ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

তেলাপিয়া মাছ নিরাপদ, নেই বিষাক্ত রাসায়নিক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৬
তেলাপিয়া মাছ নিরাপদ, নেই বিষাক্ত রাসায়নিক ছবি- সুমন-বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: বাংলাদেশে উৎপাদিত তেলাপিয়া মাছে কোনো বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য নেই। স্বাস্থ্যের জন্য শতভাগ নিরাপদ, পুষ্টিমানও যথেষ্ট।

বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিএফআরআই) গবেষণায় এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

বুধবার (২৪ আগস্ট) রাজধানীর মৎস্য অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে ‘তেলাপিয়া মাছের উৎপাদন ও জনস্বাস্থ্য’ শীর্ষক সেমিনারে মূল প্রবন্ধে এ তথ্য প্রকাশ করেন বিএফআরআই’র প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. এএইচ এম কোহিনুর।

প্রবন্ধে ড. কোহিনুর বলেন, বিএফআরআই দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে তেলাপিয়া মাছের ৫০টি নমুনা সংগ্রহ করে। গবেষণায় তেলাপিয়ার একটি নমুনাতেও বিষাক্ত রাষায়নিকের উপস্থিতি পাওয়া যায়নি। অথচ সম্প্রতি সময়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে তেলাপিয়া মাছের মান সম্পর্কে নেতিবাচক খবর প্রচার করা হয়েছে। এর ফলে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে দাবি করেছেন দেশের মাঠ পর্যারের চাষিরা।

দেশি উৎপাদিত তেলাপিয়া মাছের গুণগত মান সর্ম্পকে জনসচেনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে আয়োজিত সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিএফআরআই’র মহাপরিচালক ড. ইয়াহিয়া মাহমুদ। প্রধান অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ সচিব মো. মাকসুদুল হাসান খান, মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক সৈয়দ আরিফ আজাদ, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আব্দুল ওহাব।

ফ্রোজেন ফুড অ্যান্ড এক্সপোটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সহ সভাপতি গোলাম মোস্তফা, বাংলাদেশ তেলাপিয়া ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট ড. মোহাম্মদ গোলাম হোসেন, যশোরের মৎস্যচাষি আজিজুর রহমানসহ বিজ্ঞানী, সম্প্রসারণকর্মী, সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার প্রতিনিধি এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, মৎস্য খাতের উদ্যোক্তা ও চাষিরা সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মৎস্য সচিব মো. মাকসুদুল হাসান খান বলেন, ‘আমাদের দেশে উৎপাদিত তেলাপিয়া মাছ সুস্বাদু, নিরাপদ ও স্বাস্থ্যকর। এতে কোনো বিষাক্ত রাষায়নিক পদার্থ নেই। সুতরাং, এটি খেতে কোনো অসুবিধা নেই’।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে তেলাপিয়া চাষে খৈল ও কুড়াজাতীয় স্বল্পমূল্যের খাবার ব্যবহার করা হয়। এসব খাদ্যে বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয় না। ফলে এসব খাবার ব্যবহার করে ফুড চেইনের (খাদ্য শিকল) মাধ্যমে কোনো বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ তেলাপিয়ার দেহে অনুপ্রবেশের কোনো সুযোগ নেই।

চাষাবাদের ক্ষেত্রে দেশে এখন গুড অ্যাকুয়াকালচার প্র্যাকটিস (জিএসপি) অনুসরণ করা হচ্ছে বলেও জানান সচিব। তিনি এজন্য সংবাদ মাধ্যমকে সঠিক তথ্য তুলে ধরে তেলাপিয়া সর্ম্পকে ভোক্তাদের আতঙ্ক দূর করার আহবান জানান।

তেলাপিয়া ফাউন্ডেশনসহ সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশ্য করে মৎস্য অধিদফতরের মহাপরিচালক সৈয়দ আরিফ আজাদ বলেন, ‘দেশের তেলাপিয়া চাষকে নিরুৎসাহিত করতে একটি মহল নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশ করছে। সাধারণ মানুষের কাছে তেলাপিয়া সর্ম্পকে সঠিক তথ্য তুলে ধরতে আপনারা ব্লগ তৈরি করুন’।

তিনি বলেন, ‘জনসচেনতা বৃদ্ধির জন্য অধিদফতর থেকে সরকারি ও বেসরকারি টেলিভিশনে স্ক্রল, বিটিআরসি’র মাধ্যমে মোবাইলে এসএমএস প্রদান এবং দেশজুড়ে ৬৪ জেলায় ভোক্তা ও অংশীজনদের নিয়ে মিডিয়া ডায়ালগের উদ্যোগ নিচ্ছি’।

বক্তারা নেতিবাচক প্রচারণার বিষয়টি কাটিয়ে উঠতে মৎস্য অধিদফতরকে একটি সেল গঠন এবং তেলাপিয়া বিদেশে রফতানির আহবান জানান।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০১৬
এমএফআই/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।