ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

ফেনীতে কমেছে সরিষার চাষাবাদ

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২২
ফেনীতে কমেছে সরিষার চাষাবাদ

ফেনী: চলতি মৌসুমে সরিষা চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি ফেনীতে। এ মৌসুমে জেলার ছয় উপজেলায় ২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।

যেখানে ১ হাজার ৮৬৭ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষাবাদ হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবার ৩৩৩ হেক্টর কম জমিতে চাষাবাদ হয়েছে সরিষা।
 
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত বছরের ডিসেম্বর মাসে ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ ও অতিবৃষ্টির কারণে এবার চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। চলতি মৌসুমে জেলার ছয়টি উপজেলায় ২ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। যেখানে ১ হাজার ৮৬৭ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষাবাদ হয়েছে। সূত্র জানায়, গত বছর জেলায় ১ হাজার ৯০৭ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষাবাদ হয়েছিল।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর আরও জানায়, চলতি মৌসুমে জেলার সদর উপজেলায় সর্বোচ্চ ৮৭০ হেক্টর, সোনাগাজীতে ৫৩৫ হেক্টর, ফুলগাজীতে ২২০ হেক্টর, ছাগলনাইয়ায় ১২০ হেক্টর, দাগনভূঞায় ৬২ হেক্টর ও পরশুরামে ৬০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষাবাদ হয়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ফেনীর উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সঞ্জয় কান্তি সেন বলেন, আমন ও বোরো চাষাবাদের মধ্যবর্তী এ ফসলের আয়ে খুব সহজে বোরো চাষাবাদের খরচ মেটানো সম্ভব। জেলায় এ বছর উচ্চ ফলনশীল বারি-১৪, ৯ সহ বিভিন্ন জাতের সরিষার চাষাবাদ হয়েছে।

আব্দুল মান্নান নামে এক চাষি বলেন, ডিসেম্বরে বৃষ্টির কারণে শুরুতে বীজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তারপর ফলন কিছুটা ভালো হলেও ফসল কাটতে দেরি হচ্ছে।
 
সামছুল আলম নামে এক কৃষক বলেন, গত বছর প্রতি হেক্টরে এক হাজার কেজি পর্যন্ত ফলন হয়েছিল। কিন্তু এবার ডিসেম্বরের বৃষ্টিপাতে ফলন আশানুরূপ হয়নি।  

মো. মোস্তাফা নামে আরেক কৃষক বলেন, আমনের পরপরই ৪০ শতক জমিতে সরিষা চাষাবাদ করেছিলাম। আগামী মাসের মাঝামাঝি সময়ে ফসল তুলব। বাজারে সয়াবিন তেলের দাম ভালো থাকায় সরিষার তেল থেকেও ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন তিনি।

সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন আক্তার বলেন, গত বছরের ডিসেম্বরের ৫ থেকে ৭ তারিখের বৃষ্টিতে উপজেলার ৩৬৭ হেক্টর চাষাবাদকৃত সরিষা ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সেজন্য উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি।
 
সরিষা ক্ষেতে মধু সংগ্রহে কৃষি বিভাগের সহায়তার কথা তুলে ধরে শারমিন আক্তার বলেন, গত ডিসেম্বরের ২২ তারিখ ফাজিলপুর এলাকায় ৪ জন চাষিকে সরিষা ক্ষেতে মৌ বক্স স্থাপনে সদর উপজেলা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সহায়তা দেওয়া হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক তারিক মাহমুদুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড় জাওয়াদ ও বৃষ্টির কারণে এ বছর চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। অসময়ে বৃষ্টি হওয়ার কারণে অনেকেরই ক্ষেতে সরিষা নষ্ট হয়েছে। তবে হেক্টর প্রতি উৎপাদন কম হলেও ফলন আশানুরূপ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

জেলায় সরিষার চাষাবাদ বাড়াতে কৃষি বিভাগ সচেষ্ট রয়েছে উল্লেখ করে এ কৃষিবিদ বলেন, ভালো ফলনের জন্য কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সব সময় কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পে আড়াই হাজার চাষিকে প্রণোদনা এবং দেড় শতাধিক চাষিকে প্রদর্শনীর মাধ্যমে উন্নতমানের বীজ ও সার দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২২ 
এসএইচডি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।