ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

কৃষকের স্বপ্নে চোখ রাঙাচ্ছে কালবৈশাখী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৬, ২০২০
কৃষকের স্বপ্নে চোখ রাঙাচ্ছে কালবৈশাখী

হবিগঞ্জ: আবহাওয়ার পূর্বাবাসে শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হতে পারে জানালেও হবিগঞ্জ জেলায় বুধবার (১৫ এপ্রিল) দুপুর থেকে শুরু হয়েছে ধমকা হাওয়াসহ বৃষ্টিপাত। ফসল পাকার আগেই কালবৈশাখীর এমন চোখ রাঙানিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন জেলার হাওরাঞ্চলের কৃষকরা। 

গত তিন বছর আগাম বন্যায় হাওর তলিয়ে গিয়ে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির পর এবার করোনা ভাইরাস আতঙ্কে শ্রমিক সংকট। তার ওপর আগাম বন্যার আশঙ্কায় দ্রুত ধান কাটতে অনুরোধ জানিয়েছে হবিগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)।

এ যেন ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ অবস্থা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, এবার হবিগঞ্জে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে বোরো আবাদ হয়েছে ১ লাখ ২০ হাজার ৮০০ হেক্টর জমি। এর মধ্যে একেবারে নিচু এলাকায় ৪০ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমি। যেগুলো দ্রুত কাটতে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।

জেলার কৃষকরা বাংলানিউজকে জানান, নিচু জমির কিছু এলাকায় ধান কাটা শুরু হলেও অধিকাংশ জমিতেই সবেমাত্র বেড়িয়েছে ধানের শীষ। যা পাকতে সময় লাগবে কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ দিন। এ অবস্থায় বন্যার আশঙ্কায় দ্রুত ফসল কাটতে বলা হচ্ছে। তাই এনিয়ে কৃষকরা রয়েছেন আতঙ্কে। তার ওপর এখন আবার ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে ব্যাপক ক্ষতি হবে ফসলের।  

আজমিরীগঞ্জের হিলালপুর গ্রামের কৃষক ওয়ারিশ মিয়ার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত টানা তিন বছর আগাম বন্যার কারণে ফসলের মাঠ ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় হতাশা এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেননি কৃষকরা। এরই মধ্যে হবিগঞ্জ পাউবো দিয়েছে আরও এক অশনি সংকেত। এবারও আগাম বন্যার আশঙ্কা জানিয়ে ফসল কেটে ঘরে তোলার অনুরোধ জানিয়েছে সরকারি এই দপ্তর। একদিকে করোনা ভাইরাসের থাবা আর অন্যদিকে পুরোদমে ধানকাটা শুরু হওয়ার আগেই বন্যার আশঙ্কায় কৃষকের মধ্যে দেখা দিয়েছে অজানা আতঙ্ক। এবারও যদি মাঠের ফসল তলিয়ে যায়, তাহলে পরিবার-পরিজন নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে বলে জানান তিনি।

আবহাওয়ার পূর্বাবাসে বলা হয়েছে, আগামী ১৭ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত মেঘালয় এবং ভারত অববাহিকায় ১৫০-২৫০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশের অভ্যন্তরেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বৃষ্টিপাত হতে পারে। যে কারণে তলিয়ে যেতে পারে হাওরের বোরো ফসল।  

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক তমিজ উদ্দিন সরকার বাংলানিউজকে বলেন, কৃষকের স্বপ্নের অবলম্বন মাঠের সবুজ ধান। বছরজুড়ে কষ্টে ফলানো ধানই তাদের এনে দেয় বর্ষাজুড়ে প্রশান্তির জীবন যাপন। কিন্তু বন্যার আশঙ্কায় কৃষকদের দ্রুত ফসল ঘরে তোলার কথা বলা হচ্ছে। তবে নিচু এলাকার জমিগুলোর পাকা ধান কাটতে কমপক্ষে আরও ১৫ দিন সময় লাগবে বলেও যোগ করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৫, ২০২০
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।