ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৮ শাবান ১৪৪৬

শিল্প-সাহিত্য

আল মাহমুদের গ্রামের বাড়িতে জাদুঘর করবে সরকার: ফারুকী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১২০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৫
আল মাহমুদের গ্রামের বাড়িতে জাদুঘর করবে সরকার: ফারুকী

সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেছেন, পরিবারের সম্মতি পেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় কবি আল মাহমুদের গ্রামের বাড়িতে স্মৃতি জাদুঘর ও ইনিস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হবে।

কবি আল মাহমুদ বাংলাসাহিত্যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ; তার রচনা ও বাড়ির স্মৃতি আগামী প্রজন্মের জন্য ছড়িয়ে দেওয়া জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই বিষয়ে আমাদের আগ্রহ আছে, গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সরকার এই কাজ গুরুত্ব দিয়ে করবে।

বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে কবি আল মাহমুদের ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘কালের কলস’-এর আয়োজনে ‘বিপ্লব বসন্তে আল মাহমুদ’ শিরোনামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সংস্কৃতি উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, কলকাতার হেজিমনির মধ্যে লেখালেখি শুরু করেছিলেন আল মাহমুদ। চার দশক ধরে আল মাহমুদকে সাংস্কৃতিক আধিপত্যবাদীদের কথিত মেইন স্ট্রিম সাহিত্যে উঠতে না দেওয়ার পেছনে ছিল রাজনীতি। আল মাহমুদ কোনো রাজনৈতিক দলের নন, তিনি পুরো বাংলা ভাষার।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আল মাহমুদ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, দৃষ্টান্তমূলকভাবে হাজির হয়েছেন। তার চিন্তা ছড়িয়ে দিতে হবে। জুলাই আন্দোলনে প্রমাণ হয়েছে, আমরা ঘুমিয়ে নেই, জেগে আছি। দেশের যেকোনো সংকট মোকাবিলা করব সম্মিলিতভাবে এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে শক্তিশালী করলে আমাদের এমন কাজগুলো সহজ হবে।

ফরহাদ মজহার আরও বলেন, ’২৪-এর বিপ্লব যেন বেহাত না হয়, এজন্য সাংস্কৃতিক লড়াই অবধারিত। এই লড়াইয়ের প্রস্তুতি নিতে হবে শিল্পী, কবি, সংস্কৃতিকর্মীদের।

সভাপতির বক্তব্যে কবি আব্দুল হাই শিকদার অবিলম্বে আল মাহমুদের কবর রাষ্ট্রীয়ভাবে সংস্কারের দাবি জানান। কবির মৃত্যুর পর তাকে শহীদ মিনারে আনতে না দেওয়া ও গণকবরে দাফন করা এবং রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান না জানানোর কড়া সমালোচনা করেন তিনি।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন একুশে পদকজয়ী আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুন, জাতীয় কবিতা পরিষদের যুগ্ম সম্পাদক কবি শাহীন রেজা, জাকির আবু জাফর, ড. কুদরত ই হুদা, ড. কাজল রশীদ শাহীন, ইতিহাসবিদ আশরাফুল ইসলাম, কবি ইমরান মাহফুজসহ অনেকে।

অনুষ্ঠানে আল মাহমুদের গান পরিবেশন করেন শিল্পী আমিরুল মোমেনিন মানিক ও জান্নাতুন নাঈম পিংকী। কবিতা আবৃত্তি করেন শিমুল পারভীন, কামরুল হাসান জুয়েল, মুক্তা বর্মন, ফারাহ দোলন, কঠোর হাসান, মুসা আখন্দ, এম. তারেক হাসিব, মনিরুজ্জামান পলাশসহ আরও অনেকে।

এর আগে কবি ও আবৃত্তিশিল্পী শাকিল মাহমুদ ও মুশফিকা নিপার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে জুলাই বিপ্লবে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনায় ফাতেহা পাঠ ও এক মিনিট নিরবতা পালনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়।

পরে কালের কলস সম্পাদক কবি আবিদ আজম তার স্বাগত বক্তব্যে রাষ্ট্রীয়ভাবে কবির প্রয়াণ দিবস পালন না করায় ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, বিগত স্বৈরাচারী সময়ে আল মাহমুদকে তুমুল অবজ্ঞা ও উপেক্ষা করা হয়েছে। অবিলম্বে পাঠ্যপুস্তকে আল মাহমুদের কবিতা পুনর্বহালের দাবি জানান তিনি।

উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন বাংলাসাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি আল মাহমুদ।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৫
এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।