ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

ক্রেতার অভাবে ধানের দাম কম, বিপাকে চাষিরা

জাহিদুল ইসলাম মেহেদী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২২
ক্রেতার অভাবে ধানের দাম কম, বিপাকে চাষিরা

বরগুনা: বরগুনার হাটগুলোতে বেড়েছে ধানের সরবরাহ। তবে সে অনুযায়ী বাজারে ব্যাপারী না থাকায় কমতে শুরু করেছে দাম।

চলতি বোরো মৌসুমে ধানের দাম না পাওয়ায় হতাশ এলাকার কৃষকরা। বাজারে প্রতি মণ ধান বিক্রি হচ্ছে মাত্র ৭২০ থেকে ৭৪০ টাকায়। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে ধানের দাম কমেছে মণপ্রতি ৮০ থেকে ১১০ টাকা পর্যন্ত।

ধান বিক্রি করতে না পেরে শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) বাংলানিউজকে এমন কথা বলেন সদর উপজেলার ফুলঝুড়ি ইউনিয়নে গিলাতলি গ্রামের মোতালেব।

তিনি বলেন, ‘আমরা লাভের আশায় ধান চাষ করি। কিন্তু সারা বছর পরিশ্রম করেও কোনো লাভ নেই। বাজারে পাইকাররা যে দামে ধান কিনছেন তাতে আমাদের উৎপাদন খরচই উঠছে না। সারের দাম বেশি, দুনিয়ার সবকিছুর দাম বাড়ে কিন্তু সেই হিসেবে ধানের দাম বাড়ে না। ’

বরগুনা সদর উপজেলার বদরখালী ইউনিয়নের কুমড়াখালী গ্রামের রশিদ ফরাজী বাংলানিউজকে বলেন, সার, পানি, কীটনাশকসহ সব খরচ শেষে যখন ধান ঘরে তুলতে হবে ঠিক সেই সময় দেখা দেয় শ্রমিক সংকট। বেশি টাকায় শ্রমিক নিয়ে ধান কাটার পরে দেখা যায় উৎপাদন খরচ উঠছে না। তিনি অভিযোগ করে বলেন, স্থানীয় পাইকাররা সিন্ডিকেট করে ধানের দাম কমিয়ে দিয়েছে।

এবছর আউশ ধান চাষ করে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। এক মণ ধান বিক্রি করে উৎপাদন খরচও উঠছে না তাদের। জেলায় আউশ মৌসুমের ধান কাটা-মাড়াই শেষ পর্যায়ে। ব্যস্ততা দেখে মনে হবে ধানচাষিদের সুদিন এসছে। কিন্তু চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় ধানের দাম নিয়ে হতাশ তারা।

বরগুনা পৌর বাজারের মেসার্স মুন্সি ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী কবির মুন্সি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আউশের ভরা মৌসুমে বরগুনায় কিছুদিন ধরে ধানের দাম কমেছে। ১৫ দিনের ব্যবধানে প্রতি মনের দাম কমেছে ৮০ থেকে ১০০ টাকা। বাজারে ভেজা ধান বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা, আর শুকনা বিক্রি হচ্ছে ৭২০ থেকে ৭৪০ টাকায়। অথচ প্রতি মণ ধানের উৎপাদন খরচ ৭০০ টাকার বেশি। ’

আউশের ভরা মৌসুমেও বরগুনায় বেড়েছে চালের দাম। বাজারে  ধানের দাম কমলেও  খুচরা পর্যায়ে তার প্রভাব পড়েনি একটুও। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষসহ সব ধরনের ভোক্তারা।

জেলা খামারবাড়ির তথ্য মতে, আবাদের মোট লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৩০৭৫ হেক্টর জমিতে, আবাদকৃত জমি ৫২৮১১হেক্টর, কর্তনকৃত জমি পরিমাণ ১২৫২৮ হেক্টর, হেক্টর প্রতি ফলন ২.৩০ মে. টন, চলতি মৌসুমে মোট আউশ ধানের উৎপাদন ২৮৮১৪.৪ মে. টন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বরগুনা খামারবাড়ির, উপ-পরিচালক আবু সৈয়দ মো. জোবায়দুল আলম।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২২
এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।