীহাট এলাকায় প্রায় ৮০ বিঘা জমির উপর বিএনপি নেতা রানার রয়েছে মৎস্য প্রজেক্ট ও বাগান।
তিনি জানান, পৈত্রিকসূত্রে পাওয়া এ ব্যবসা দেখেন এখন। এখান থেকে যা আয় আসে তা পরিবার এবং দলের পেছনে ব্যয় করেন।
তার দাবি, কুড়িগ্রাম-১ আসনে তিনি ছাড়া বিএনপির যোগ্য কোনো প্রার্থী নেই। তার বিকল্পও তৈরি হয়নি।
১/১১ পরবর্তী সময়ে নানা মামলা-হামলা পেরিয়ে এখনো নিজেকে কোনোভাবে টিকিয়ে রেখেছেন। দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন।
ভোটের মাঠে এবার বিএনপির প্রভাব কেমন থাকবে তা জানতে কথা হয় নাগেশ্বরী বাজারের সাধারণ মানুষজনের সঙ্গে। তাদের মতে, বিএনপির যেসব কমিটি করা হয়েছে সেখানে দলের অনেক ত্যাগী নেতাকর্মীকে মূল্যায়ন করা হয়নি। এ নিয়ে তাদের মধ্যে কিছুটা ক্ষোভ রয়েছে। এসব সমস্যা সমাধান করে যদি নেতাকর্মীরা সাধারণ মানুষের আরও কাছে যেতে পারে তাহলে আগামী নির্বাচনে এর প্রভাব পড়বে।
এ আসনের মহাজোট হওয়া না হওয়া নিয়ে অনেক রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ রয়েছে। যেমন বর্তমান ক্ষমতাসীনরা যদি জোটবদ্ধভাবে নির্বাচন করে এবং মনোনয়ন যদি জাতীয় পার্টির প্রার্থী পায় তাহলে মহাজোটের দিকেই পাল্লা ভারী থাকবে। কারণ হিসেবে দেখা যাচ্ছে, এককালের তুমুল জনপ্রিয় লাঙ্গল এবং বর্তমান আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অবস্থা ও ব্যক্তি ইমেজ সব মিলিয়ে এগিয়ে থাকবে মহাজোট।
অন্যদিকে মহাজোট না হলে ভোটের চিত্র পাল্টে যাবে বলেই মনে করেন এখানকার সাধারণ মানুষ। কারণ আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি একক প্রার্থী দিলে ভোট ভাগ হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে লাভবান হবে বিএনপি। কারণ জাতীয় পার্টি গত চারবার এ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েও জনগণের আস্থা ধরে রাখতে পারেনি। তাই অসন্তুষ্ট লাঙ্গল ভক্তদের ভোট যাবে ধানের শীষের বাক্সে।
এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের ‘কোন্দল’ বিএনপির জন্য প্লাস পয়েন্ট হিসেবে কাজ করবে। শোনা যাচ্ছে, মহাজোট বেঁধে নির্বাচন না করলে বেশ কয়েকজন স্বতন্ত্র প্রার্থীও ভোট যুদ্ধে মাঠে নামবে। এক্ষেত্রেও পাল্লা বিএনপির দিকেই ঝুঁকবে।
নির্বাচন বিষয়ে সাবেক এমপি রানা জানালেন, আমাকে কেন্দ্র থেকে অলিখিত ভাবে জানানো হয়েছে, মাঠে কাজ করার জন্য। তাই আমি কাজ করে যাচ্ছি। তবে আমি কুড়িগ্রাম-১ এবং ২ দু’টো আসন থেকেই মনোনয়ন চাইবো। দল যদি যোগ্য মনে করে তাহলে দেবে। আর নাগেশ্বরী-ভূরুঙ্গামারী আসনে আর কোনো যোগ্য প্রার্থী নেই। তাই আমাকেই নির্বাচন করতে হবে। আমি আশাবাদী এবার যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় তাহলে বিএনপি বিপুল ভোটে জয়লাভ করবে।
সাধারণ মানুষ আপনাদের চায় কি না? জবাবে রানা জানান, চাইবে না কেন, তাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। একবার সুযোগ আসুক, প্রমাণ দেখবেন।
আর আমাদের এখনকার সাংগঠনিক কার্যক্রম অন্য সময়ের চেয়ে অনেক ভালো। দলের মধ্যে কোনো কোন্দল নেই।
বাংলাদেশ সময়: ০৬১৮ ঘণ্টা, জুন ১৯, ২০১৭
এসএইচ/জেডএম