নির্বাচনের সময় যতো ঘনিয়ে অাসছে অাওয়ামী লীগের জনপ্রতিনিধিদের কেউ কেউ এলাকায় অবাঞ্ছিত ঘোষণার মুখে পড়ছেন। তেমনটি ঘটেছে বরগুনা-১ অাসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর ক্ষেত্রেও।
জেলা সদর, আমতলী ও তালতলী উপজেলা নিয়ে গঠিত বরগুনা-১ অাসনটি বরাবরই অাওয়ামী লীগের ‘রিজার্ভ সিট’ হিসেবে ধরা হয়। এখানকার ভোটাররাও মনে করেন বরগুনা মানেই অাওয়ামী লীগ। এখানে অন্য দলের পাত্তা নেই। অাওয়ামী লীগের সেই দুর্গে এবার মহাজট। এখানে ক্ষমতাসীনদের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মুখোমুখি অবস্থানকে বিজয়ে নিশানা করছেন বিএনপি নেতারা।
এ অাসনে এবারও আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন চান বর্তমান এমপি ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু। এছাড়া অাওয়ামী লীগের টিকিট পেতে দৌড়ঝাঁপ করছেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. দেলোয়ার হোসেন, বরগুনা জেলা অাওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. গোলাম সরোয়ার টুকু, ড. মাহমুদুর রহমান নিরু, মো. জাহাঙ্গীর কবির, মশিউর রহমান শিহাব।
দলীয় প্রতিদ্বন্দ্বী পক্ষের একটাই দাবি, অাগামী নির্বাচনে এ আসনে শম্ভুর পরিবর্তন। বর্তমান এমপির বিরুদ্ধে ঘুষ দুর্নীতির অভিযোগও রয়েছে তার বিরোধী পক্ষের। এমনকি তার ছেলেকে ‘মাদক সম্রাট’ হিসেবেও অভিহিত করেন কেউ কেউ।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সারোয়ার টুকু বাংলানিউজকে বলেন, অামাদের যেই প্রার্থী হোক অসুবিধা নেই। তবে ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে কোনোভাবেই মেনে নেবে না এখানকার মানুষ। তাই অামরা চাই পরিবর্তন।
শেষ পর্যন্ত বিষয়টি মীমাংসিত না হলে এই অাসন থেকে অাবারও ভোট করতে পারেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেই সুযোগ এলে স্থানীয় অাওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা খুশি।
অাওয়ামী লীগের অারেক মনোনয়নপ্রত্যাশী জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন বলেন, অামরা অার দুর্নীতিবাজ, ‘মাদক সম্রাট’ শম্ভুকে চাই না। অামরা পরিবর্তন চাই। তাকে বাদ দিয়ে যাকেই দেবে অাওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবে। এখানে বিএনপির কোনো ভোট নেই।
অন্যদিকে বিএনপি নির্বাচনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে এ আসনে প্রার্থী হতে চান জেলা বিএনপি সভাপতি নজরুল ইসলাম মোল্লা, সাবেক সভাপতি মাহবুব অালম ফারুক মোল্লা ও মতিউর রহমান তালুকদার।
অাওয়ামী লীগের অভ্যন্তরণীন ‘বিরোধ’কে তাদের সুযোগ হিসেবে আলোচনার বিষয়ে নজরুল ইসলাম মোল্লা বাংলানিউজকে বলেন, এই অাসন অাওয়ামী লীগের ঘাঁটি- কথাটি ঠিক নয়। অতীতে বিএনপি থেকে নির্বাচন করেনি, যারা করেছেন জোটের প্রার্থী হিসেবে করেছেন। যে কারণে বিএনপি সংগঠিত ছিল না। অামি কাজ করছি, দলকে সংগঠিত করেছি। অার এখানে অাওয়ামী লীগের যে দ্বন্দ্ব সেটা অামার জন্য প্লাস পয়েন্ট। তাই অাগামী নির্বাচনে অামার দল যদি অংশগ্রহণ করে অার অামাকে যদি মনোনয়ন দেওয়া হয়, তাহলে অামি বিজয়ী হবো।
বরগুনা অাল হেলাল রোডে চায়ের দোকানে বসে নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলতেই কায়ুম হাওলাদার নামে এক ভোটার বলেন, এটা অাওয়ামী লীগের ঘাঁটি, এখানে বিএনপি কখনো বিজয়ী হতে পারে না। এখানে নৌকার টিকিট যে পাবে সেই জিতবে। তবে এবার শম্ভু এমপির অবস্থা খারাপ। তিনি এলাকায় ঢুকতে পারেন না।
তার পাশেই বসা অারেক ভোটার শামীম বলেন, বিএনপি হয় না। অাসলে এখানে বিএনপির শক্ত প্রার্থী নাই। তাই প্রতিবারই হারে।
বরগুনা-১ অাসনে মোট ভোটার রয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার জন। এরমধ্যে অামতলী-তালতলী উপজেলায় ২ লাখ ৪০ হাজার, বরগুনা সদরে ১ লাখ ৯৩ হাজার।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৫, ২০১৮
এসএম/এইচএ/