ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

আম্পানে পৌনে ২ লাখ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪৩ ঘণ্টা, মে ২১, ২০২০
আম্পানে পৌনে ২ লাখ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি

ঢাকা: দেশে ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তাণ্ডবে এক লাখ ৭৬ হাজার ৭ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক। একইসঙ্গে এসব জমির বিভিন্ন ফসলের পাঁচ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত ক্ষতি হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২১ মে) ঘূর্ণিঝড় আম্পান পরবর্তী কৃষির ক্ষয়ক্ষতি বিষয়ে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য দেন।

কৃষিমন্ত্রী বলেন, গত ১৫ মে আমরা জানতে পারি ঘূর্ণিঝড় আম্পান আসবে।

ফলে আমরা আগে থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পেরেছিলাম। তাই ক্ষতির পরিমাণটা অনেকাংশে কম হয়েছে। এছাড়া অধিকাংশ ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছিল। তবে এরপরও দেশের ৪৬ জেলায় এক লাখ ৭৬ হাজার ৭ হেক্টর জমির ফসল বিভিন্ন হারে ক্ষতি হয়েছে।

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে আম, লিচু ও সবজির বেশি ক্ষতি হয়েছে এবং বোরো ধানের সামান্য ক্ষতি হয়েছে। তবে আগাম তথ্য পাওয়ায় কৃষকরা দ্রুত ফসল ঘরে তুলতে পেরেছেন। তাই আম্পানের কারণে কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়নি। ইতোমধ্যে হাওরের শত ভাগ ধান কাটা হয়েছে। উপকূলীয় অঞ্চলের ১৭টি জেলার শতকরা ৯৬ ভাগসহ সারাদেশে ইতোমধ্যে ৭২ শতাংশ বোরো ধান কাটা হয়েছে। খুলনা অঞ্চলে প্রায় ৯৬ থেকে ৯৭ ভাগ ধান কাটা হয়েছে। সাতক্ষীরায়ও ৯০ ভাগের বেশি ধান কাটা হয়েছে।

‘পটুয়াখালী ৩২০০ হেক্টর জমিতে ধান হয়। এরমধ্যে ২৭০০ হেক্টরের ফসল ঘরে তোলা শেষ। এছাড়া ওই এলাকায় প্রায় দেড় লাখ হেক্টর জমিতে মুগডাল আবাদ হয়। পটুয়াখালীর সব ডাল ঘরে তোলা সম্ভব হয়েছে। ভোলাতে কিছু পরিমাণ ধানের ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষতি সবচেয়ে বেশি হয়েছে আমের। সাতক্ষীরায় চার হাজার হেক্টর জমির বাগানে আম হয়। এরমধ্যে ঝড়ে তিন হাজার হেক্টর জমির আম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব আম স্থানীয়দের ত্রাণ হিসেবে দেওয়া যায় কি-না, সে বিষয়ে চিন্তা করা হচ্ছে। ’

আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আমের মধ্যে সাতক্ষীরা জেলার আমগুলো একটু বেশি ক্ষতি হয়েছে। সাতক্ষীরার ৬০ থেকে ৭০ ভাগ আম নষ্ট হয়ে গেছে। ওই এলাকার চার হাজার হেক্টর জমির আমের মধ্যে ইতোমধ্যে এক হাজার হেক্টরের আম নামিয়ে নিয়েছে। বাকি তিন হাজার হেক্টরের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ জন্য আমরা ত্রাণ মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছি যে, এ আমগুলো কিনে আমরা ত্রাণের মাধ্যমে দিতে পারি কি-না।

বিভিন্ন ফসলের শতকরা হার তুলে ধরে তিনি বলেন, ৪৭ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে শতকরা ১০ ভাগ। তিন হাজার ২৮৪ হেক্টর জমির ভুট্টার ক্ষতি হয়েছে পাঁচ শতাংশ। ৩৪ হাজার ১৩৯ হেক্টর জমির পাটের ক্ষতি হয়েছে শতকরা পাঁচ ভাগ। এছাড়া পানের ক্ষতি হয়েছে গড়ে শতকরা ১৫ ভাগ। কোনো কোনো এলাকায় এ ক্ষতি বেশি হয়েছে।

মন্ত্রী বলেন, বন্যা, খড়া, ঘূর্ণিঝড়সহ যেকোনো প্রাকৃতিক দুযোগে কৃষিই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তবে ঘূর্ণিঝড়ে মানুষের অনেক সম্পদেরও ক্ষতি হয়। অনেক সময় মানুষও মারা গেছেন। আমাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে।

‘বার বার এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে শিক্ষা নিয়ে মাঠপর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তাদের এসব মোকাবিলায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেজন্য খুব বেশি ক্ষতি হয়নি। ’

তিনি আরও বলেন, বিভিন্নভাবে কৃষকদের এ ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করবে সরকার। কারোনা ভাইরাসের কারণে সরকার খাদ্য নিরাপত্তায় গুরুত্ব দিচ্ছে। তাই টাকার কোনো সমস্যা হবে না। অনেক পান চাষি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। তাদের আমরা লিস্ট করে ক্ষতিপূরণ দেব।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ ঘণ্টা, মে ২১, ২০২০
জিসিজি/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।