ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

ধানের লোকসানে দিশেহারা কৃষক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৫০ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৯
ধানের লোকসানে দিশেহারা কৃষক

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: দেশের পূর্বাঞ্চলের ধানের সবচেয়ে বড় মোকাম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে মোকামে প্রতিদিন ৫০ হাজার মণ ধান আমদানি হচ্ছে। তবে ধানের দরপতনের কারণে কৃষকের মধ্যে চলছে হাহাকার।

সর্বস্ব ব্যয় করে ফলানো ধান নিয়ে কৃষককে গুনতে হচ্ছে লোকসান। অনেক কৃষক দাম না পেয়ে ধান বোঝাই নৌকা নিয়ে ৩/৪ দিন ধরে ঘাটেই অপেক্ষা করছেন।

সরকার প্রতি মণ ধানের দাম ১ হাজার ৪০ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও কৃষককে তা বিক্রি করতে হচ্ছে ক্ষেত্র বিশেষে ৫২০ থেকে ৭৫০ টাকা দামে। এরফলে প্রতি মণে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে। প্রতিদিন এ মোকামে ৫০ হাজার মণ ধান কেনা-বেচা হয়। সে হিসাবে প্রতিদিনই দেড় কোটি টাকা লোকসান গুনছে কৃষকেরা।  

হাওর অঞ্চল হিসেবে পরিচিত কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, হবিগঞ্জ, ময়মনসিংহ, সুনামগঞ্জ, নরসিংদী থেকে নদীপথে কৃষকেরা ধান নিয়ে আসছেন। এখান থেকে সরাসরি ধান ক্রয় করে মিল মালিকরা। প্রতিদিন ধানের চাহিদার ওপর নির্ভর করে ধানের বাজার মূল্য। এরফলে ধান চাষ করতে যা খরচ হয়, তা বিক্রি করে তার অর্ধেক খরচও উঠে না।

বিক্রি করতে না পেয়ে ঘাটেই ধানের বস্তা ফেলে রাখেছে কৃষকেরা।  ছবি: বাংলানিউজ

এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জের নিকলী থেকে আসা ক্ষতিগ্রস্ত ধান বেপারী জব্বার মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, ৭৫০ টাকা মণ ধান এনে বিক্রি করছি ৭০০ টাকায়। দেড় হাজার মণ ধানে ১ লাখ টাকার লোকসান গুণতে হবে।  

কৃষক নজরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ক্ষেত্র বিশেষে ৫২০ থেকে ৭৫০ টাকা দামে ধান বিক্রি করছি পাইকারদের কাছে। সরকার প্রতি মণ ধানের দাম নির্ধারণ করেছে ১ হাজার ৪০ টাকা। সে হিসাবে গড়ে প্রায় ৩০০ টাকা করে মণ প্রতি লোকসান হচ্ছে।

কৃষক কাশেম মুন্সি বাংলানিউজকে বলেন, তিন দিন ধরে ধান নিয়ে ঘাটে বসে আছি। দাম না পাওয়ায় বিক্রি করতে পারছি না। নৌকার খরচ দিতে পারছি না তাই মোকামের পাশে ধান রেখে দিয়েছি।

জেলা চাতাল কল মালিক সমিতি সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান সিরাজ বাংলানিউজকে বলেন, এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য বিদেশ থেকে চাল আমদানি বন্ধের পাশাপাশি সরকারের ক্রয়কৃত চালের পরিমাণ দ্বিগুণ করতে হবে। এছাড়া আশুগঞ্জ মোকামে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করার সরকারি ক্রয় কেন্দ্র চালুর দাবিও জানান তিনি।

জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা সুবীর নাথ চৌধুরী বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিটি উপজেলায় খাদ্য গুদাম থাকায় মোকামে ক্রয় কেন্দ্র খোলার উপযোগিতা এখন নেই। কৃষক সরাসরি গুদামে ধান বিক্রি করলে ন্যায্য মূল্য পাবে।

বাংলাদেশ সময়: ০৩৪৯ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৯
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।