ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

অস্থির বাজারেও অনাদরে কালোজিরা চাল!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০১ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৭
অস্থির বাজারেও অনাদরে কালোজিরা চাল! কালোজিরা চাল। ছবি: অনিক খান

ময়মনসিংহ : স্বাদে-গন্ধে অতুলনীয় কালোজিরা চাল। সুস্বাদু এ চিকন চাল ফুটিয়ে তৈরি হয় পোলাও, বিরিয়ানি, পায়েস, ফিরনি, জর্দাসহ মুখরোচক কতো খাবার। কিন্তু সুগন্ধ ছড়ানো এ চালই কীনা এখন অনাদরে পড়ে রয়েছে বাজারে।

বাজারে সব রকম চালের দামে উচ্চমূল্যের আঁচ লাগলেও উল্টো কেজি প্রতি মানভেদে ১৫ থেকে ২০ টাকা কম দামে বিকোতে হচ্ছে সুগন্ধিতে ভরপুর এ চাল। এতে মাথায় হাত পড়েছে স্থানীয় আড়তদারদের।

তারা বলছেন- সেদ্ধ চালের বদলে কৃষকরা কালোজিরা চাল আবাদে উৎসাহী হয়ে ওঠায় ফলনও হয়েছে বাম্পার। কিন্তু উৎপাদনের তুলনায় বাজারে চাহিদা একেবারেই কম থাকায় দাম পড়ে গেছে এ চালের।

রোজা বা ঈদ ছাড়া কদর না থাকার কারণেই দাম হারিয়েছে এ চিকন চাল।

মঙ্গলবার (২১ মার্চ) সন্ধ্যায় ময়মনসিংহ নগরীর হিজবুল্লাহ সড়কের পাইকারি চালের বাজারের বিভিন্ন আড়ত ঘুরে দেখা গেলো এমন চিত্র।

স্থানীয় আড়তদাররা জানান, মাত্র তিন থেকে চার মাস আগেও এক কেজি কালোজিরা চালের পাইকারী দাম ছিল ৭৫ থেকে ৮০ টাকা। এরপর নতুন কালোজিরা বাজারে আসায় দাম পড়ে যায়। এখন কেজি প্রতি এ চালের দাম সাকুল্যে ৬০ টাকা।

স্থানীয় মেসার্স নির্মল ট্রেডার্সের স্বত্ত্বাধিকারী নির্মল পাল (৫০) বাংলানিউজকে জানান, উৎপাদন খরচ কম হওয়ায় মৌসুমের শুরুতে কৃষকদের মাঝে কালোজিরা চাষের আগ্রহ বেড়ে যায়। ওই সময় ঠিক মূল্যেই মিলারদের কাছে তারা চাল বিক্রি করেন।

আবার মিলাররা লাভবান হলেও ধরা খাচ্ছেন আড়তদাররা এমনটি উল্লেখ করে তিনি জানান, মিলাররা অতিরিক্ত মুনাফা হাতিয়ে নিয়েই আড়তদারদের কাছে এ চাল বিক্রি করেন।

কিন্তু ঈদ বা অন্য কোন উৎসব ছাড়া এ চালের কদর নেয়াহেতই কম। ফলে কেজিপ্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা লোকসান দিয়েই কালোজিরা বিক্রি করতে হচ্ছে।

স্থানীয় আড়তদাররা জানান, পুরাতন কালোজিরা চালের ২৫ কেজি’র বস্তার দাম ছিল ২ হাজার টাকা। এখন নতুন কালোজিরা চালের একই ওজনের বস্তার দাম ১ হাজার ২শ’ ৫০ টাকা। অর্থাৎ, বাজার মূল্যে কালোজিরা আর সেদ্ধ চালের দাম প্রায় একই।

স্থানীয় দাদা এন্টারপ্রাইজের কর্মচারী বকুল চন্দ্র ঘোষ বাংলানিউজকে বলেন, চালের বাজারে অস্থিরতা দেখা দিলেও কালোজিরা চালের দামে উন্নতি নেই। কেনা দামের চেয়ে প্রতি কেজিতে লোকসান দিয়েই এ চাল বিকোতে হচ্ছে।

‘সামাজিক আচার-অনুষ্ঠান ছাড়া কেউ কালোজিরা চাল কিনতে চায় না। বাজারে এ চালের প্রচুর সরবরাহ থাকায় দাম পড়ে গেছে’ যোগ করেন তিনি।

স্থানীয় বেশ কয়েকজন আড়তদার জানান, ময়মনসিংহে সুগন্ধি চালের বড় মোকাম হচ্ছে ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ি রায়েরবাজার। দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকাররা প্রতিদিন ওই মোকাম থেকে সুগন্ধি চাল কিনে নিয়ে যান।

কিন্তু সেখানেও এ চালের দরপতন হয়েছে। কাঙ্খিত দাম না পাওয়ায় সুগন্ধি এ চাল থেকে আড়তদাররাও মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, মার্চ ২২, ২০১৭
এমএএএম/জেডএম

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।