ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

চাঁদপুরে আলুর বাম্পার ফলনের আশা কৃষকের

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০২৩
চাঁদপুরে আলুর বাম্পার ফলনের আশা কৃষকের

চাঁদপুর: চাঁদপুর জেলার ‘মেঘনা ধনাগোদা’ ও ‘চাঁদপুর সেচ প্রকল্প’র অভ্যন্তরসহ নদী উপকূলীয় এলাকায় আলুর আবাদ বেশি হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এ বছর আলুর বাম্পার ফলন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কৃষি বিভাগ চলতি অর্থবছরে জেলায় ১ লাখ ৬৩ হাজার মেট্টিক টন আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন।  

জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত জেলায় আলুর আবাদ হয়েছে ৮ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে। তবে সর্বশেষ চিত্রাংয়ের কারণে জমিতে পানি জমে থাকায় আলুসহ অন্যান্য সবজি আবাদ কিছুটা বিলম্ব হয়েছে বলে জানান কৃষকরা।  

মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) দুপুরে দিকে সরেজমিন চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের মনোহরখাদী গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, আলুর জমিতে আগাছা পরিষ্কার কৃষকরা। নিচু জমির আলুর চারাগুলো এখনও ছোট। আবার কিছু ভিটা ও উচুঁ জমিতে আগ থেকে লাগানোর কারণে গাছ বড় হয়েছে।  

এছাড়া সদর উপজেলার লক্ষ্মীপুর মডেল, বালিয়া, চান্দ্রা, বাগাদী, মৈশাদী, কল্যানপুর, আশিকাটি, শাহমাহমুদুপুর, রামপুর ইউনিয়নে এ বছর অধিকাংশ কৃষক আলুর আবাদ করেছেন। এসব এলাকার প্রত্যেক মাঠেই আলুর জমিগুলোর পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষকরা। বিশেষ করে শাহমাহমুদপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর, কুমারডুগী ও ঘোষেরহাট এলাকার বড় বড় মাঠে আলুর ব্যাপক আবাদ হয়েছে।  

ওই গ্রামের কৃষক মো. সালাম ও আলমাস রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আলু গাছের চারা ছোট হলেও সমস্যা নেই। অল্প সময়ের মধ্যে বড় হয়ে যাবে। তবে প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগ না হলে আশা করছি এ বছর আলুর বাম্পার ফলন হবে।

একই এলাকার কৃষক জাহাঙ্গীর হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এ বছর ৫০ শতাংশ জমিতে আলুর আবাদ করেছি। এখন পর্যন্ত গাছগুরো ভালো আছে। বাকি আল্লাহর ইচ্ছা।  

তিনি বলেন, এর আগে ২০২১ সালের ডিসেম্বর এবং ২০২২ -এর ফেব্রুয়ারি মাসের দুই দফা বৃষ্টিতে অনেক ক্ষতি হয়েছে। আলুর জমিতে বৃষ্টির পানি জমে থাকায় উঠানোর পর সংরক্ষণ করতে পারিনি। যার কারণে দামও খুব কম পেয়েছিলাম।

চাঁদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জেলা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর চাঁদপুর সদরে আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে- ৩৩ হাজার মেট্টিক টন, মতলব উত্তরে ১৫ হাজার ৬০০ মেট্টিক টন, মতলব দক্ষিণে ৫৫ হাজার ৩০০ মেট্টিক টন, হাজীগঞ্জে ১১ হাজার ২০০ মেট্টিক টন, শাহরাস্তিতে ১৫০০ মেট্টিক টন, কচুয়ায় ৪২ হাজার ২০০ মেট্টিক টন, ফরিদগঞ্জে ২ হাজার ২০০ মেট্টিক টন ও হাইমচর উপজেলায় ২ হাজার মেট্টিক টন।  

জেলার ১২ হিমাগারে ৭০ হাজার মেট্টিক টন আলু সংরক্ষণ করার ধারণ ক্ষমতা রয়েছে। বাকি আলু হিমাগারের বাইরে থাকে। এর মধ্যে কিছু পরিমাণ আলু উৎপাদন মৌসুম জমিতে বিক্রি হয়ে আসছে। বাকি আলু কৃষকরা কৃষি বিভাগের পরামর্শে কৃত্রিমভাবে মাচায় সংরক্ষণ করা হয়।  

উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. মোবারক হোসেন বলেন, আলু উৎপাদনে দেশের মধ্যে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করেছে চাঁদপুর। মুন্সিগঞ্জের পরেই চাঁদপুরের স্থান। চাঁদপুরে বেসরকারিভাবে ১২টি কোল্ডস্টোরেজ রয়েছে। এগুলোর ধারণক্ষমতা মাত্র ৭০ হাজার মেট্টিক টন। কম-বেশি সব উপজেলাই আলুর ফলন ও চাষাবাদ হয়ে থাকে।

চাঁদপুর জেলা কৃষি অফিসের কৃষি প্রকৌশলী মোহাম্মদ ওসমান গণি বাংলানিউজকে বলেন, কৃষি জমিগুলোর অবস্থা প্রতিদিনই পরিবর্তন হয়। প্রতিদিনই আমাদের আঞ্চলিক অফিসে রিপোর্ট করতে হয়। এখন পর্যন্ত জেলায় আলু আবাদে বড় ধরণের ক্ষতির কোনো তথ্য নেই। আমরা নিয়মিত মাঠ পর্যায়ে কাজ করছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৩, ২০২৩
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।