সিলেট: করোনার ভয়াবহতায় বৈশাখী উৎসব হয়নি নগর-শহরে। বিবর্ণ ছিল বাংলা নববর্ষ বরণ।
গ্রীষ্মের আকাশ সেজেছে নীল রঙে। বাতাসে ভেসে বেড়ানো মেঘমালা নানা আকৃতি ধারণ করে সূর্যকে আড়ালের চেষ্টা! প্রকৃতির এসব খেলা যেন কৃষককে রক্ষায়! তবে,
তা দেখার ফুসরত নেই কৃষকদের। সোনার ফসল গোলায় ভরতে যত ব্যস্ততা কৃষক পরিবারের। তাই ছেলে-বুড়ো, নারী-শিশু, সবার সময় কাটছে ধানী জমিতে।

প্রতিবার রবি মৌসুমে বন্যা, ঝড়, শিলাবৃষ্টিতে ম্লান হয় কৃষকের স্বপ্ন। প্রকৃতি এবার যেন দুই হাত ভরে দিয়েছে প্রান্তিক জনপদের মানুষকে। ঘরে ওঠবে গোলাভরা ধান। পরিবার-পরিজন নিয়ে স্বচ্ছন্দে কাটবেন দিন। এই মৌসুমে এমন স্বপ্ন এবার দেখতে পারেন কৃষাণ পরিবার। ফলে গোলাভরা ধানের স্বপ্নে এবার বৈশাখী উৎসবে মেতেছেন সিলেটের কৃষকরা। কিছুদিন পর সম্পূর্ণরূপে ধান ওঠবে কৃষকের গোলায়।
কৃষকরা জানিয়েছেন, এবার বন্যার ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা ক্ষীণ। ভয় কেবল ঝড়-তুফান ও শিলাবৃষ্টিতে। অবশ্য উপরওয়ালা সহায় থাকায় আবহাওয়া এবার অনুকূলে। যে কারণে হাওর বাওরের ধান স্বাচ্ছন্দে তোলা যাচ্ছে।

একই মন্তব্য করে সিলেট সদরের নলকট গ্রামের আব্দুল হালিম বাংলানিউজকে বলেন, এবার শ্রমিক সংকটও নেই। করোনার কারণে লোকজন শহরমুখী হতে না পেরে ধান কেটে আয়ের সুযোগ পাচ্ছেন। জনপ্রতি রোজ ৫শ টাকা কামাই করতে পারছেন। এ বছর প্রায় দুই একর জমিতে ব্রি-২৮ ধান রোপণ করে ভালো ফলন পেয়েছেন তিনি।


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিলেটের বৃহত্তম হাওর হাকালুকি ১৮১ দশমিক ১৫ বর্গকিলোমিটারের হাকালুকি হাওরে ২০ হাজার ৪০০ হেক্টরে ২৪০টি ছোট-বড় বিল রয়েছে। বর্ষায় সাগরসম হাকালুকি শীত মৌসুমে চারণ ভূমিতে পরিণত হয়। বিলগুলোর পাড়ে এবং সমতল জমিগুলোতে রবি শস্যের এবারো ব্যাপক ফলন হয়েছে জানা স্থানীয় কৃষকরা। একইভাবে সিলেট জেলার ছোট-বড় হাওর ছাড়াও নিম্নাঞ্চল এলাকায় বোরো ধানের ব্যাপক ফলন হয়েছে।

বিগত বছরগুলোতে কৃষকরা রবি শস্যের ফলনে বন্যায় কৃষকরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হলেও গত বছর এবং এ বছর স্বাচ্ছন্দে ধান কেটে ঘরে তুলতে পারছেন বলে জানিয়েছে কৃষি বিভাগ।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সিলেটের অতিরিক্ত পরিচালক দিলীপ কুমার অধিকারী বলেন, এবার বন্যায় বোরোর ক্ষতির আশঙ্কা নেই। কেবল শিলাবৃষ্টি না হলেই হয়। আরো কিছুদিন আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ধান সম্পূর্ণরূপে কেটে ঘরে তুলতে পারবেন কৃষকরা।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২১
এনইউ/এএটি