ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

হাসি মুখে কৃষক কাটছে সোনালী ফসল 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১৭
হাসি মুখে কৃষক কাটছে সোনালী ফসল  মুখ ভরা হাসি নিয়ে জমির সোনালী ফসল কাটছেন চাষিরা-ছবি-বাংলানিউজ

দিনাজপুর: বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে থাকা সোনালি ফসল কাটতে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষকরা। এবার বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে চাষবাসের। তবে বন্যার কারণে পলি ভেসে উঠায় জমির উর্বরা শক্তি বেড়ে যাওয়ায় চলতি মৌসুমে বাম্পার ফলনও হয়েছে। 

বাম্পার ফলন ও বর্তমানে বাজারে উৎপাদন খরচের চেয়ে দাম দ্বিগুণ থাকায় বন্যার ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। মুখ ভরা হাসি নিয়ে জমির সোনালী ফসল কাটছেন তারা।

 

চলতি মৌসুমে আমন চাষের প্রথম ধাপে দেশের উত্তরাঞ্চলে হানা দেয় ভয়াবহ বন্যা। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় সদ্য রোপন করা আমনের চারা।  

বন্যায় বিশেষ করে দিনাজপুরের কৃষকদের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এমনিতেই গত বোরো মৌসুমে ফলন খারাপ ও ধানের দাম ভালো না পাওয়ায় লোকসান গুনতে হয় কৃষকদের। তার মধ্যে এই বন্যা যেন কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা হয়ে দাঁড়ায়।  

ফসল কাটতে ব্যস্ত চাষিরা-ছবি-বাংলানিউজতবে বন্যার কারণে পলি ভেসে ওঠায় জমির উর্বরা শক্তি বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষকরা বন্যার পর অন্যান্য ফসল চাষ না করে আমন চাষে ঝোকে।  চলতি মৌসুমে জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৩ হাজার ২৩ হেক্টর বেশি জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। এজন্য ১ লাখ ৩৭ হাজার টন ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রাও ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছে কৃষি বিভাগ।

দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এবার দিনাজপুরে ২ লাখ ৫৩ হাজার ৬৮৭ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু আগস্ট মাসের প্রথম দিকের বন্যায় ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয় কৃষকেরা। নষ্ট হয়ে যায় ১ লাখ ২১ হাজার হেক্টর জমির ফসল। বন্যা শেষে নতুন করে ধানের বীজতলা তৈরি করে শুরু হয় ক্ষতিগ্রস্ত জমিতে আমনের চারা রোপণ।  

দিনাজপুর সদর উপজেলার ৬নং আউলিয়াপুর ইউনিয়নের ঘুঘুডাঙ্গা এলাকার কৃষক মো. মোতালেব হোসেন বাংলানিউজকে জানান, পিতার রেখে যাওয়া ৭ বিঘা জমিতে চাষাবাদ করেই চলে তার সংসার। প্রতি বছর ৪ বিঘা জমিতে আমন ও বাকি জমিতে রবি শস্য চাষ করেন তিনি। কিন্তু এবার বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় অন্যান্য জমিতেও আমন চাষ করেন। দীর্ঘ পরিশ্রমের কারণে মাঠে বাম্পার ফলন দেখা দেয়। বর্তমানে ধানের বাজারে দাম খরচের তুলনায় দ্বিগুণ। ধানের দাম এমন থাকলে বন্যার ক্ষতি অনেকটাই পূরণ হবে।  

ফসল কাটতে ব্যস্ত চাষিরা-ছবি-বাংলানিউজতিনি জানান, এবার আমন চাষে তেমন কোন রোগ বালাই দেখা না দেওয়ায় উৎপাদন খরচ কম হয়েছে। এছাড়া জমিতে সারও খুবই কম প্রয়োগ করতে হয়েছে।

দিনাজপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. গোলাম মোস্তফা বাংলানিউজকে বলেন, এবার বন্যার কারণে অন্যান্য জমিতেও আমন চাষ হয়েছে। তাই এবারে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আমনের চাষ হয়েছে। বাম্পার ফলন হওয়ায় এবারে উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে এই কৃষি কর্মকর্তা আশা করছেন। সপ্তাহ খানেকের মধ্যে জমির ধান কাটা শেষ হবে। ইতিপূর্বে আমনের আগাম জাতের ধান চাষ করেও ভালো ফলন হয়েছে।    

বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৭
আরআই


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।