ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

লাভের পাঙ্গাসে মরণদশায় চাষিরা !  

বেলাল হোসেন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১৪ ঘণ্টা, অক্টোবর ৫, ২০১৭
লাভের পাঙ্গাসে মরণদশায় চাষিরা !   ছবি: বাংলানউজটোয়েন্টিফোর.কম

বগুড়া: গত ছয় মাস ধরে পাঙ্গাস মাছের দর ওঠার কোন লক্ষণ নেই। ধসের বাজারে চূড়ান্ত লোকসান স্বীকার করে পাঙ্গাস বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন পাঙ্গাস চাষিরা।কারণ তাদের সামনে কোন বিকল্প নেই।

চাষের পুকুরের পাঙ্গাস বিক্রির উপযোগী হয়ে গেছে। সেই মাছ পুকুরে রাখা মানে খাবার খাওয়ানো।

খাবারের বস্তার মুখ খোলা মানেই লোকসানের পাল্লা ভারী করা। আবার খাবার না খাওয়ালে কমে আসবে মাছের ওজন। এতে মাছের দাম আরো কম হবে। লোকসানের মাত্রাও বাড়বে।
 
চাষিরা জানিয়েছেন, কয়েক বছরের মধ্যে পাঙ্গাস মাছের বাজারদরে রেকর্ড ধস নেমে এসেছে। ফলে পাঙ্গাসের খামারিদের মাছ বেচতে হচ্ছে লোকসান দিয়ে।
  
শফিকুল ইসলাম, আব্দুল মজিদ, ফখর উদ্দিন, ফয়সাল পাঠানসহ একাধিক চাষি বাংলানিউজকে জানান, পাঙ্গাসসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের খাবারের দাম বেড়েই চলছে। দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে যেন ফিড কোম্পানিগুলো প্রতিযোগিতায় নেমেছে। গত দুই মাসের ব্যবধানে তিন দফা খাবারের দাম বাড়িয়েছে ফিড কোম্পানিগুলো। কেজিপ্রতি দাম বাড়ানো হয়েছে দুই থেকে তিন টাকা পর্যন্ত। সেই হিসেবে মাছের দাম বাড়েনি। উল্টো পাঙ্গাসের বাজারে ধস নেমে এসেছে।
  
তারা জানান, ভালো মানের খাবার হলে একেকটি মাছ কেজিতে পরিণত হতে প্রায় দেড় কেজির মত খাবার লাগে। এ হিসেবে একেকটি মাছের পেছনে শুধু খাবার বাবদই বর্তমানে ৭০-৭৫ টাকার মত ব্যয় হচ্ছে। এর বাইরে রয়েছে পুকুরের ইজারামূল্য, প্রহরীর বেতন, মাছের দাম, পোনা উৎপাদনসহ অন্যান্য ব্যয়।
 
বর্তমানে পাইকারি হিসেবে আড়তগুলোয় ৩০০-৪০০ গ্রাম ওজনের পাঙ্গাস মাছ ৩৫-৪০ টাকা কেজি, ৫০০-৭০০ গ্রাম ওজনের পাঙ্গাস ৫০-৬০ টাকা কেজি ও ৮০০ গ্রাম থেকে দেড় কেজি ওজনের পাঙ্গাস ৬৫-৭৫ টাকা কেজি দরে বেচাকেনা হচ্ছে।
 
অথচ বিগত সময়ে ৮০০ গ্রাম থেকে দেড় কেজি ওজনের মাছ ৮৫-১১৫ টাকা কেজি পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে।  

এ পরিস্থিতিতে পাঙ্গাসের বাজার দরে দিশেহারা চাষিরা। তবে বাজারে অন্যান্য মাছের দাম মোটামুটি ঠিক রয়েছে বলে জানান তারা।
 
আড়তদার কামরুজ্জামান বাবু বাংলানিউজকে জানান, গেল তিন বছর আগে প্রাকৃতিক দুর্যোগ অর্থাৎ মাত্রাতিরিক্ত শীতের কারণে পাঙ্গাসের বাজারে ধস নেমেছিলো। মাসখানেকের মত সেই বাজার স্থায়ী ছিলো। তারপর বাজার ঠিক হয়ে আসে। এবার এখনো পাঙ্গাসের বাজার ওঠার কোন লক্ষণ নেই বলে জানান তিনি।  
 
বৃহস্পতিবার (০৫ অক্টোবর) জেলা মৎস্য সম্পদ কর্মকর্তা রওশন আরা বেগম বাংলানিউজকে জানান, লো কস্টের মাছ পাঙ্গাস। তুলনামূলক উৎপাদন ব্যয়ও কম হয়। এ কারণে সব সময় পাঙ্গাসের দাম কম থাকে। তবে এবার একটু দাম বেশি কমে গেছে।
 
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ফিল্ডে আছি। কাজে ব্যস্ত আমি। তাই জেলার পুকুরের সংখ্যা এ মুহূর্তে বলতে পারছি না। এই বলে ফোনের সংযোগ কেটে দেন তিনি।
  
বাংলাদেশ সময়: ০১০৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০১৭
এমবিএইচ/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।