লিটন হত্যার পর এ আসনে উপ-নির্বাচনে জাপা প্রার্থীকে হারিয়ে জয়ী হন আওয়ামী লীগের গোলাম মোস্তফা আহমেদ। উপ-নির্বাচনে মনোনয়ন চেয়েছিলেন লিটনের সহধর্মিণী সৈয়দা খুরশিদ জাহান স্মৃতি।
আগামী সংসদ নির্বাচনে গাইবান্ধা-১ আসনের মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে লিটনের বামনডাঙার বাসভবনে কথা হয় বড় বোন আফরোজা বারীর সঙ্গে।
কেন মনোনয়ন চান প্রশ্নে তিনি বলেন, জনগণ চাইলে আমি মনোনয়ন চাইবো। মাঠ ঘুরে দেখেছি তারা তো আমাকে চাইছে। আমার ওপর নির্ভরতা রয়েছে তাদের। জনগণের চাওয়া-পাওয়াই আমার চাওয়া-পাওয়া।
‘আমার বয়স হয়েছে, ব্যবসা-বাণিজ্য আছে। এখানে আমার ছোটভাই লিটন ছিলো বলে আমি নির্বাচন করতে আসিনি। পারিবারিকভাবেই আমরা আওয়ামী লীগের কর্মী। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমার ভাই নির্বাচনে আসে। আমরা তাকে পেছন থেকে সাপোর্ট করেছি। ও মারা যাওয়ায় এলাকার জনগণ ভাবছে আমাদের পরিবার কিংবা আমি এলে ভালো হবে। ’
গতবার লিটনের বউ মনোনয়ন চেয়েছিলেন জানিয়ে আফরোজা বারী বলেন, নেত্রী যাকে দিয়েছেন তিনিই নির্বাচিত হয়েছেন। এখন মোস্তফা ভাই আছেন, তাকে আমরা সাপোর্ট করেছি। এখানে জাতীয় পার্টি শক্তিশালী। তবে আমি যদি দাঁড়াই তাহলে জাতীয় পার্টি বলেন, আওয়ামী লীগ বলেন, সবাই আমাকে পছন্দ করে, তারা সাপোর্ট করবে।
শুধু পার্টি নয়, ব্যক্তি হিসেবেও তার গ্রহণযোগ্যতা আছে বলে জানান আফরোজা। বলেন, ‘আমার কোম্পানিতে এখানকার অনেক লোক কাজ করে। তাদের পরিবার আছে। আমি থাকলে তারা মনে করে একজন অভিভাবক পেলো’।
লিটন সম্পর্কে আফরোজা বারী বলেন, আমার ভাই ছিলো এখানকার যোদ্ধা। অনেক শক্তিশালী। সে পার্টিটাকে এখানে সংগঠিত করেছে। সুন্দরগঞ্জে আগে এমন ছিলো না। কিছু সমস্যা থাকলেও ওর সাহসিকতা, বুদ্ধিমত্তায় আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করেছে। সেই সংগঠনটাকে ধরে রাখার জন্য জনগণ আমাকে অভিভাবক হিসেবে পেতে চাইছে।
সুন্দরগঞ্জ আসনটি যদি জোটকে দেওয়া হয় তাহলে আওয়ামী লীগকেই ভুগতে হবে দাবি করে আফরোজা বলেন, তবে নেত্রী যাকে দেবে তার জন্য কাজ করতে প্রস্তুত আমরা।
তিনি বলেন, লিটনের হত্যায় জড়িত থাকার কারণে জাতীয় পার্টি সবশেষ উপ-নির্বাচন ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তো ভোট পায়নি। সবাই তো বলছে, লাঙলের ফলায় লিটনের রক্ত। ভোট দেবে না।
নিজে প্রার্থী হয়ে নির্বাচিত হলে আফরোজার একমাত্র লক্ষ্য-উদ্দেশ্য হবে এলাকার উন্নতিসাধন। বলেন, ‘যারা আগে নির্বাচিত হয়েছে তাদের কিছু না কিছু পয়সার দরকার ছিলো। আমার সেটার দরকার নেই। যথেষ্ট আছে। আমি চাইবো কেন্দ্র থেকে যেভাবে হোক টাকা বরাদ্দ এনে এলাকায় কাজ করা। ’
এই শিল্পপতি বলেন, আমাদের নেতকর্মীরাও কাজ করছে। তারা অনেকে কোনো সুবিধা ভোগ করেনি। তারা যেন কাজ পায়। এলাকার মানুষের টাকা নেই, অভাব। নেত্রীর কাছ থেকে চেয়ে এনে এলাকার উন্নয়ন করাই লক্ষ্য।
‘তরুণ প্রজন্মকে চাকরির ব্যবস্থা করা, ট্রেনিং দিয়ে বিদেশে পাঠানো, শিল্প প্রতিষ্ঠা করা, নারীদের জন্য কর্মসংস্থান করতে চাই। কাজ পাবে আমার নেতারা। কিন্তু তারা যদি কোনো ধরনের অনিয়ম করে তাহলে কোনো ছাড় পাবে না। জনগণ পাবে নেতাদের মাধ্যমে। এটাই আমার কথা। আমি ইন্ডাস্ট্রি চালাই, হাজার হাজার মানুষ ডিল করি। আমার জন্য এটা সমস্যা নয়। ’
যেহেতু ঢাকায় থাকেন নির্বাচিত হলে এলাকার মানুষ আপনাকে কীভাবে পাবে জানতে চাইলে এই মনোনয়নপ্রত্যাশী বলেন, এলাকায় তো আমার সৈনিকরা রয়েছে। আমার সবসময় থাকা লাগবে কেন। প্রতি সপ্তাহে তো একবার আসবোই। আমি মনোনয়ন চাইলে তো এমডি পদ ছেড়ে দিয়ে আমাকে নির্বাচনে আসতে হবে।
সবশেষে আফরোজা বারী প্রত্যাশা ব্যক্ত করে বলেন, আমি চাই সুন্দরগঞ্জ একটা স্মল সিটি হোক। আইসিটি ট্রেনিং সেন্টার, খেলার মাঠ করতে চাই। এগিয়ে নিতে চাই ডিজিটাল বাংলাদেশকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০১৭
এএ/এইচএ/
আরও পড়ুন
** বিএনপি অফিসও এতো জমজমাট!
** ‘মাঠ যাচাই করে মনোনয়ন দিলে আমিই জিতবো’
** রাজশাহী ৫: অসন্তোষ তৃণমূল বিএনপিতে, চান পা-ফাটা নেতা
** মানুষ এতো অমানবিক কেন!
** পানির তোড়ে ওষুধ বিক্রেতাও খোলা রাস্তায়
**‘আইজ হামাক খাবার নেই, কাঁঠাল সিদ্ধ কইরে খাব’
**রাস্তায় জ্বলছে চুলা, রাস্তায়ই খাওয়া
** গম-ভুট্টা-পাটক্ষেতের উপর দিয়ে চলছে নৌকা!
** পচা ড্রেনে ছিপ ফেলে কেজি কেজি মাছ!
** নির্বাচনী এলাকায় ‘তুলোধুনো’ এমপি দারা!
** তিতুমীরে হিজড়া-ভিক্ষুকের রাজত্ব!
** পেরেছে কলকাতা-রাজশাহী, পারলো না শুধু ঢাকা!
** ‘নির্বাচিত হলে গ্রামেও আনবো ডিজিটাল সুবিধা’
** এমপি হলে পুরো বেতন অসচ্ছল নেতাকর্মীদের দেব
** ভরসন্ধ্যায় নির্বাচনী উত্তাপ রাজশাহী মহানগর আ'লীগ অফিসে
** এই আমাদের বিমানবন্দর রেলস্টেশন!