ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

বন্যায় মৌলভীবাজারে কৃষিতে ক্ষতি ২০৫ কোটি টাকা

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪
বন্যায় মৌলভীবাজারে কৃষিতে ক্ষতি ২০৫ কোটি টাকা শ্রীমঙ্গলে নতুন করে ধান রোপণে ব্যস্ত কৃষক। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: সাম্প্রতিক বন্যায় মৌলভীবাজারে আউশ ও আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ভেসে গেছে ধান, বীজতলা।

ধানের পাশাপাশি নষ্ট হয়ে গেছে নানান মৌসুমী ফসল। এ সমস্ত কিছুর পরিমাণ নির্ধারণ করেছে স্থানীয় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

মৌলভীবাজারের ৭ উপজেলায় সাম্প্রতিক বন্যায় কৃষিতে ক্ষয়-ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২০৫ কোটি টাকা।

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) বাংলানিউজকে এ তথ্য জানান কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, মৌলভীবাজারের উপপরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ।

তিনি আরও বলেন, এবারের বন্যায় জেলায় ২৫ হাজার ৩৫৭ হেক্টর আমনক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এছাড়া ৬৭২ হেক্টর আউশ ও ২৬৮ হেক্টর সবজিক্ষেতও নষ্ট হয়েছে। জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত রোপা আমনের আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৮৭ কোটি টাকা। আমনের বীজতলা প্লাবিত হয়েছে ১২৯ হেক্টর। যার আর্থিক ক্ষতি ৩০ কোটি টাকা। এছাড়া ২৬৮ হেক্টর সবজি ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত। আর্থিক হিসাবে ক্ষতির পরিমাণ ১১ কোটি টাকা। ৬৭২ হেক্টর আউশ ধান নষ্ট হয়ে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে প্রায় ৪ কোটি টাকার। সব মিলিয়ে সাম্প্রতিক বন্যায় ২০৫ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।

জেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায়, ভারী বর্ষণে পুরো জেলাতেই কমবেশি বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। বাড়িঘর, ফসলের মাঠ, রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যায়। আড়াই লাখের বেশি মানুষ বন্যাকবলিত হয়েছে। পাকা-আধাপাকা আউশ ধান, রোপা আমন ও আমনের বীজতলা ও মৌসুমি সবজি ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যায়। তলিয়ে যাওয়া আমন ফসলের বেশির ভাগই পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। চলতি মৌসুমে কৃষকের পক্ষে বীজতলা তৈরি অথবা চারা সংগ্রহ করে পুনরায় রোপণ সম্ভব হবে না। আর কয়েকটা দিন সময় পেলে আউশ ধান কেটে ঘরে তুলতে পারতেন কৃষক।

ধানের পাশাপাশি নষ্ট হয়েছে মৌসুমী সবজিও। আউশ আবাদের মৌসুম শেষ হয়েছে আগেই। আমনের চারা রোপণের সময়ও শেষ পর্যায়ে। এমন সময়ে বন্যার ধাক্কায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন কৃষকেরা। পরিস্থিতি বিবেচনায় কিছু কৃষক নতুন করে আমন ধানের বীজতলা তৈরি করছেন। কেউ কেউ আবার হালিচারা সংগ্রহ করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন। তবে অনেকের পক্ষেই চলতি মৌসুমে নতুন করে চাষাবাদ সম্ভব হবে না। সব মিলিয়ে এবার আউশ ও আমন ধানের উৎপাদন কমতে পারে।  

নতুন করে চাষাবাদে উৎপাদন খরচও বাড়বে বলে মনে করেন ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকেরা।

 শ্রীমঙ্গলের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক জসিম মিয়া জানান, বন্যায় ছোট-বড় সব ধরনের ফসলের খেত নষ্ট হয়ে গেছে। আবার নতুন করে রোপণ করছি। অনেকে সবজি চাষ করছিল, তাও নষ্ট হয়ে গেছে। বীজতলা নষ্ট হওয়ায় হালিচারা সংকট দেখা দিয়েছে। হালিচারা পাওয়া গেলে এখনো ধান রোপণ করা সম্ভব।

উপপরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ আরো বলেন, বন্যার ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষি বিভাগ থেকে জেলার ৪ হাজার কৃষকের প্রত্যেককে পাঁচ কেজি করে বিনামূল্যে স্বল্পমেয়াদি ব্রি-৭৫, বিনা-১৭ জাতের বীজধান,  প্রত্যেককে ১০ কেজি ডিএপি ও ১০ কেজি এমওপি সার এবং ১ হাজার টাকা বিতরণ করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৪
বিবিবি/এসএএইচ                                  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।