ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

ভোলায় লক্ষাধিক হেক্টর ফসলের ক্ষেতে পানি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১২৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৯
ভোলায় লক্ষাধিক হেক্টর ফসলের ক্ষেতে পানি বৃষ্টির পানি জমেছে ফসলের ক্ষেতে। ছবি: বাংলানিউজ

ভোলা: ভোলায় দুই দিনের বৃষ্টিতে এক লাখ ২৩ হাজার ৬৪১ হেক্টর ফসলি জমিতে পানি জমেছে। সোম ও মঙ্গলবারের টানা বর্ষণে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।ফলে রবিশস্যের ফলন নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কৃষকরা। 

বিশেষ করে, মাঠের খেসারি ডাল, মসুর, আলু, মুগ ডাল, মরিচ, ও তরমুজের বেশি ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন তারা।  

কৃষকরা জানান, সোমবারে মৌসুমের প্রথম বৃষ্টি রবিশস্যের জন্য কিছুটা উপকারী হলেও দুইদিনের বৃষ্টি তাদের ভাবিয়ে তুলেছে।

ফলনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন চাষিরা।

তবে  কৃষিবিভাগ বলছে, বৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হলে ক্ষতির পরিমাণ বাড়তে পারে। তবে আপাতত কৃষকদের ক্ষেত থেকে দ্রুত পানি সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।  

ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কন্ট্রোল রুম সূত্র জানিয়েছে, জেলায় এ বছর এক লাখ ২৩ হাজার ৬৪১ হেক্টর জমিতে রবিশস্যের আবাদ হয়েছে। যার মধ্যে ১৭ হাজার ৮৫৬ হেক্টর খেসারি, ১৭৬৪ হেক্টর গম, ৫৮ হেক্টর কাউন, ২৫৫৫ হেক্টর ভুট্টা, ৮২১ হেক্টর আখ, ৮১১ হেক্টর মসুর, ৪ হাজার ৫৭১ হেক্টর জমিতে আলু, ৫ হাজার ৫৫ হেক্টর জমিতে মিষ্টি আলু, ৭ হেক্টর জমিতে মটর, ২ হেক্টর জমিতে ছোলা, ২৪ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে মুগ, ৭ হাজার ১৪৫ হেক্টর জমিতে ফেলন, ৭ হাজার ২২৩ হেক্টর জমিতে সরিষা, ৭ হাজার ৪৯৫ হেক্টর জমিতে সয়াবিন, ১৭০ হেক্টর জমিতে তিল, ৯৫ হেক্টর জমিতে তিষি, ১৬ হেক্টর জমিতে সুর্যমুখী, ১৩ হাজার ৮৫৫ হেক্টর জমিতে চিনা বাদাম, ১৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে মরিচ, ৫৫০ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ, ৬৮০ হেক্টর জমিতে রসুন, ৯ হাজার ২১০ হেক্টর জমিতে তরমুজ, ৩২৫ হেক্টর জমিতে ফুট, ৫২১ হেক্টর জমিতে খিরা ও ১ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে শসা আবাদ হয়েছে।  

এছাড়াও ৯৪৫ হেক্টর জমিতে সবজির আবাদ হয়েছে। যার বেশিরভাব রবিশস্য এখন আক্রান্ত হয়েছে।

এদিকে সোম ও মঙ্গলবার জেলায় মুষলধারে বৃষ্টিপাত হয়েছে। দুইদিনে সর্বমোট ৩৯.২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। এর মধ্যে মঙ্গলবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত ১০.২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে।

ভোলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের অবজারভার মো. মনির হোসেন জানান, এ বৃষ্টি আরো দুইদিন থাকতে পারে। মঙ্গলবার সকাল থেকেই জেলা সদরসহ বিভিন্ন উপজেলায় কখনো ভারী আবার কখনো গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে কৃষকের ফসলের ক্ষেতে পানি জমেছে।  

চরফ্যাশন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনোতোষ সিকদার বলেন, বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষেতে পানি জমেছে, তবে এখনো তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।

চরফ্যাশনে ৪৫০ হেক্টর আলু, ৯৪৫ হেক্টর সবজি, ২০ হেক্টর ফুট, ৩৫ হেক্টর খিরা, ১৮৫৫ হেক্টর তরমুজ, ৩২০ হেক্টর সরিষা, ১৫২০ হেক্টর জমির মরিচ ও ৩০২ হেক্টর জমির ফেলন ডাল পানিতে আক্রান্ত হয়েছে।

জানা গেছে, রবি শস্যের ক্ষেতে দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় এসব ফসলের সেচের প্রয়োজনীয়তা ছিল, সোমবার বৃষ্টি হওয়াতে এসব ফসলের সেচ কাজ হয়ে গেছে। কিন্তু মঙ্গলবার একইভাবে বৃষ্টি হওয়াতে দুশ্চিন্তা বেড়ে গেছে কৃষকের। কারণ, দুইদিনের বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতির সম্ভাবনা বেড়ে গেছে।  

এ ব্যাপারে ভোলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ দেবনাথ বলেন, দুই দিনের বৃষ্টিতে এখন পর্যন্ত ফসলের তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি, তবে কৃষকদের ক্ষেতের পানি দ্রুত সরিয়ে ফেলার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তারা কাজ করছেন।
  
তিনি আরো বলেন, এ বৃষ্টি টানা আরো দুই/তিন দিন থাকলে ফসলের ক্ষতি হতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৬, ২০১৯
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।