ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

সরবরাহ ঠিক রাখতে মৌলভীবাজারে রেণু পোনা উৎপাদন অব্যাহত

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ৯, ২০২০
সরবরাহ ঠিক রাখতে মৌলভীবাজারে রেণু পোনা উৎপাদন অব্যাহত দানাদার কার্প মাছের রেণু-পোনা। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: পানিতে অনেকগুলো বিন্দু বিন্দু দানার মতো। অনেক বুঁদবুঁদ। দেখে হয়তোবা হঠাৎ মনে হতে পারে শ্যাম্পু বা সাবানযুক্ত পানির ফেনা। কিন্তু আসলে এগুলোই প্রারম্ভিক মাছ। মাছের ক্ষুদ্রতম আকৃতি নিয়ে বের হওয়ার পূর্বমুহূর্ত। আর জন্মের ঠিক ৭২ ঘণ্টা পর এ রেণু-পোনাই চলে যাবে মৎস্যচাষিদের হাতে। তাদের সযত্ন লালন-পালনে গড়ে উঠবে মৎস্যময় বাংলাদেশ।

বুধবার (৮ মার্চ) সঙ্কটকালীন মৎস্য উৎপাদন অব্যাহত রাখতে মৎস্যবীজ উৎপাদন খামার, কার্পজাতীয় মাছের রেণু ও পোনা উৎপাদন কার্যক্রম সফলতার সঙ্গে চালাচ্ছে মৌলভীবাজার মৎস্যবিভাগ।

এ বিষয়ে মৌলভীবাজার সদরের সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সুলতান মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, পুষ্টি চাহিদা ও দারিদ্র্য দূরীকরণে আমাদের দেশে মৎস্যখাতের অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আমাদের মৎস্যচাষিদের কাছে স্বল্পমূল্যে রেণু ও পোনা সরবরাহসহ যে কোনো সহযোগিতায় আমরা সদা তৎপর। সে লক্ষ্যেই আমাদের খামারে মাছে ইনজেকশন দিয়ে রেণু ও পোনা উৎপাদন করি।

তিনি আরো বলেন, তারপর বাজারে যে মূল্যে বিক্রি হয় তারচেয়ে অনেক কম মূল্যে মৎস্যচাষিদের কাছে বিক্রি করি। বিক্রি করা সেই অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা হয়। এভাবেই আমাদের এ কার্যক্রম প্রতিবছরই চলে।

আমাদের জেলা মৎস্য অফিসের অনেকগুলো পুকুর ও হ্যাচারি রয়েছে। এখানেই রেণু-পোনা উৎপাদন কার্যক্রম চলছে। এখানে ‘কার্প’ জাতীয় মাছ অর্থাৎ রুই, কাতলা, মৃগেল, স্বরপুটি, গ্রাসকার্প, সিলভারকার্প এবং বিগহেড উৎপাদন হয় বলে জানান এ সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা।

সরবরাহ ঠিক রাখতে মৌলভীবাজারে রেণু পোনা উৎপাদন অব্যাহত। এখানে রেণুর যে ছবিগুলো দেওয়া হয়েছে তা বুধবার (৮ এপ্রিল) সকালের ছবি। সেগুলো আগামী ২৪ ঘণ্টা বা তারও কম সময়ের মধ্যে ফুটে ছোট ছোট পোনা বের হবে। এই পোনাগুলো পুকুরে ছাড়লে পনেরো দিন বা এক মাস পরে হাফ ইঞ্চি সাইজের হয়ে যাবে। এই পোনাগুলো আগামী শনিবার অর্থাৎ ৭২ ঘণ্টা পর মৎস্যচাষিদের হাতে পৌঁছে যাবে।

রেণু উৎপাদন সম্পর্কে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, ডিম ফুটে যেটা বের হয় সেটাকে রেণু বলে। এক বালতি ডিম থেকে সাধারণত ১ কেজি রেণু উৎপন্ন করা সম্ভব। বুধবার সকালে আমরা ত্রিশ বালতি ডিম পেয়েছি। এ থেকে ৩০ কেজির মতো রেণু উৎপাদন হবে। একেক কেজি রেণুতে আড়াই থেকে তিন লাখ পোনা হয়। মাছের প্রজাতিভিত্তিক একেক কেজির দাম পনেরশ টাকা থেকে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত।

ইনজেকশনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে বলেন, মাছগুলো গতকাল মঙ্গলবার ধরেছি। তাদের শরীরে হরমোন ইনজেকশন দিতে হয়। তারপর পুরুষ মাছ ও নারী মাছ একসঙ্গে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। সাধারণত ওরা পরের দিন ভোরের দিকে ডিম দিয়ে দেয়। তারপর সেগুলো সতর্কতার সঙ্গে হ্যাচারিতে সংরক্ষণ করে রাখা হয়।

এখানে রুই মাছ ছিল ১০টি। এর মধ্যে ৫টি পুরুষ রুই এবং ৫টি স্ত্রী রুই। মৃগেল ছিল ১৪টি। ৭টি পুরুষ মৃগেল এবং ৭টি স্ত্রী মৃগেল। এভাবেই স্বল্পমূল্যে মৎস্যচাষিদের হাতে মাছের প্রজাতিগুলো সরবরাহের জন্য আমাদের কার্যক্রম চলছে বলে জানান মৌলভীবাজারের সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. সুলতান মাহমুদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৯
বিবিবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।