ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভোটের-কথা

সিলেট-৩ আসনে প্রার্থীজটে আ’লীগ-বিএনপি-জাপা

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৮
সিলেট-৩ আসনে প্রার্থীজটে আ’লীগ-বিএনপি-জাপা ...

সিলেট: দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জের একাংশ নিয়ে গঠিত সিলেট-৩ আসন। আসন্ন একাদশ জাতীয় নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থীদের মধ্যে রয়েছে প্রার্থীজট।

এবার এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী দলের ৬ নেতা। ফলে মনোনয়ন নিয়ে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছেন দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনাভোটে নৌকা নিয়ে বৈতরণী পার হওয়া বর্তমান সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী।

ভোটের আগে দলের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে তাকে।
 
একই অবস্থা বিএনপিতেও মনোনয়ন চেয়েছেন ৫ জন। আর জাতীয় পার্টিতে ৩ প্রার্থী মনোনয়ন পেতে উদগ্রীব।
 
এবার নতুন মুখের মধ্যে আওয়ামী লীগে এক প্রবাসী ও দু’জন সাবেক ছাত্রনেতা। বিএনপিতেও মনোনয়ন দৌড়ে রয়েছেন দুই প্রবাসী ও এক যুবনেতা। তাদের প্রত্যেকেই নির্বাচনী মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। ফলে প্রার্থীদের জট উতরে কে হচ্ছেন নৌকার, ধান ও লাঙ্গলের কাণ্ডারি?
 
নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দৌড়ে রয়েছেন বর্তমান সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরী, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের ত্রাণ বিষয়ক সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব, দক্ষিণ সুরমা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবু জাহিদ, সুপ্রিম কোর্টের সহকারী এটর্নি জেনারেল আব্দুর রকিব মন্টু ও ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শাহ মুজিবুর রহমান জকন।
 
বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশীদের তালিকায় আছেন এই আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা শফি আহমদ চৌধুরী, দলীয় চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম এ হক, কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এ সালাম, কেন্দ্রীয় যুবদলের সাবেক সহ সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক।
 
জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুর রহমান, জেলা সদস্য সচিব উছমান আলী ও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য তোফায়েল আহমদ।  

এছাড়া খেলাফত মজলিসের সিলেট জেলার সহ সাধারণ সম্পাদক দিলওয়ার হোসাইন এবং ইসলামী আন্দেলনের এম এ মতিন বাদশা প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালিয়ে আসছেন। সংবাদ মাধ্যমসহ বিভিন্ন সভা-সমাবেশে নিজেদের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন আগে থেকেই এবং প্রত্যেকেরই মনোভাসনা দল তাদের বিবেচনা করবে!
 
সিলেট-৩ আসনের আওয়ামী লীগের বর্তমান সংসদ সদস্য মাহমুদ উস সামাদ চৌধুরীর প্রত্যাশা সিটিং এমপিরা মনোনয়ন পাবেন। তারপরও উদীয়মান মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাধুবাদ জানিয়ে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, নতুনরা এগিয়ে আসা প্রয়োজন। নয়তো আগামী দিনে রাজনীতির হাল ধরবে কে? তবে নেত্রী যাকে ভালো মনে করেন, তাকেই মনোনয়ন দেবেন।
 
আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ বাংলানিউজকে বলেন, তৃণমূল রাজনীতি, জেল-ঝুলুম, নির্যাতন সহ্য করে আজও জাতীয় রাজনীতিতে আছি। এলাকার জনগণ চাচ্ছেন তাই মনোনয়ন চাইবো। তবে সিদ্ধান্ত নেত্রীর। তিনি যাকে ভালো মনে করেন, তাকেই মনোনয়ন দেবেন।
 
আওয়ামী লীগ নেতা শাহ মুজিবুর রহমান জকন বাংলানিউজকে বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে দলীয় সভানেত্রী তৃণমূলে নতুন নেতৃত্বকে প্রাধান্য দেবেন। ছাত্ররাজনীতি থেকে নেতাকর্মী ও এলাকার সাধারণ মানুষের সঙ্গে সেতুবন্ধন গড়েছেন। ফলে দলের মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারেও আশাবাদি তিনি।
 
বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও এ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শফি আহমদ চৌধুরী বলেন, ১৯৮৬ সাল থেকে নির্বাচন করে আসছি। সংসদ সদস্যও ছিলাম। মানুষ আমার উন্নয়ন কাজ দেখেছে। আর দলও আমাকে সেভাবে মূল্যায়ন করবে আশাবাদি।
 
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এম এ হক বলেন, এই আসনে আমার জন্ম-কর্ম বেড়ে ওঠা। সে সুবাদে মনোনয়ন চাইবো। বাকি সিদ্ধান্ত দলের নীতিনির্ধারকদের।
 
কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার এম এ সালাম বাংলানিউজকে বলেন, আগে নেত্রীর মুক্তি, তারপর নির্বাচন। বিএনপি নির্বাচনে গেলেও অবাদ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য সংলাপের প্রয়োজন। তাছাড়া বিগত ১০ বছরে আওয়ামী লীগ জনস্বার্থ পরিপন্থী যেসব আইন করেছে, এগুলো পরিবর্তনেও সংসদে যোগ্য নেতৃত্ব দরকার। সে বিবেচনায় দল থেকে তাকেই মনোনয়ন দেবে আশাবাদি তিনি।
 
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য আতিকুর রহমান বলেন, একক বা মহাজোটের সঙ্গে জাপা নির্বাচন করলেও পার্টির চেয়ারম্যান আমার নাম প্রস্তাব করেছেন। ফলে তিনি আশাবাদি মনোনয়ন পাবেন।
 
জাপা সিলেট জেলার সদস্য সচিব উছমান আলী বলেন, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও পার্টির চেয়ারম্যান তাকেই মনোনয়ন দেন। অবশ্য জোটের জন্য আসনটি ছেড়ে দেয় জাপা। এরপরও পার্টির নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে এ আসনের ২১টি ইউনিয়নে নিরলসভাবে কাজ চালিয়ে আসছেন। এবারও পার্টির চেয়ারম্যান তাকে মনোনয়ন দেবেন আশাবাদি তিনি।
 
নির্বাচন কমিশনের তথ্য মতে, এ আসনে মোট ২ লাখ ৫৫ হাজার ৩০৯ ভোটারের মধ্যে পুরুষ ১ লাখ ২৮ হাজার ৬১৮ এবং নারী ভোটার ১ লাখ ২৬ হাজার ৬৯১ জন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত মাহমুদ উস সামাদ নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির প্রার্থী শফি আহমদ চৌধুরীকে ৩৬ হাজার ৯১৪ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে প্রথমবার সংসদে পা মাড়ান। ওই নির্বাচনে তিনি পেয়েছিলে ৮৩ হজার ৯৮৪ ভোট। আর শফি চৌধুরী পেয়েছিলেন ৪৭ হাজার ৭০ ভোট।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০৫৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৮
এনইউ/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।