ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

মোকামে কারসাজি, ধানের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত কৃষক-পাইকার

মেহেদী নূর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২১ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২২
মোকামে কারসাজি, ধানের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত কৃষক-পাইকার

ব্রাহ্মণবাড়িয়া: দেশের সর্ববৃহৎ মোকাম ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে ধানের কাঙ্ক্ষিত মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন কৃষক-পাইকাররা। এই মোকামে নদীপথে দূর-দূরান্ত থেকে প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার টন ধান আসে।

বেশিলাভের আশায় এখানে ধান নিয়ে এলেও ভেজা ধানের অজুহাত দেখিয়ে কৌশলে কমদামে এসব ধান কিনে নিচ্ছে মিল ও আড়তদাররা।  

একাধিক কৃষক ও পাইকাররা অভিযোগ করে বলেন, আমরা নদীপথে হাজার হাজার মণ ধান নিয়ে আসি লাভের আশায়। কিন্তু মোকামের একটি চক্র বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে প্রতি মণে কম মূল্যে ধান কিনে নিয়ে যাচ্ছে। ফলে তাদের হাজার হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।

মোকামে আসা কৃষক ও পাইকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ১ সপ্তাহের ব্যবধানে এখানে মণ প্রতি সব ধরনের ধানের দাম কমেছে। বর্তমানে প্রতি মণ বিআর-২৮ ধান ৯০০-৯৪০ টাকা, বিআর-২৯ ধান ৮০০ টাকা, ইরি ধান ৮০০-৮২০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।  

কিশোরগঞ্জের নিকলী থেকে ধান নিয়ে আসা কৃষক মিজান মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, আমি মোকামে এক হাজার মণ ধান নিয়ে আসছি। এখানে এসে প্রতি মণে আমার ৫০-৬০ টাকা কমে ধান বিক্রি করতে হচ্ছে। মোকামে সংঘবদ্ধ একটি চক্রের কারসাজির ফলে ধানের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে আমাদের।  

হবিগঞ্জ থেকে ধান নিয়ে আসা পাইকার আজিজুল হক বাংলানিউজকে বলেন, আমরা বিভিন্ন জায়গা থেকে ধান সংগ্রহ করে নিয়ে আসি। সব ধানের আদ্রতা সমান নয়। কোনো একটি বস্তায় আদ্রতার পরিমাণ কম পাওয়া গেলে সব ধানই ভেজার অজুহাতে দিয়ে কম দামে কিনে নেয়া হয়। যেহেতু আমরা দূর থেকে ধান নিয়ে আসি তাই আমরা বাধ্য হচ্ছি তাদের বেধে দেওয়া দামে ধান বিক্রি করতে।

মোকামে নিয়ে আসা পাইকার হামিদ মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, এখানে প্রতিদিন হাজার হাজার মণ ধান কেনা-বেচা হচ্ছে। তবে এখানে জেলা খাদ্য বিভাগের তৎপরতা তেমন চোখে পড়ে না। ধানের ন্যায মূল্য মনিটরিং জোর দাবি জানান তিনি।  

কারসাজির বিষয়টিকে ভিত্তিহীন বলে জেলা চালকল মালিক সমিতির সভাপতি মো. বাবুল আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, মোকামে নিয়ে আসা বেশিরভাগ ধানই কাঁচা ও অপরিপক্ব। ফলে এসব ধান শুকানোর পর এর ওজন অনেক কমে যায়। সেক্ষেত্রে আমাদেরও লোকসান গুনতে হয়। এখানের ধানের মূল্য অনেকটা আমদানির ওপর নির্ভর করে। তবে ধান কেনার বিষয়ে এখানে কোনো সিন্ডিকেট নেই।  

ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা কাউসার সজীব বাংলানিউজকে বলেন, মোকামে যেসব ধান আসছে বেশিরভাগ ধানেই আদ্রতা কম থাকায় দাম কিছুটা কম। সরকারিভাবে যে ধান কেনা হচ্ছে  তাতে আদ্রতার পরিমাণ ১৪ শতাংশ। মোকামে আসা ধানের আদ্রতা ১৮-২২ শতাংশ।  

তিনি আরো বলেন, বোরো সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আশাকরছি ধানের বাজারে এর প্রভাব পড়বে। কারসাজির রোধে ১৬টি টিম ধানের মোকাম ও চালের বাজারে নিয়মিত মনিটরিং করছে। কৃষক প্রতারিত হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৪ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২২
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।