ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

করোনাকালে উত্তরবঙ্গে চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ড

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২১
করোনাকালে উত্তরবঙ্গে চা উৎপাদনে নতুন রেকর্ড

পঞ্চগড়: করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রকোপে যখন সারাদেশে কিছুটা স্থবিরতা সৃষ্টি হয়েছে, ঠিক সে সময়ে দেশের উত্তরবঙ্গে (পঞ্চগড়, ঠাকুরগাও, লালমনিরহাট, দিনাজপুর ও নীলফামারী) চা উৎপাদনে এক নতুন রেকর্ড গড়ে উঠেছে।

চা বোর্ড জানিয়েছে, ২০২০ সালে সমতলের ১০টি চা বাগান ও ৭ সহস্রাধিক ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান থেকে মোট ১ কোটি ৩ লাখ অর্থাৎ ১০.৩০ মিলিয়ন কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে।

এ বছরে জাতীয়ভাবে চা উৎপাদন হয়েছে ৮৬.৩৯ মিলিয়ন কেজি। অর্থাৎ উত্তরাঞ্চলের সমতলের চা বাগান থেকে ১১.৯২ শতাংশ জাতীয় উৎপাদনে যুক্ত হয়েছে।

রোববার (২৪ জানুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে বিষয়টি বাংলানিউজকে নিশ্চিত করেন চা বোর্ড পঞ্চগড়ের প্রকল্প পরিচালক ও ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ শামীম আল মামুন।

বিজ্ঞপ্তি সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে উত্তরবঙ্গের ৫ জেলায় ১০টি নিবন্ধিত ও ১৭টি অনিবন্ধিত চা বাগান এবং ৭ হাজার ৩১০টি ক্ষুদ্রায়তন চা বাগানের (নিবন্ধিত ১ হাজার ৫১০টি) মোট ১০,১৭০.৫৭ একর জমিতে চা চাষ হয়েছে। উক্ত চা বাগানগুলো থেকে ২০২০ সালে ৫ কোটি ১২ লাখ ৮৩ হাজার ৩৮৬ কেজি সবুজ চা পাতা উত্তোলন করা হয়েছে। যা থেকে পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওয়ের ১৮টি চলমান চা কারখানায় ১ কোটি ৩ লাখ কেজি চা উৎপন্ন হয়েছে। ২০১৯ সালে উত্তরবঙ্গে চা আবাদির সংখ্যা ছিল ৮৬৮০.৮৬ একর ও চা উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ৯৫.৯৯ লাখ কেজি। বিগত বছরের তুলনায় ২০২০ সালে ১,৪৮৯.৮৯ একর জমিতে চা আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে ও ৭.১১ লাখ কেজি চা বেশি উৎপন্ন হয়েছে।  

ড. মোহাম্মদ শামীম আল মামুন বাংলানিউজকে জানান, সমতল ভূমিতে চা চাষের জন্য পঞ্চগড় ও এর পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো অত্যন্ত সম্ভাবনাময় এলাকা। দিন দিন উত্তরাঞ্চলে চা চাষ ও উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। চা চাষ সম্প্রসারণের জন্য চাষিদের বিভিন্ন সহায়তার মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। চাষিদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যার সমাধান দিতে এরই মধ্যে ‘দুটি পাতা একটি কুঁড়ি’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপস চালু করা হয়েছে। এ আঞ্চলিক কার্যালয়ে একটি পেস্ট ম্যানেজমেন্ট ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে। যেখানে চা চাষিদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধান, চাষের নানান রোগবালাই ও পোকা দমনে বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক সহায়তা দেওয়া হয়। এ বছর ক্ষুদ্র চাষিরা তাদের বাগানে উৎপাদিত কাঁচা পাতার ন্যায্যমূল্য পাওয়ায় তারা চা চাষে উৎসাহিত হয়েছেন, চা বোর্ডের পরামর্শ অনুযায়ী বাগানের যত্ন নিয়েছেন। আশা করি, আগামীতে চা উৎপাদন আরও বাড়বে, চা উৎপাদনে নতুন নতুন রেকর্ড হবে।

বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল জহিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, করোনা পরিস্থিতিতেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় দেশের সব চা বাগানের সার্বিক কার্যক্রম স্বাভাবিক ছিল। এছাড়াও উৎপাদনের পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চা নিলাম কেন্দ্র চালু রাখা, সঠিক সময়ে ভর্তুকি মূল্যে সার বিতরণ, বাগানে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতকরণ, চা শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি, রেশন এবং স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার ফলে ২০২০ সালে চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে।  

তিনি আরও বলেন,উত্তরবঙ্গে ক্ষুদ্র চা চাষিদের দোরগোড়ায় প্রশিক্ষণ সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ‘ক্যামেলিয়া খোলা আকাশ স্কুলে’র মাধ্যমে চা আবাদ বিষয়ে হাতে কলমে প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং আধুনিক প্রযুক্তি সরবরাহের ফলে সমতলের চা বাগান ও ক্ষুদ্রায়তন চা বাগান থেকে এ বছর রেকর্ড পরিমাণ চা উৎপাদন সম্ভব হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০২১
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।