ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

শশা চাষে লাভবান লক্ষ্মীপুরের চাষিরা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ১, ২০২১
শশা চাষে লাভবান লক্ষ্মীপুরের চাষিরা শশা।

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরের ভবানীগঞ্জে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে চাষ হচ্ছে শশা। খরচের তুলনায় অধিক ফলন হওয়ায় শশা চাষে আগ্রহ বাড়ছে এই এলাকার কৃষকদের।

বর্তমানে শশার বাজার মূল্য বেশি হওয়ায় লাভবান হচ্ছেন চাষিরা।

কৃষি অফিস সূত্র জানায়, চলতি মৌসুমে জেলার সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জে প্রায় দুইশ’ হেক্টর জমিতে শশার চাষ হয়েছে। প্রতি হেক্টরে ১৫০ থেকে ১৬০ মণ শশা উৎপাদন হয়। এতে এই মৌসুমে শুধু ওই এলাকাতে শশার মোট উৎপাদন হয়েছে ১২শ মেট্রিক টনেরও বেশি।

জানা গেছে, ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে ফসলি জমি। এখানে শশা, লাউ, কুমড়া, চিচিঙ্গা ও তরীসহ নানা জাতের সবজির চাষ করা হয়। এছাড়া শীতকালীন সবজির চাষ হয় ব্যাপকহারে। ফলে সবজি উৎপাদনের ক্ষেত্রে এলাকাটি বিগত কয়েক বছর থেকে খ্যাতি অর্জন করেছে।

ভবানীগঞ্জ ইউনিয়নের মিয়ার বেড়ির কৃষক জালাল আহম্মদ বলেন, আমি প্রায় ৫ একর জমিতে শশা চাষ করেছি। এতে খরচ হয়েছে সাত লাখ টাকার মতো। এ মৌসুমে ১০ লাখ টাকার বেশি শশা বিক্রি করতে পারবো বলে আশা রাখি।  

তিনি আরও বলেন, খুচরা বাজারে এখন শশার দাম বেশি। প্রতি কেজি শশা ৫০ থেকে ৬০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। তাই আমরা চাষিরাও ভালো দাম পাচ্ছি। প্রতি মণ শশা পাইকারি পনেরশ থেকে সতেরশ টাকায় বিক্রি করছি। পাইকারি ব্যবসায়ীরা এসে ক্ষেত থেকে শশা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন।  

জালাল আহম্মদ বলেন, বিগত সময়ে শশার এতো ভালো দাম ছিল না। ফলে গেল মৌসুমে আমাকে লোকসান গুণতে হয়েছে। তবে এবার খরচ উঠে তিন থেকে চার লাখ টাকা লাভ করতে পারবো।

ইব্রাহিম নামে আরেক চাষি বলেন, দুই একর জমিতে শশার চাষ করেছি। চাষাবাদ বাবদ পুরো খরচ হিসেব করিনি। তবে বাজার মূল্য বেশি হওয়ায় এ মৌসুমে আমাদের আয় ভালো হবে।

কৃষক আমির হোসেন বলেন, আর এক মাসের মতো ক্ষেত থেকে শশা তুলতে পারবো। নির্দিষ্ট সময়ের পর গাছ মরে গেলে ওই জমিতে শীতকালীন সবজির চাষ করবো। এসব জমিতে ১২ মাস পালাক্রমে সবজির চাষ করা যায়।    

কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা উচ্চ ফলনশীল জাতের শশার চাষ করেন। চারা লাগানোর পর থেকে এক মাসের মাথায় ফলন আসতে শুরু করে। টানা দুই মাস ফলন দিতে থাকে। সপ্তাহে দুইদিন ক্ষেত থেকে শাশা তুলতে হয়।

তারা আরও জানান, এ সময়টাতে ক্ষেতে পানি থাকে। তাই উঁচু করে সারিবদ্ধভাবে বাঁধ দিয়ে চারা লাগানোর জন্য জমি তৈরি করে নিতে হয়। গাছের গোড়ায় পানি থাকলে গাছ মারা যাবে। তাই অতিরিক্ত পানি নিষ্কাষণের জন্য সেচের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। আবার খরায় পানির প্রয়োজন হলে পার্শ্ববর্তী খাল থেকে পানি সরবরাহ করা হয়।

ভবানীগঞ্জ এলাকার দায়িত্বে থাকা উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল খালেক বাংলানিউজকে বলেন, লক্ষ্মীপুরের ভবানীগঞ্জ এলাকার জমি শশাসহ শীতকালীন সবজি চাষের উপযোগী। তাই কৃষিবিভাগ থেকে এ অঞ্চলকে বিশেষভাবে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে। ফলন বৃদ্ধি এবং ফসলের রোগ প্রতিরোধে শশা চাষিদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ০১, ২০২১
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।