ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

মোড়ে মোড়ে সবজির হাট!

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৫৯ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৭
মোড়ে মোড়ে সবজির হাট! মোড়ে মোড়ে সবজির হাট-ছবি: বাংলানিউজ

মানিকগঞ্জ: সবজি চাষে বিখ্যাত মানিকগঞ্জ। জেলার প্রায় প্রতিটি উপজেলাতেই কম-বেশি আবাদ হয় সবজির। তবে মানিকগঞ্জ সদর, সিংগাইর ও সাটুরিয়া উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে সবজির আবাদ হয় সবচেয়ে বেশি। রাজধানীর সাথে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা থাকায় সবজির বাজারজাতকরণ ব্যবস্থাও বেশ ভাল। একদিকে সবজির বাম্পার ফলন, অপরদিকে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা সবজি চাষে আগ্রহ বাড়াচ্ছে ওই এলাকার চাষিদের।

জেলার সাটুরিয়া উপজেলার নয়টি ইউনিয়নের প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নেই আবাদ হয় সবজির। তবে ধানেকাড়া, ফুকুরহাটি, সাটুরিয়া সদর, বালিয়াটি, তিল্লী ও বরাইদ ইউনিয়নে সবজির আবাদ হয় সবচেয়ে বেশি।

অল্প খরচে সতেজ সবজি ক্রয় করতে এসব এলাকার সবজি ক্ষেত খামারের পাশেই তাই ভিড় জমান ব্যবসায়ীরা। এসব এলাকার মোড়ে মোড়েই গড়ে উঠেছে অস্থায়ী সবজি হাট। মোড়ে মোড়ে সবজির হাট-ছবি: বাংলানিউজপ্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সবজিক্ষেত থেকে একাটানা চলে সবজি সংগ্রহ। এরপর সেই সবজি বহন করে সবজির আড়তে নেওয়ার আর তেমন কোন প্রয়োজন হয় না। সবজি ক্ষেতগুলোর পাশেই সবজি ব্যবসায়ীদের ভিড় জমে যায়। এসব এলাকাতেই দেদারসে চলে সবজির বিকিকিনি। পরে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার পর সেখান থেকেই সবজি পাঠানো হয় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায়।


শুক্রবার ও শনিবার দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত সাটুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় মোড়ে মোড়ে অস্থায়ীভাবে গড়ে ওঠা সবজিহাটের দেখা মেলে। বিকেল হওয়ার আগেই সবজিচাষিরা তাদের ক্ষেতে খামারে আবাদ করা ঢেঁড়স, চাল কুমড়া, জিঙ্গা, কহি, বরবঢি, করলা, পুঁইশাকসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি নিয়ে হাজির হন এসব হাটে। পরে সেখানেই শুরু হয় সবজির বিকিকিনি।

উপজেলার কাজীপাড়া কৈট্টা এলাকার সবজি ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল (৩৫)। প্রায় এক যুগ ধরে সবজি ব্যবসার সাথে যুক্ত তিনি। এক সময়ে গ্রামগঞ্জের বিভিন্ন হাটবাজার থেকে সবজি ক্রয় করতেন। কিন্তু এখন নিজ এলাকায় ব্যাপকভাবে আবাদ হয় সবজি। একারণে বাড়ির পাশের রাস্তায় এখন প্রতিদিনই ছোটখাটো সবজির হাট জমে যায়। সেখানে প্রায় অর্ধশত চাষির কাছ থেকে নিয়মিত সবজি কেনেন তিনি ছাড়াও  আরও ৫/৬ জন ব্যবসায়ী। এভাবেই চলছে তার জমজমাট সবজি ব্যবসা।

কাজীপাড়া কৈট্টা এলাকার ওই সবজিহাট থেকে ১০০ মিটার যেতেই দেখা মেলে সবজি ব্যবসায়ী নবু মিয়ার। নবু মিয়া জানান, এলাকা থেকে সবজি ক্রয় করলে সবজি বেশ সতেজ থাকে। এখানে তুলনামুলকভাবে দামও একটু কম। তাই তিনি এ এলাকা থেকেই প্রায় প্রতিদিনই ১৫ থেকে ২০ মণ ঢেঁড়স, ১০ থেকে ১৫ মণ কহি, এবং প্রায় ৪/৫’শ পিস চালকুমড়া কেনেন। এই সবজি ঢাকার যাত্রাবাড়ী ও কাওরানবাজারে বিক্রি করেন তিনি।
চরধানকোড়া এলাকার সবজি চাষি ফরহাদ হোসেন জানান, নিয়মিতভাবে তিনিসহ এলাকার আরও বেশ কয়েকজন ব্যক্তি সবজির আবাদ করেন। তাদের নিজস্ব ক্ষেতে আবাদ করা সবজি তারা নিজেরাই একত্রিতভাবে একটি ট্রাকযোগে ঢাকার কাওরানবাজার নিয়ে বিক্রি করেন। এতে করে সবজি চাষে তারা একটু বেশি লাভবান বলে মন্তব্য তার।
মহিষালোহা এলাকার সবজিচাষি মিজানুর রহমান জানান, ক্ষেত খামার থেকে সতেজ সবজি বিভিন্ন আড়তে বাজারজাত করাটা বেশ ব্যয়বহুল ও কষ্টসাধ্য। এছাড়া সবজিগুলো বাজারজাত করার সময় দাগ পড়ে নষ্টও হয়ে যায়। এ কারণে নিজ এলাকায় বেপারীদের কাছে তুলনামুলক একটু কম দামে সবজি বিক্রি করাটাই ভাল।
সাটুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মুহাম্মদ এমদাদুল হক বাংলানিউজকে জানান, চলতি মৌসুমে সাটুরিয়া উপজেলায় এক হাজার হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হয়েছে। আবাহওয়া অনুকূল থাকায় সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। আর এতে বেশ লাভবান এ উপজেলার সবজিচাষিরা।

বাংলাদেশ সময়: ১০০০ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৭
কেএসএইচ/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।