ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

এক ফসলি জমিকে তিন ফসলিতে রূপান্তর

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৬, ২০২২
এক ফসলি জমিকে তিন ফসলিতে রূপান্তর কমলগঞ্জে জমি চাষ করছেন এক কৃষক। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলায় প্রতি বছরই চাষের আওতায় আসছে পতিত জমি। রবিশস্য ও বোরো মৌসুমে আবাদ হচ্ছে এসব জমিতে।

ফসল উৎপাদন বাড়ানোর জন্য কৃষকেরা একই সঙ্গে এক ফসলি জমিকে দ্বি-ফসলি, তিন ফসলি জমিতে রূপান্তর করছেন। এ ছাড়া যেসব জমি বা জলাশয় কখনও চাষ করা হয়নি, এসব জমিতে শুষ্ক মৌসুমে ফসল উৎপাদন করা হচ্ছে।

উপজেলার কৃষকেরা জানান, ফসল উৎপাদন বাড়ানোর জন্য পতিত জমিতে বিভিন্ন সবজি চাষ করছেন। বিশেষ করে রবিশস্য ও বোরো ধান চাষ হচ্ছে। পর্যাপ্ত সেচ ব্যবস্থা ও সরকারি প্রণোদনা প্রদান করলে আরও পতিত জমি চাষের আওতায় আনা সম্ভব। এ ছাড়া এক ফসলি জমিকে তিন ফসলি জমিতে রূপান্তর করে সবজি ও বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করছেন বলে জানান তারা।

উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গত ২০১৭-১৮ মৌসুমে উপজেলায় বোরো ধান চাষ করা হয়েছে ৩ হাজার ৯৪০ হেক্টর, সরিষা ৮৫ হেক্টর, সবজি ১ হাজার ৩২০ হেক্টর ও আলু ৪৯০ হেক্টর। যা ৫ বছরের ব্যবধানে ২০২১-২২ মৌসুমে ৫৭০ হেক্টর বেড়ে বোরোধান ৪ হাজার ৫১০ হেক্টর চাষ করা হয়। একই সঙ্গে সরিষা ৩০ হেক্টর বেড়ে ১১৫ হেক্টর, সবজি ২৬০ হেক্টর বেড়ে ১৫৮০ হেক্টর এবং আলু ৩৫ হেক্টর বেড়ে ৫২৫ হেক্টর জমিতে চাষ করা হচ্ছে। পতিত জমি চাষাবাদের আওতায় আনার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রতি বছর সেচ ব্যবস্থা বাড়ানো হচ্ছে।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, গত কয়েক বছর ধরে কৃষকেরা সবজি ও বোরো ধানের প্রতি ঝুঁকছেন। তারা বিভিন্ন পতিত জমিতে সরিষা, আলু, শাকসবজি চাষ করছেন। এ ছাড়া বোরো ধানের বীজতলার জন্য পতিত জলাশয় প্রস্তুত করছেন। কৃষিতে খরচ বাড়লেও সারা বছর সবজিতে ভাল দাম পাওয়া যায়। এ জন্য পতিত জমিসহ সব জমিতে চাষ বেড়েছে।

কৃষক শামসুল মিয়া বলেন, আমি গত তিন বছর ধরে আমার ১ একর জলাশয়ে বর্ষা মৌসুমে মাছের সাথে ধান আর শুষ্ক মৌসুমে সবজি চাষ করছি। অথচ এ জমি গুলো কয়েক বছর আগেও পতিত ছিল।

কৃষক জহুর মিয়া বলেন, আমি আগে আমার জমিতে শুধু আমন ধান চাষ করতাম। আমন চাষ করে আমার পরিবারের খাদ্যের চাহিদায় ঘাটতি থাকতো। পরে একই জমিতে গত তিন বছর ধরে আউশ, আমন ও বোরো ধান চাষ করছি। এখন পরিবারের খাদ্যের চাহিদা পূরণ করে ধান বিক্রি করি।

কমলগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. জনি খান বলেন, গত কয়েক বছর ধরে এ উপজেলায় অনেক পতিত জমি চাষের আওতায় এসেছে। পর্যাপ্ত সেচ থাকলে আরও পতিত জমি চাষের আওতায় আসবে। কৃষকরা পতিত জমিতে সরিষাসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করছেন। বর্তমান সময়ে কৃষকরা অতি সহজে এক ফসলি জমিতে দ্বি-ফসলি, তিন ফসলি ফসল উৎপাদন করছেন।

কৃষকদের সেচ ও প্রণোদনার ব্যবস্থা করলে আরও পতিত জমি চাষের আওতায় আনা সম্ভব বলে মনে করেন এ কৃষি কর্মকর্তা।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, ৬ ডিসেম্বর, ২০২২
বিবিবি/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।