ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

আমনের বাম্পার ফলনেও শঙ্কিত কৃষক 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৯
আমনের বাম্পার ফলনেও শঙ্কিত কৃষক 

চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জে চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। ধানের শীষ দেখে বাম্পার ফলন আশা করছেন কৃষকরা। সেই সঙ্গে শঙ্কায়ও রয়েছেন ন্যায্য দাম নিয়ে।

সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের হাড়দিঘী, জুবিডাইং, দক্ষিণ শহর, ঘুঘুডিমা, বাবুডাইং, এলাকার মাঠগুলো (বরেন্দ্রঅঞ্চল) ঘুরে দেখা গেছে মাঠভরা আমন ধান।  

চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা আশা করছেন অনুকূল আবহাওয়া থাকায় ফসলের বাম্পার ফলন হবে।

প্রতি বিঘায় ফলন হতে পারে গড়ে ২০ মণ পর্যন্ত। তবে বাম্পার ফলন আশা করলেও গতবারের বাস্তব অভিজ্ঞতার কারণে এ বছরও ধানের দাম নিয়ে শঙ্কিত রয়েছেন কৃষকরা। তাদের দাবি, ধানের সঠিক দাম পেতে এখন থেকেই সরকারি তৎপরতা শুরু করা হোক।  

এদিকে, কৃষিবিভাগের দাবি, চলতি বছর লক্ষ্যমাত্রা পূরণের পর প্রায় ১৮০০ হেক্টর বেশি জমিতে আমন চাষ হচ্ছে। মাঠ ঘুরেও এমন চিত্রই পাওয়া গেছে।

অসময়ের বন্যায় বেশ কিছু জমির ফসল ডুবে গেলেও সেগুলো নিয়ে চিন্তিত নয় কৃষিবিভাগ। তাদের দাবি, বন্যায় ৫০০ হেক্টর নীচু জমির ধান ডুবে গেলেও বন্যার স্থায়িত্ব কম থাকায় তেমন একটা ক্ষতি হয়নি আমনের।

এ ব্যাপারে কথা হয় দক্ষিণ শহর মাঠের কৃষক সদর উপজেলার বালিয়াডাঙা গ্রামের বিষু মিয়া (৬০), সিরাজুল ইসলাম (৪০), বাবুডাইং মাঠের কৃষক সদরের দূর্গাপুর গ্রামের আব্দুল ওদুদের (৬৫) সঙ্গে। তারা সবাই বর্গা চাষি।  

বাৎসরিক ৪ থেকে ৫ হাজার টাকায় লিজে জমি নিয়ে চাষ করছেন তারা। কীটনাশক, সার, সেচের পানি, শ্রমিকের মজুরি, মজুদ, সংরক্ষণ ও বাজারজাতের ক্রমবর্ধমান খরচের পর ধানের ৫০০ থেকে ৬০০ টাকার চলতি বাজার তাদের মনে ভয় ধরিয়ে দিচ্ছে।  

স্থানীয় বাজারে ভালো মানের ইরি-২৮ চালের বর্তমান খুচরা মূল্য ৩২ থেকে ৩৪ টাকা কেজি। এ অবস্থায় ওঠার অপেক্ষায় থাকা আমন ধানের দাম নিয়ে দুশ্চিন্তায় এসব কৃষক। সুন্দর সোনার ফসলের মাঠের দিকে তাকিয়েও স্বস্তি পাচ্ছেন না তারা। বিশেষ করে গেল মৌসুমে ধানের দাম কম থাকায় দুশ্চিন্তা আরও বেড়েছে তাদের।
আমন ধানের বাম্পার ফলন।  ছবি: বাংলানিউজ
কার্তিকের দ্বিতীয় সপ্তাহে কিছু মাঠে পাওয়া গেল আধাপাকা ধান। তবে শীষ ফুটতে শুরু করেছে আগে বা দেরিতে রোপণ করা সব ধান গাছে। এগুলো সুমন স্বর্ণা, লাল স্বর্ণা, বিরি-৫১ ও ৫৮ জাতের ধান। অগ্রহায়ণ মাসে শুরু হবে ধানা কাটা। ধান কাটার আগে একটি বৃষ্টি কৃষকের জন্য ছিল সোনায় সোহাগা।  

তবে ধান কাটার আগে আরও একবার বৃষ্টি দরকার। এতে সর্বোচ্চ ফলন হবে। তাহলে যাদের সেচের সুবিধা নেই সেসব চাষিদের চিন্তা কিছুটা কমবে। তবে কৃষক ও কৃষি বিভাগ আবহাওয়া দেখে বৃষ্টির ব্যাপারে আশাবাদী।  

এ নিয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মুঞ্জুরুল হোদা বাংলানিউজকে বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমের রাজধানী হলেও এ বছর আমাদের আমন ধানের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তা ছাড়িয়ে গেছে। জেলায় এ বছর আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫১ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে। আর চাষ হয়েছে ৫২ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে।  

ধানের দাম প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, কৃষকরা যদি ধানের ন্যায্যমূল্য পায় তবে ধানের উৎপাদন প্রতিবছর এভাবেই লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।

বাংলাদেশ সময়:  ০৯২৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৯
এফএম/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।