ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

জোয়ারের অস্বাভাবিক পানি

গাজীপুরে কাঁচা-আধা পাকা ধান কাটতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষক

মো. রাজীব সরকার, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২২
গাজীপুরে কাঁচা-আধা পাকা ধান কাটতে বাধ্য হচ্ছেন কৃষক

গাজীপুর: চৈত্রের শেষে জোয়ারের পানি অস্বাভাবিক বাড়ায় তলিয়ে যাচ্ছে কৃষকের ধান ক্ষেত। ফলে বাধ্য হয়েই আধা পাকা ও কাঁচা ধান কাটছেন তারা এদিকে এত কষ্ট ও যত্নের ধান এভাবে কাটতে হচ্ছে- এটা কেউই মেনে নিতে পারছেন না।

জোয়ারের পানি কৃষকের সর্বনাশ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে ও সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, আর কয়েক দিন পরেই পুরোদমে শুরু হবে সোনালী ফসল ধান কাটার উৎসব। কৃষকের চোঁখে মুখে ছিল সোনালী স্বপ্ন। উৎসবমুখর পরিবেশে ক্ষেত থেকে ধান কেটে গোলা ভরবে কৃষক। এমনটাই প্রতিবছর হওয়ার কথা। কেবলমাত্র পাকতে শুরু করেছে ধান। কিন্তু চৈত্র মাসের একেবারে শেষ সময় অতিমাত্রায় জোয়ারের পানি বাড়ছে। এতে গাজীপুরের নিম্নাঞ্চলের ধান ক্ষেত পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। এই মুহূর্তে বাধ্য হয়ে আধা পাকা ও কাঁচা ধান কাটতে হচ্ছে কৃষককে। ফলে মাত্র কয়েকদিনের ব্যবধানে কৃষকের সোনালী স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে গেছে।

জোয়ারের পানি কৃষকের সর্বনাশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাদের ক্ষেতে জোয়ারের পানি ছুঁইছুঁই তাদের অনেকের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে। জোয়ারের পানি অতিমাত্রায় বাড়ায় কৃষকের এই সর্বনাশের কারণ। এ অবস্থায় অনেক এলাকাতে বাঁধ তৈরি করে ধানক্ষেত রক্ষার চেষ্টা করছেন স্থানীযরা নিজেরাই।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বাইমাইল, জয়েরটেক, কালাকৈর, কাতলাখালী, কালিয়াকৈর উপজেলার বড়ইবাড়ীসহ বিভিন্ন এলাকায় তুরাগ নদে জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ধান ক্ষেত তলিয়ে যাচ্ছে। এসব এলাকার কৃষকরা বাধ্য হয়েই আধাপাকা ও কাঁচা ধান কেটে নিচ্ছে। এই ক্ষতি সারা বছর তাদের কাঁদাবে। কারণ শুধু এই ধান বিক্রির টাকায়ই সারা বছর সংসার চলতো অনেক কৃষকের।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের বাইমাল এলাকার কৃষক আসাদুজ্জামান জানান, দুই বিঘা জমিতে ধানের আবাদ করেছিলেন। এভাবে জোয়ারের পানি অতিমাত্রায় বেড়ে ধানক্ষেত তলিয়ে যাবে আশা করিনি। হাঁটু পানি থেকে বাধ্য হয়ে কাঁচা ও আধা পাকা ধান কাটতে হচ্ছে। এতে বড় ক্ষতি হয়ে গেল।

‘সর্বনাশ, সর্বনাশ হয়ে গেল। জোয়ারের পানি  সর্বনাশ করে দিলো। ’ কথাগুলো একা একাই বলছিলেন কৃষক আবেদ আলী। জানতে চাইলে তিনি বলেন- ক্ষেতে ধান কেবলই পাকতে শুরু করেছে। ভালোই ফলন হয়েছিল। জোয়ারের পানি বেড়ে ধানক্ষেত তলিয়ে গেছে। পাকা ধান আর কাটতে পারলাম না। আধাপাকা ও কাঁচা ধান কাটতে হলো। খড় তো হবে। এইতো ৬/৭ দিন পরেই পাকা ধান ঘরে তুলতে পারতাম।  

জেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, এবছর গাজীপুরে ৫৭ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে জোয়ারের পানি অতিমাত্রায় বাড়ায় অনেক এলাকায় ধানক্ষেত ডুবে যাচ্ছে। কারো ক্ষেত যদি ৮০ ভাগ ডুবে যায় তাদের এখনই ধান কেটে ফেলার পরামর্শ দিচ্ছি।
    
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩২, এপ্রিল ১৩, ২০২২।
আরএস/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।