ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ বৃষ্টিপাত চায়ে উপকারী

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৯
‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ বৃষ্টিপাত চায়ে উপকারী

মৌলভীবাজার: এ শীত মৌসুমে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ বৃষ্টি জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এলেও চায়ের জন্য তা মঙ্গলবার্তা। সাধারণত ডিসেম্বরে বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা নয়। চা গাছে অসময়ের এ বৃষ্টিতে রয়েছে উপকারিতা। এ বৃষ্টির পানি প্রায় এক মাস পর্যন্ত ধরে রাখবে মাটি। ফলে নতুন কুঁড়ি দ্রুত ছাড়তে সাহায্য করবে। 
 

শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সারা দেশের মতো চায়ের রাজধানী মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে দিনব্যাপী বৃষ্টিপাত হয়েছে। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টির সঙ্গে নেমে এসেছিল কনকনে ঠাণ্ডা।

এ ঠাণ্ডার প্রভাব শনিবার (২৮ ডিসেম্বর) পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে।
 
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিসের সহকারী মো. জাহেদুল ইসলাম মাসুম বাংলানিউজকে বলেন, শুক্রবার ভোর ৫টা থেকে সারা দিনব্যাপী বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৩ দশমিক ৬ মিলিমিটার। গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টিপাতের সঙ্গে ছিল ঠাণ্ডার দাপট। শুক্রবারে তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
 
তিনি আরও বলেন, শনিবার শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সামনে রয়েছে শৈত্যপ্রবাহের সমূহ সম্ভাবনা।
 
এ ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ বৃষ্টিপাত সম্পর্কে বাংলাদেশিয় চা সংসদের সিনিয়র টি-প্লান্টার ইবাদুল হক বাংলানিউজকে বলেন, খুব ভালো বৃষ্টিপাত হয়েছে। এটা চায়ের জন্য বেশ উপকারী। সাধারণত এ মাসে বৃষ্টিপাত হয় না। চা গাছগুলোর গোড়ার মাটি এ বৃষ্টির পানি প্রায় এক মাস পর্যন্ত ধরে রাখবে। যা নতুন কুঁড়ি ছাড়তে সাহায্য করবে।
 
তিনি আরও বলেন, ৩ দশমিক ৬ মিলিমিটার এ মাসের জন্য এটা অনেক বৃষ্টি। সাধারণত নভেম্বরে বাংলাদেশে বৃষ্টিপাত থেমে যায়। ডিসেম্বরের এ বৃষ্টি পরবর্তী বছরের চায়ের জন্য আগাম সুসংবাদ বয়ে আনবে। অর্থাৎ ফেব্রুয়ারি মাসেই প্রুনিং (ছাটাই) করা চা গাছে নতুন কুঁড়ি আসতে শুরু করবে। আরলি (তাড়াতাড়ি) ক্রপ (উৎপাদন) আসবে।
 
ইবাদুল হক বলেন, এখন এ বৃষ্টির ফলে চা গাছের মাটিতে যে ময়েশ্চার তৈরি হয়েছে তা আশা করি ১৫-২০ জানুয়ারি পর্যন্ত ধরে রাখবে। ফলে ফেব্রুয়ারিতে ভালো ক্রপ চলে আসবে। বৃষ্টির পানিতে নাইট্রোজেন থাকে, যা আমাদের কৃত্রিম ইরিগেশন (চা গাছগুলোতে পাইপের মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে পানি দেওয়া) থেকে অনেক উপকারী।
 
বৃষ্টির উপকারী সম্পর্কে তিনি বলেন, সিড নার্সারি (শিশু চারা) বা ভিপি নার্সারির (অঙ্গজ বংশ বৃদ্ধি) চারার জন্য এ বৃষ্টিপাত বেশি লাভ হবে। এমন বৃষ্টিপাতের ফলেই চায়ের উৎপাদন চলতি বছর চায়ের ইতিহাসে সর্বকালের সেরা রেকর্ড সংখ্যায় পৌঁছে গেছে। এবার ডিসেম্বর পর্যন্ত চায়ের উৎপাদন গিয়ে দাঁড়াবে প্রায় ৯৫ মিলিয়ন কেজির ওপরে। অর্থাৎ ৯ কোটি ৫০ লাখ কেজি ছাড়িয়ে যাবে।
 
তবে চা বাগানের রোপিত রাবারের জন্য তা ক্ষতিকর হবে বলে জানান এ সিনিয়র টি-প্লান্টার।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৯
বিবিবি/আরবি/ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।