ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

কলে ধান মাড়াইয়ে লাভবান নীলফামারীর চাষিরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ৪, ২০১৭
কলে ধান মাড়াইয়ে লাভবান নীলফামারীর চাষিরা বোরো ধান মাড়াই দিচ্ছেন চাষিরা- ছবি: বাংলানিউজ

নীলফামারী: স্থানীয়ভাবে তৈরি মাড়াই কলে ধান মাড়াই করে লাভবান হচ্ছেন নীলফামারী জেলার চাষিরা। এবারের বোরো মৌসুমেও চরম শ্রমিক সঙ্কটের মুখে এ কল ব্যবহার করে শ্রম, সময় ও অর্থনৈতিক সাশ্রয় করতে পেরেছেন তারা।

কৃষকরা জানান, বোরো ক্ষেতে নেকব্লাস্ট রোগ ও কালবৈশাখীর ঝড়ের আশঙ্কায় এবার তাড়াতাড়ি ধান কাটতে হয়েছে তাদের। অথচ পর্যাপ্ত সংখ্যক ধান কাটার শ্রমিক পাচ্ছিলেন না।

পরে আধুনিক এ প্রযুক্তির ব্যবহারে বোরো ধান মাড়াই করে শুকিয়ে নিয়ে গোলায় তুলতে পেরেছেন তারা।
 
এ মাড়াই কল ডিজেল চালিত শ্যালো মেশিন ও বিদ্যুতের মোটরে চালানো যায়। শ্রমিকরা ধান কেটে কৃষকের খুলি বা আঙিনায় রেখে তাদের কাজ শেষ করে চলে যান। এরপর একজন ধানের গোছা মাড়াই কলের ভেতরে ঢুকিয়ে দেন। আর বাড়ির অন্যরা ধানের আঁটি ওই মেশিনম্যানের কাছে এগিয়ে দেন। এভাবে মুহূর্তে ধান মাড়াই হয়ে খড় আলাদা স্থানে গিয়ে পড়ে। এ পদ্ধতিতে ধান মাড়াইয়ে কৃষকদের সময়, শ্রম ও টাকা লাগে কম। ফলে লাভবান হচ্ছেন তারা।

সরেজমিনে ডোমার, ডিমলা, জলঢাকা, কিশোরগঞ্জ, সদর ও সৈয়দপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানার অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীরা স্থানীয় লেদ মেশিনে তৈরি করছেন এসব মাড়াই কল। প্রতিটি বিক্রি হচ্ছে ৫০/৬০ হাজার টাকায়। তবে কিশোরগঞ্জ উপজেলা, বগুড়া ও দিনাজপুর জেলায় তৈরি ধান মাড়াই কলের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এগুলোর দামও একটু বেশি।  

মাড়াই কলের মালিকরা প্রতি বিঘা (৬০ শতাংশ) জমির ধান মাত্র ৬০০ টাকায় মাড়াই করে দেন। ফলে এ অঞ্চলে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মাড়াই কল।


প্রতি বছর ধান কাটার মৌসুমে শ্রমিক সঙ্কট দেখা দেয়। কারণ, এ সময় বেশি লাভের আশায় বাইরের জেলায় চলে যান তারা। কেউ কেউ ইউনিয়ন পরিষদের অধীনে মাটি কাটাসহ বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকেন। এ অবস্থায় কৃষকরা বেকায়দায় পড়ে শ্রমিকদের বেশি টাকা দিয়ে ধান কেটে এনে ওই মেশিনে মাড়াই করে নেন।

ফলে প্রতি মৌসুমে জেলার ৬টি উপজেলা ও আশেপাশের এলাকায় তখন এ মাড়াই কলের ব্যাপক চাহিদা বেড়ে যায়।

 
চাষিরা জানান, এ বছর আরো বেশি সঙ্কট ছিল। কেননা, বোরো ক্ষেতে নেকব্লাস্ট রোগ ও কালবৈশাখীর ঝড়ের আশঙ্কা দেখা দেয়। ফলে তারা তড়িঘড়ি করে ক্ষেতের বোরো ধান কেটে নেন। একসঙ্গে সব জমিতে কাটা-মাড়াই করায় শ্রমিক সঙ্কট আরও তীব্র হয়।

 

যারা শ্রমিক সঙ্কটে পড়েন, তারা নিজেরাই ক্ষেতের ধান কেটে নেন। লাভ-লোকসানের হিসাব না করেই সে ধান মাড়াই করে নেন মেশিনে। ফলে এবারের বোরো ধান কাটার মৌসুমে মাড়াই কলের মালিকদেরও দম ফেলার ফুরসত ছিল না।  


নীলফামারী কৃষি বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মহসিন রেজা রুপম জানান, এ যন্ত্রের সুবিধায় কৃষকরা প্রযুক্তিগত দিক থেকেও এগিয়ে গেছেন। তারা ধান ছাড়াও গমও সহজে কাটাই-মাড়াই করতে পারছেন। কম সময়ে বেশি ফসল মাড়াইয়ে দুর্যোগেও ফসল রক্ষা পায়। মাড়াই কল কৃষি শ্রমিক সঙ্কট দূর করছে।

বাংলাদেশ সময়:০০৩২ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০১৭
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।