ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

মাঠে মাঠে আমনের চাষ, কৃষকের সর্বনাশ

জিসান আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২২
মাঠে মাঠে আমনের চাষ, কৃষকের সর্বনাশ আমন ধানের ক্ষেত।

চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গায় এবার আমন মৌসুমে উৎপাদিত ধান নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন চাষিরা। গত মৌসুমের তুলনায় এবার এ মৌসুমে আমন ধানে বড় ধরনের লোকসানের শঙ্কা করছেন তারা।

অতিরিক্ত তাপদাহ আর অনাবৃষ্টির কারণে এবারও ফলন বিপর্যয়েরও শঙ্কা রয়েছে। এতে যেমন বাড়ছে উৎপাদন খরচ, সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে কৃষকদের চিন্তাও। এ অবস্থায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

কৃষকরা বলছেন, গত মৌসুমে এক বিঘা ধান চাষে খরচ হয়েছিল ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা। এবার ধান চাষে চাষিদের খরচের অংক দাঁড়িয়েছে ৭ থেকে ৮ হাজার টাকায়। একদিকে খরচ বৃদ্ধি অন্যদিকে প্রকৃতির বৈরী আচরণ। আর ঠিক এমন সময় সেচের পানি নিয়ে নতুন বিপাকে পড়তে হয় তাদের।   জ্বালানি তেলসহ সব ধরনের কৃষিপণ্য উৎপাদন উপকরণের দাম বাড়ানোর কারণে বেড়েছে উৎপাদন খরচও। এজন্য চাষিদের ফসল উৎপাদন করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

কৃষকরা জানান, এর মধ্যে আলমডাঙ্গা উপজেলা ও চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কিছু অংশ জি.কে (গঙ্গা-কপোতাক্ষ) সেচ প্রকল্পের আওতায় সেচ দেওয়া হয়। জিকে সেচের আওতায় সেচ দিয়ে ওই অঞ্চলের কৃষকরা কৃষি কাজ করে। তবে ঠিক সময়ে সেচের পানি পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ তাদের। এর কারণে মেশিনের মাধ্যমে সেচ দিতে গেলে বাড়ায় খরচ।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার এ জেলায় আমন ধানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৪ হাজার ৯২০ হেক্টর জমিতে।

বুধবার (১৭ আগস্ট) পর্যন্ত সে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে ২১ হাজার ৩৪২ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার তুলনা এখন পর্যন্ত অর্ধেকে রয়েছে আমনের চাষ। এর মধ্যে শুধু আলমডাঙ্গা উপজেলায় ১৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। যার মধ্যে অর্জিত হয়েছে ৬ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে।

আলমডাঙ্গা উপজেলার ডাউকী গ্রামের কৃষক শামসুল আলম বলেন, এবার আমন ধান চাষ করেছিলাম এক বিঘা জমিতে। বড় আশা ছিল কিন্ত তা নিরাশায় পরিণত হয়েছে। এবার বৃষ্টি হয়নি আবার ভালো ফলন হয়নি, সব মিলিয়ে এবার চাষে ক্ষতি। যে পরিমাণ খরচ হবে তার থেকে বেশি হয়ে যাচ্ছে এবার আমন ধান চাষে। আমন ধানে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে চরম চিন্তায় আছি।

জামজামি এলাকার আরেক কৃষক লোকমান হোসেন বলেন, এবার আমন ধানে তাদের পানি না হওয়াতে বাড়তি টাকা খরচ করে স্যালোমেশিনের মাধ্যমে সেচ দিতে হয়েছে। আবার সারের দাম বেশি আবার ফসলে ভালো ফলন হয়নি। যে কারণে খরচ ওঠানো নিয়ে চিন্তায় আছি। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না পেলে মুখ থুবরে পড়বে চাষাবাদ।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, এবার এ জেলায় প্রাকৃতিক পরিস্থিতি কিছুটা বিরুপ হওয়ায় আমনে কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তবে কৃষি বিভাগ থেকে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। কৃষি পণ্যের দাম বাড়ায় আমনের ওপরও প্রভাব পড়েছে। এতে খুব বেশি নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১৮, ২০২২
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।