ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

সাতক্ষীরায় প্রথমবারের মতো চাষ হচ্ছে স্কোয়াশ 

শেখ তানজির আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২১ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০২০
সাতক্ষীরায় প্রথমবারের মতো চাষ হচ্ছে স্কোয়াশ 

সাতক্ষীরা: দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা সাতক্ষীরার তালা উপজেলার সেনেরগাতিতে প্রথমবারের মতো চাষ হয়েছে বিদেশি সবজি স্কোয়াশ।

স্কোয়াশ কুমড়ার একটি ইউরোপীয় জাত, যা খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু এবং ডায়াবেটিস, ক্যানসার ও হার্টের রোগীদের জন্য খুবই উপকারী। স্কোয়াশ কুমড়ার জাত হলেও এর গাছ সাধারণ কুমড়ার মতো লতানো নয়।

স্কোয়াশের গাছ ছোট, অনেকটা ফুল গাছের মতো। তাই অল্প জায়গায় এটি বাণিজ্যিক ভিত্তিতে যেমন চাষ করা যায়, তেমনি সৌখিন পরিবেশে বাড়ির ছাদে কিংবা ফুলের টবেও চাষ করা যায়।

বর্তমানে দেশের সুপার শপগুলোতে স্কোয়াশ পাওয়া যাচ্ছে, যার স্থানীয় বাজার মূল্যও ভাল।

সেনেরগাতির কৃষক সোহরাব হোসেন চলতি মৌসুমে ১০ শতক জমিতে পরীক্ষামূলকভাবে স্কোয়াশ চাষ করেছেন।

তিনি জানান, স্কোয়াশ তিন থেকে সাড়ে তিন মাস মেয়াদী শীতকালীন সবজি। যা কুমড়ার চেয়ে সুস্বাদু। ফলনও খুব ভাল হয়। স্কোয়াশ আকারে লম্বাটে এবং ওজনে গড়ে দেড় থেকে দুই কেজি হয়।
স্কোয়াশের ক্ষেত।  ছবি: বাংলানিউজতিনি আরও জানান, বেসরকারি সংস্থা উন্নয়ন প্রচেষ্টা থেকে বীজ সংগ্রহ করে তিনি স্কোয়াশ চাষ করেছেন। এই সবজিতে রোগ বালাই তুলনামূলক কম হলেও মাছি এবং পোকার উপদ্রব আছে। তবে তা ফেরোমন ফাঁদ ও হলুদ ফাঁদ ব্যবহার করে সহজেই দমন করা যায়। এছাড়া জৈব সার ব্যবহার করলে স্কোয়াশের ফলন ভাল হয়। চাষাবাদের সময় সেচও দিতে হয় খুব কম।

সোহরাব  হোসেন বলেন, স্কোয়াশ দ্রুত বর্ধনশীল একটি সবজি, যা সপ্তাহে দুই তিন বার বাজারে বিক্রি করা যায়।

বর্তমানে পাইকারি ৩০ টাকা কেজি দরে তিনি স্কোয়াশ বিক্রি করছেন। যদিও এর খুচরা বাজার মূল্য ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি।

স্কোয়াশের পুষ্টিগুণ সম্পর্কে বেসরকারি সংস্থা উন্নয়ন প্রচেষ্টার কৃষিবিদ নয়ন হোসেন বলেন, স্কোয়াশ সাধারণ কুমড়ার মতো সবজি হিসেবে ব্যবহৃত হলেও এর খাদ্য ও পুষ্টিগুণ কুমড়ার চেয়ে অনেক বেশি। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধে ক্ষমতা বাড়ায়। বিশেষ করে ডায়াবেটিস, ক্যানসার ও হার্টের রোগীদের জন্য খুবই উপকারী।  

তিনি আরও বলেন, স্কোয়াশে একই সঙ্গে রয়েছে ভিটামিন এ, সি, ই ও ভিটামিন বি-৬ এবং নায়াসিন, থায়ামিন, প্যানথোটোমিন এসিড ও ফলিড।  

এছাড়াও স্কোয়াশ ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম, খনিজ, ম্যাঙ্গানিজ, কপার, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ক্যারোটিনয়েড এবং অন্যান্য অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টি অক্সিডেন্ট উপাদানে ভরপুর। নিয়মিত স্কোয়াশ খেলে ফ্রি রেডিকেলসের হাত থেকে শরীরকে রক্ষা করা সম্ভব।  
ক্ষেত থেকে স্কোয়াশ তুলছেন চাষি সোহরাব হোসেন।  ছবি: বাংলানিউজস্কোয়াশ শরীরে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও বিটা ক্যারোটিন সরবরাহ করে। যা আমাদের চোখের জন্য খুবই উপকারী। এটি হাড় গঠন, হাড়ের শক্তি ও ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে পারে। এছাড়া হাইপার টেনশনের রোগীদের জন্য স্কোয়াশ খুবই ভালো। কারণ স্কোয়াশ রক্ত চাপকে কমিয়ে দিতে সাহায্য করে।

তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন, বর্তমানে অনেকেই বাড়ির ছাদে, ফুলের টবে সবজি কিংবা ফল গাছ লাগান। সেক্ষেত্রে ছাদ, ফুলের টব বা পতিত জায়গায় স্কোয়াশও লাগাতে পারেন। কারণ উপকারী এই সবজি চাষে  জায়গা খুবই কম লাগে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।