ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

কৃষি

সবুজ পাহাড়ে মাল্টার সমাহার

মঈন উদ্দীন বাপ্পী, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২২
সবুজ পাহাড়ে মাল্টার সমাহার

রাঙামাটি: রাঙামাটি সদরের সাপছড়ি ইউনিয়নের বোধিপুর বৌদ্ধবিহারের স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘ত্রিশরণ ফাউন্ডেশন’ পরিত্যক্ত সবুজ পাহাড়ে মাল্টাসহ অসংখ্য ফলের চাষ করে সাফল্য পেয়েছে। এতে সংস্থাটির ফলের চাহিদা মেটার পাশাপাশি সৃষ্টি হয়েছে কর্মসংস্থানের।

পাহাড়ি জেলা রাঙামাটির মাটিতে যে কোনো ফল উৎপন্ন করা যায় অনায়াসে। ফলনও ভালো হয়। ফলও সুস্বাদু হয়। যে কারণে এ অঞ্চলের মাটিকে কৃষিবিদরা উর্বর ভূমি আখ্যা দিয়েছেন। ত্রিশরণ ফাউন্ডেশন এ মাটির সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে মাল্টাসহ অসংখ্য ফলের চাষ করে সফলতা পেয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রতিষ্ঠানটির সাফল্য দেখে অনেকে ব্যক্তি উদ্যোগে নিজেদের পাহাড় এবং জমিতে মাল্টা, আপেলকুল এবং আনারস চাষ শুরু করেছেন।

ত্রিশরণ ফাউন্ডেশন তাদের লোকবল দিয়ে পাহাড়ের সাত একর জমিতে গড়ে তুলেছে ফলের বাগান। এসব ফলের মধ্যে মাল্টা, আপেলকুল, আমলকি, পেয়ারা, ড্রাগন, আনারস, কলা, সুপারি উল্লেখযোগ্য। বাগানে বর্তমানে বিভিন্ন জাতের তিন হাজার ফল গাছের চারা রয়েছে। ফল গাছের পাশাপাশি লাগানো হয়েছে নানা রকমের ওষুধি গাছও।

এছাড়া এখান থেকে চারাও বিক্রি করা হয়। বর্তমানে পাঁচজন লোক বাগান পরিচর্যার দায়িত্বে আছেন। এ বছর বিহার এলাকায় লাগানো ৪০টি মাল্টা গাছের ফল বিক্রি করে আয় হয়েছে এক লাখ টাকা।

বাগানে কাজ করা বৌদ্ধপ্রিয় চাকমা (শ্রবণ, ধর্মীয় শিক্ষা গ্রহণের শিক্ষার্থী) বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি যতটুকু সময় পাই, বাগান পরিচর্যা করি।  

বোধিপুর বৌদ্ধ বিহারের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ ভদন্ত জীনবদি মহাস্থাবির ভান্তে বাংলানিউজকে বলেন, আমার বিহার এলাকায় যেহেতু খালি জায়গা রয়েছে, তাই ভাবলাম খালি জায়গাটিতে ফলের চারা রোপণ করা যায় কি না। সেই ভাবনা থেকে এগিয়ে যাওয়া।

রাঙামাটি সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শান্তিময় চাকমা বাংলানিউজকে বলেন, আমি প্রতি সপ্তাহে এ বাগানে আসি। বাগানের ফলদ চারা রক্ষণাবেক্ষণ এবং বৃদ্ধিতে ত্রিশরণ প্রতিষ্ঠানটিকে সহয়তা করি।

রাঙামাটি সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে। তাই আমরা যেখানে খালি জায়গা আছে, সেই জায়গাকে চাষের আওতায় নিয়ে আসছি।

তিনি আরও বলেন, ত্রিরশরণ ফাউন্ডেশনের বাগানে আমরা সারসহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে সহায়তা করছি। বর্তমান সরকারের আমলে কৃষির যে জোয়ার, পার্বত্য চট্টগ্রাম তার ব্যতিক্রম নয়। ফল উৎপাদনে রাঙামাটি অনেক দূর এগিয়ে গেছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর রাঙামাটি অঞ্চলের উপ-পরিচালক তপন কুমার পাল বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে কৃষির উন্নয়নে কৃষি বিভাগ কাজ করছে। কৃষকদের চারা, সারসহ নানা সেবা দিয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটির কর্তৃপক্ষ জানায়, এ বাগানটি আরও সমৃদ্ধ করে গড়ে তোলা হবে। কৃষি বিভাগের সহযোগিতা পেলে বাগানটি জেলার মধ্যে একটি আদর্শ বাগানে পরিণত হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৪, ২০২২
এসআই
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।