ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

‘মোর সব কিছু শ্যাষ অইয়া গ্যাছে’

শফিকুল ইসলাম খোকন, উপজেলা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২০৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৭
‘মোর সব কিছু শ্যাষ অইয়া গ্যাছে’ বারবার চেষ্টা করেও আলু ক্ষেত থেকে পানি সরাতে পারছেন না চাষিরা। ছবি: বাংলানিউজ

পাথরঘাটা (বরগুনা): ‘বৃষ্টিতে মোর আলু ক্ষেত তলাইয়া সব নষ্ট অইয়া গ্যাছে। মোর সব কিছু শ্যাষ অইয়া গ্যাছে। মাইয়া-পোলা লইয়া এহন কি খামু? ক্যামনে এতো টাহার দেনা শোধ করমু, কইতে পারি না’।

কান্নাজড়িত কন্ঠে কথাগুলো বলছিলেন বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার ‘আলু ভাণ্ডার’ খ্যাত রুপধন গ্রামের কৃষক মো. রিয়াজ মিয়া।

গত পাঁচদিনের বৃষ্টিতে রুপধন ছাড়াও উপজেলার কালমেঘা, জালিয়াঘাটা ও শিংড়াবুনিয়া গ্রামের সদ্য রোপিত সকল আলু ক্ষেত পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে।

সরেজমিনে গ্রামগুলোতে গিয়ে দেখা গেছে, চাষিরা ক্ষেত থেকে ড্রেন কেটে পানি নামিয়ে দিলেও বৃষ্টিতে আবার পরিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে। বারবার চেষ্টা করেও পানি সরাতে পারছেন না তারা। দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষেতে পানি থাকায় সারের সঙ্গে মিশে রাসায়নিক বিক্রিয়ায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে আলুবীজ।

সদ্য রোপিত আলুবীজ হারিয়ে দিশেহারা চাষিরা।  ছবি: বাংলানিউজরুপধন গ্রামের মো. রিয়াজ মিয়া বলেন, ‘বাপ-দাদার আমল  থেকেই আলুর চাষ করি। এ বছরও ৫ একর জমিতে ৪ লাখ টাকা খরচ করে আলুবীজ বুনেছি। সবেমাত্র বীজ থেকে গজ বের হয়েছে। এর মধ্যে বৃষ্টিতে সব তলিয়ে গেছে। ৪ লাখ টাকাই ছিল স্থানীয় এনজিও সংকল্প ট্রাস্ট ও সংগ্রাম থেকে ঋণ নেওয়া। কিভাবে কিস্তি পরিশোধ করবো- সে চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছি’।

আ. জলিল নায়েব জানান, ১ লাখ টাকা খরচ করে বোনা দেড় একর জমির আলুবীজ তলিয়ে যাওয়ায় তিনিও এখন নিঃস্ব।

‘পোলা মাইয়া নিয়া এহন না খাইয়া থাকতে অইবে’ বলে আহাজারি করছিলেন এনায়েত পঞ্চায়েত ও ফিরোজ মিয়াসহ আরও কয়েকজন আলুচাষি।
 
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শিশির কুমার বড়াল বাংলানিউজকে বলেন, এ বছর ৬৫০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। এ পর্যন্ত ২০০ হেক্টর জমিতে বীজ বোনা শেষ হয়েছে। তবে বৃষ্টির কারণে নিচু এলাকার আলু ক্ষেত নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এখনই ক্ষয়-ক্ষতি নিরুপণ করা সম্ভব হচ্ছে না।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১১, ২০১৭
এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।